খেলা

‘এখন আর ভয় পাই না’

স্পোর্টস রিপোর্টার

১২ আগস্ট ২০১৮, রবিবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

২০১২, অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে ক্রিকেটপ্রেমীদের চমকে দেন আবু হায়দার রনি। কাতারের বিপক্ষে মাত্র ১০ রানে ৯ উইকেট নেন বাংলাদেশি এ মিডিয়াম পেসার। তখন তাকে টাইগার ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ মনে করছিলেন বোদ্ধারা। এরপর কেটে গেছে অনেক বছর। এর মধ্যে ২০১৬ বিপিএলে দারুণ বোলিং করেন। সেবছর টি-টোয়েন্টি দলে তার অভিষেক হয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরই মধ্যে ২৩-এ পা রেখেছেন। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে দল ফিরে দারুণ সাফল্য নিয়ে। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। সেখানে দুই ম্যাচে আবু হায়দারের বোলিং ছিল দারুণ। মাত্র ১ উইকেট পেলেও রান খরচের দিক থেকে ছিলেন বেশ কৃপণ। নিজের ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম সিরিজ জয় দেখেছেন তিনি। এমন জয় যা তার আজীবন এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা হবে বলেই মনে করেন। তবে সবচয়ে বড় বিষয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছেন এ তরুণ পেসার। এখন আর তিনি ভয় পান না। তার সামনে ক্রিস গেইল আসুক আর এভিন লুইসদের মতো ব্যাটিং দানবরা। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য এ সিরিজটি অনেক স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অনেক কিছু শেখার ছিল। আমি গেল দুই বছরে মাত্র ১০ ম্যাচ খেললেও অনেক শিখেছি। বিশেষ করে আমি এখন আর কোনো দল বা কোনো ব্যাটসম্যানকেই ভয় পাই না। আগে যেমন একটু ভয় থাকতো, ছয় খাবো বা চার খাবো এসব নিয়ে। এখন মনে করি ছয় বা চার খেলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবো। ব্যাটম্যানকে আউট করতে পারবো। এ সময়ে এটাই আমার বড় অর্জন মনে করি।’
আবু হায়দার রনিকে নিয়ে বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশও দারুণ আশাবাদী। তার মতে রনির সামনে এখন অনেক লম্বা সময় পড়ে আছে। তাই এখন থেকে তার শেখার বিকল্প নেই। রনিকে বার বারই তিনি বলেছেন এখন তুমি যতটা পারো শেখো। যা তার জন্য হয়েছে বাড়তি অনুপ্রেরণা। ওয়ালশের মতো বোলিং কোচের কাছ থেকে কতটা শিখতে পেরেছেন তা নিয়ে রনি বলেন, ‘তার যোগ্যতা সবারই জানা। আমাকে তিনি সব সময়ই বলেন, তোমার সামনে অনেক সময় আছে। তাই ভয় পেয়ে লাভ নেই। এখান থেকেই তোমাকে শিখতে হবে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজেও একই কথা বলেছেন আমাকে। সেখানে কিভাবে বল করতে হবে তা দেখিয়েছেন। সবচেয়ে বড় কথা তিনি তার নিজের অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেন। সেগুলো আমার দারুণ কাজে আসে। তিনি (ওয়ালশ) আসলে মেন্টর।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলেছেন রনি। যুক্তরাষ্ট্রের লডারহিল স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে ৪ ওভার বল করে দিয়েছেন ২৬ রান। তবে কোনো উইকেট পাননি। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ৩ ওভার বল করে ২৭ রান খরচ করে নিয়েছেন এক উইকেট। এ দুই ম্যাচ জিতেই ইতিহাস রচনা করে বাংলাদেশ। ৬ বছর পর দুইবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজ জিতে নেয়। তাই দুটি ম্যাচেই রনির জন্য দারুণ অভিজ্ঞতার। তিনি বলেন, ‘আসলে ভয় না পাওয়াটা একটি বিষয় তো থাকে। সেই সঙ্গে মাঠে বল করার একটি কৌশল থাকে। কোচ বলেছে যে তুমি ইয়র্কার ভালো করো ঠিক আছে কিন্তু সেটি সব বলে দিতে যেও না। কারণ সব বল ইয়র্কার হবে না। তখন হাফবলি বা শর্ট বলে ছয় মেরে দিবে ব্যাটসম্যান বিশেষ করে ক্যারিবীয়রা ছয়-চার মার পটু। তাই আমি একই ধরনের বল করিনি। এমনকি সাকিব ভাই এসে সাহস দিয়ে ছয় খাবার পর যে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তোর মতো করে চালিয়ে যা। এসবই আমার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা। দুটি ম্যাচ আমার কাছে সেরা। বিশেষ করে আমার ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম সিরিজ জয় দেখলাম। যা আমাকে অনেক দূর নিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেবে।’
অন্যদিকে এখন পর্যন্ত শুধু টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হলেও তার স্বপ্ন টেস্ট খেলার। তার আগে ওয়ানডে খেলে নিজের হাত পাকিয়ে নিতে চান। রনি বলেন, ‘সব ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে দেশের হয়ে টেস্ট খেলা তা আমারও আছে। তবে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে চাই। যদি ওয়ানডে দলে সুযোগ থাকে সেখানেও নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। আমি আমার বোলিং নিয়ে কাজ করছি। আর বেশি মন দেবো ঘরের ক্রিকেটেও। বিশেষ করে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ ও প্রথম শ্রেণির ম্যাচগুলো বেশি খেলতে চাই। একটা সময় ছিল অন্যান্য পেসারদের জন্য সুযোগ হতো না। এখন আগের তুলনাতে সুযোগ পাচ্ছি বেশি। আশা করি ভালো কিছু করতে পারবো।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status