শেষের পাতা

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ হতো প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড

স্টাফ রিপোর্টার

১৩ আগস্ট ২০১৮, সোমবার, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবিত থাকতে স্বপ্ন দেখতেন একদিন বাংলাদেশ প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হবে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আজ সত্যিই বাংলাদেশ হতো প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড। এসব কথা বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। গতকাল রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন । সেমিনারে ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজ কত দূর যেত?’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।

এসময় তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এদেশকে পিছিয়ে দিয়েছে সামরিক শাসন। কেউ যদি এদেশকে ধ্বংস করে দিয়ে থাকে সে হলো জিয়াউর রহমান। এখন বঙ্গবন্ধু নেই, তার উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এসময় বঙ্গবন্ধুর নানা স্মৃতিচারণ করেন তিনি।
সেমিনারে ২৮ পৃষ্ঠার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. আবুল বারকাত। এতে তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ছিল মাত্র ৫৫ বছরের। এর মধ্যে সুদীর্ঘ ৩৮ বছরের লড়াই-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে গড়ে উঠেছিল তার জীবন দর্শন ও বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি। যার ভিত্তিতে গড়ে উঠে রাজনৈতিক, স্বকীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক-প্রগতির উন্নয়ন দর্শন।

তিনি নানা তথ্য-উপাত্ত, পরিসংখ্যান, হিসাব-নিকাশ ও মালয়েশিয়ার অর্থনীতির সঙ্গে তুলনা করে দেখান যে, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ১৯৯৪ থেকে ৯৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মালয়েশিয়াকে অতিক্রম করে যেত। বর্তমানে ধনী শ্রেণির বাড়-বাড়ন্তের পরিবর্তে মধ্যশ্রেণির বিকাশ হতো বলে উল্লেখ করেন। প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক চিত্র কী হতে পারতো মালয়েশিয়ার সঙ্গে সেই তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়।
সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধ নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন, এক সময়কার বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সমাজতন্ত্র ছিল অন্যান্য সমাজতন্ত্রের চেয়ে ভিন্ন। তাতে তিন ধরনের সম্পদ বণ্টনের কথা বলা হয়। প্রথমত রাষ্ট্রীয়, দ্বিতীয়ত সমবায়ী ও তৃতীয়ত ব্যক্তি মালিকানাধীন। এই সমাজতান্ত্রিক দর্শন বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে বৈষম্য থাকতো না। তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এসময় গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের প্রসঙ্গ টেনে ফরাসউদ্দিন বলেন, তিনি আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত। কিন্তু দেশে কতটুকু তা জানি না। নির্বাচন করলে জামানত হারান। তিনি নাকি বড় নেতা। তাকে নিয়ে প্রায় সময় গুঞ্জন থাকে। ড. কামাল হোসেন এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে। রাষ্ট্রের মৌলনীতির বিপক্ষে। মৌলবাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী বলেন, অর্থনীতির চেয়ে বঙ্গবন্ধুহীন বাংলাদেশের সামাজিক ক্ষতিটা হয়েছে আরো অনেক বেশি। এখন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী ও রক্তের উত্তরাধিকারী শেখ হাসিনা অনেক উন্নয়ন করছেন। বঙ্গবন্ধু থাকলে তা বহুগুণ হতে পারত। তার কাছে সমতার দর্শন ছিল বড়।
সাবেক ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাধনা ছিল মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। একটি বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনই ছিল তার দর্শন। তার ধর্মনিরপেক্ষতা নামে ধর্মহীনতা ছিল না। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, বাংলার মাটি থেকে দুর্নীতি উৎখাত করা হবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশ পিছিয়ে গেছে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সহসভাপতি এজেডএম সালেহর সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন, সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন আহমেদ। দর্শক প্যানেল থেকে আলোচনায় অংশ নেন, কক্সবাজারের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খোরশেদ আরা হক, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সহসভাপতি হান্নানা বেগম, ঢাবির প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক রতন দুলাল চক্রবর্তী, গবেষক আব্দুর রাজ্জাক, আবু নাছের খান প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status