বিশ্বজমিন

পাকিস্তানের নির্বাচনে ধর্মীয় দল

মানবজমিন ডেস্ক

২২ জুলাই ২০১৮, রবিবার, ১২:৩৪ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীর অন্যতম পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতা হাফিজ সাঈদ। ২০০৮সালে মুম্বই হামলায় ১৬৬ জন মানুষ নিহ৮ত হন। এতেও তার জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। পাকিস্তানে তার দাতব্য সংস্থা নিষিদ্ধ। তবে তার অনুসারীরা সেখানে চালু করেছে একটি নতুন ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল। ফলে হাফিজ সাঈদ নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠ কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি বিদায়ী নওয়াজ শরীফের সরকারকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে গালমন্দ করছেন। তিনি ২ শতাধিক প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। বুধবারে পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে শুধু হাফিজ সাঈদ একই নন, ইসলামপন্থি বেশ কিছু উগ্র দল নির্বাচন করছে। এর মধ্যে রয়েছে মিলি মুসলিম লিগ (এমএমএল)। এর নেতৃত্বে রয়েছেন সাইফুল্লাহ খালিদ। আছে তেহরিকে লাবাইকে পাকিস্তান (টিএলপি)। এর নেতৃত্বে রয়েছেন খাদিম হোসেন রিজভি। আরো যেসব ইসলামপন্থি দল নির্বাচন করছে তার মধ্যে আছে মাওলানা মোহাম্মদ আহমাদ লুধিয়ানভির নেতৃত্বাধীন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত (এএসডব্লিউজে), মাওলানা ফজলুর রেহমান, সিরাজুল হক ও আল্লামা সাজিদ নাকভি নেতৃত্বাধীন মুত্তাহিদা মজলিসে আমল (এমএমএ)। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এসব দল থেকে সব মিলে মাঠে রয়েছেন ১৫০০ প্রার্থী। জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন দু’জনের নামও আছে প্রার্থী হিসেবে ব্যালট পেপারে।  একটি নতুন রাজনৈতিক দলের স্লোগান হলো ‘ডেথ টু ব্লাসফেমারস’। এ মাসে লাহোরের এক সমাবেশে হাফিজ সাঈদ ঘোষণা দিয়েছেন, আমেরিকার চাকরদের রাজনীতির দিন শেষ হয়ে এসেছে। এ সময় সমর্থকরা তাকে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন। বুধবারের নির্বাচনকে দেখা হচ্ছে জেলবন্দি নওয়াজ শরীফ ও সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের মধ্যে। তবে ইমরান খান রয়েছেন সেনাবাহিনীর নেকনজরে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে নতুন আকার দেয়ার জন্য নির্বাচনের মাঠ থেকে ফসল ঘরে তোলার দৌড়ে নেমে পড়েছে এসব ইসলামপন্থি দল। তারা চায় পাকিস্তানে কঠোর শরিয়া আইন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এসব ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোকে মূলধারার রাজনীতিতে নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছিল। তারা দৃশ্যত সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে। তারা ইসলামি দল ও উগ্রবাদীদের রাজনীতিতে নিয়ে এসেছে। যদিও এসব দল এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো যোগসূত্র থাকার কথা অস্বীকার করেছে উভয় পক্ষ। যদি এসব দল অল্প কিছু আসনও পায় তাহলে তারা রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারবে। নতুন দলগুলো বিরোধীদের ধর্মবিদ্বেষী বা বিশ্বাসঘাক বলে আখ্যায়িত করে মাঝে মাঝেই। তবে মূলধারায় নেমে আসা এসব দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ দলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে একই সুরে আক্রমণ করেন। নির্বাচনে জাতীয় ও প্রাদেশিক পর্যায়ে এসব দলের রয়েছে ১৫ শতাধিক প্রার্থী। ২০১৩ সালে তাদের সংখ্যা ছিল দু’এক শতের মতো। তবে নতুন এসব দলের অনেকেরই জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে। তারা মূলধারার রাজনীতিকদের এবং দেশপ্রেমিকদের আক্রমণ করে কথা বলেন। পাকিস্তানের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলেরই আনুগত্য আছে ইসলামের প্রতি। কিন্তু নতুন ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলো তাদেরকে পশ্চিমা আদর্শের পথে ধাবিত পাকিস্তানকে ইসলামিক মূল্যবোধের দিকে ফেরানোর কথা বলছে। এমন একটি নতুন দল হলো তেহরিকে লাবাইক পাকিস্তান। তাদের স্লোগান ‘ডেথ টু ব্লাসফেমারস’। তাদের রয়েছে ৫৬৬ জন প্রার্থী। এসব প্রার্থী র‌্যালি করেন পিএমএলএনের বিরুদ্ধে। তাদেরকে তারা ব্লাসফেমারস হিসেবে দেখে থাকে। তেহরিকে লাবাইক আইনগতভাবে একটি নিবন্ধিত দল। তারা বিভিন্ন আইনী বাধাকে উপেক্ষা করে সামনে এসেছে। এ বছর হাফিজ সাঈদের দাতব্য সংস্থা একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করে নির্বাচন কমিশন। এ দলটির নাম রাখা হয় মিলি মুসলিম লিগ। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু এই গ্রুপটি পরে বিদ্যমান একটি দল আল্লাহু আকবার তেহরিকের অধীনে নিজেদেরকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। এখন তাদের নির্বাচনী পোস্টারে সেই হাফিজ সাঈদের ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status