দেশ বিদেশ
পরকীয়ার ‘অপবাদ’ প্রাণ দিলো গৃহবধূ
বরগুনা প্রতিনিধি
১৩ আগস্ট ২০১৮, সোমবার, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
বরগুনার আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে শ্বশুরের সঙ্গে পরকীয়ার ‘অপবাদ’ দেয়ার অভিযোগে লাইজু আক্তার নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনার দিন রাতেই আমতলী থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার একটি মামলা করা হয়। মামলার আসামি লাইজুর শ্বশুর শানু হাওলাদার ও শাশুড়ি আকলিমা বেগম বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে। জানা যায়, আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের মধু আকনের কন্যা লাইজুর সঙ্গে একই গ্রামের শানু হাওলাদারের ছেলে মামুনের গত ডিসেম্বরে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মামুন তার বাবা-মায়ের কাছে লাইজুকে রেখে ঢাকায় কাঁচামালের ব্যবসা করেন। বিয়ের পর থেকেই লাইজুর ঠিকানা হয় শ্বশুরবাড়ি। তবে, সুখ খুব বেশি দিন থাকেনি। কারণ বিয়ের কিছু সময় পর থেকে তার সঙ্গে শ্বশুরের পরকীয়া আছে বলে অভিযোগ করেন শাশুড়ী। অন্যদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন পুত্রবধূ লাইজু। এসব ঘটনার একপর্যায়ে তার ঝুলন্ত লাশ মিলেছে। নিহত ওই গৃহবধূর পরিবার ও পুলিশের সন্দেহ শাশুড়ীর ‘অপবাদের’ কারণেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। মাস দুয়েক আগে শ্বশুর শানু হাওলাদারের সঙ্গে গৃহবধূ লাইজুর পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ করেন শ্বাশুড়ী আকলিমা বেগম। এ নিয়ে প্রায়ই শাশুড়ীর সঙ্গে ঝগড়া লেগে থাকতো লাইজুর। শুক্রবার দুপুরে আকলিমা একই বিষয় তুলে তাকে আবার গালিগালাজ করেন। এসব ঘটনার কথা লাইজু মোবাইলে তার স্বামী মামুনকে জানান। মামুন এ সময় মায়ের সঙ্গে একমত হয়ে লাইজুর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনেন। এর পরপরই ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। শনিবার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই লাইজুর মা গোলেনুর বেগম বাদী হয়ে মামুনকে প্রধান আসামি করে তিন জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেন। ওই রাতেই শ্বশুর শানু হাওলাদার ও শাশুড়ী আকলিমা বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন শনিবার পুলিশ গ্রেপ্তার দু’জনকে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। আমতলী থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন মিলন বলেন, এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা হয়েছে। মামলার আসামি শ্বশুর ও শাশুড়ীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।