এক্সক্লুসিভ

অবরোধ সত্ত্বেও পুরোদমে চলছে কাতারে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি

মানবজমিন ডেস্ক

২২ জুলাই ২০১৮, রবিবার, ৮:১৩ পূর্বাহ্ন

কাতারের অর্থমন্ত্রী আলি শরীফ আল-ইমাদি গত বছর বলেছিলেন, ভক্ত-সমর্থকদের আগমন শুরু হওয়ার আগেই ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপের সবকিছু প্রস্তুত রাখতে তার দেশ বদ্ধপরিকর। তিনি জানান, ফুটবল দুনিয়ার সর্ববৃহৎ এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তুতিতে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে খরচ করছে কাতার। ফলে কোনো ভক্ত গিয়ে শেষ মিনিটের তাড়াহুড়ো দেখতে পাবেন, এমন সম্ভাবনা খুবই কম। ২০২২ বিশ্বকাপ শুরুর এখনো প্রায় সাড়ে চার বছর বাকি। সেই হিসাবে ভেন্যু ও বৃহৎ প্রকল্প নির্মাণ ও প্রস্তুতিতে শিডিউলের চেয়েও এগিয়ে আছে দেশটি।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, বিশ্বকাপের জন্য যেই ৮টি স্টেডিয়াম নির্মাণ কিংবা সংস্কার করার কথা দেশটির, তার মধ্যে একটির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ। আগামী বছর অনুষ্ঠেয় বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের খেলাও হবে নবনির্মিত এই স্টেডিয়ামে। দুটি স্টেডিয়ামের কাজ এই বছরের শেষের দিকে সমাপ্ত হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হবে ২০১৯ সালের শুরুর দিকে।

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল খেলা যেই লুসাইল স্টেডিয়ামে হবে, সেটির কাজও এগিয়েছে অনেক দূর। ২০২২ সালের বিশ্বকাপ কার্যত কাতারের রাজধানী দোহা জুড়েই অনুষ্ঠিত হবে। এক স্টেডিয়াম থেকে আরেক স্টেডিয়ামের সর্বোচ্চ দূরত্ব হলো মাত্র ৫৫ কিলোমিটার। আর উপসাগরীয় রাজনৈতিক সংকট সত্ত্বেও এগুলো নির্মাণের কাজ চলছে তীব্র বেগে।

শক্তিধর প্রতিবেশী সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি আরব দেশ কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছে। এরপর ১৩ মাস পেরিয়ে গেলেও, বিশ্বকাপ আয়োজক দেশ জবাব দিচ্ছে শক্তভাবেই। ২০১৭ সালের ৫ই জুন কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে ওই দেশগুলোর জোট। অবরোধের ফলে সৌদি ও আরব আমিরাত থেকে নির্মাণ সামগ্রীর জোগান বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু খুবই ক্ষিপ্রতার সঙ্গে মালয়েশিয়া ও চীন থেকে নির্মাণ সামগ্রী আমদানি শুরু করে কাতার। ইতিমধ্যে নির্মিত হয়ে গেছে নতুন সড়ক, হোটেল, জাদুঘর, পাড়া, এমনকি নতুন শহরও! এর মধ্যে রয়েছে ৪৫০০ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিতব্য লুসাইল শহর। ৩৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দোহার প্রথম মেট্রো রেল সিস্টেম ২০১৯ সালে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। কাতার প্রত্যাশা করছে, ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ ভক্ত দেশটি সফরে যাবে। তাদের রাখা হবে হোটেল, বাড়ি, তাঁবু ও ১২০০০ ক্রুজ জাহাজে!

দোহার বিরুদ্ধে একটা বড় অভিযোগ ছিল যে, শেষ পর্যন্ত আয়োজকরা পর্যাপ্ত হোটেলের ব্যবস্থা করতে পারবে না। ফিফার নিয়মানুযায়ী ৬০ হাজার হোটেল কক্ষ তৈরি রাখতে হয় আয়োজক দেশকে। কিন্তু সংশয় ছিল আদৌ কাতার তা করতে পারবে কিনা। দেখা যাচ্ছে, শুধু হোটেল নয়, অন্যান্য বিকল্পের মাধ্যমে হলেও বিপুল পরিমাণ ভক্তের জন্য মানসম্মত থাকার জায়গা তৈরি করতে প্রস্তুত দেশটি।

রক্ষণশীল মুসলিম দেশ হলেও কাতারে মদ্যপান করা যায়, যদিও বেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে। বিশ্বকাপ ফ্যানদের মধ্যে অনেক বিদেশি থাকবেন, যাদের মদ্যপানের সুবিধা দিতে তৈরি হয়েছে বিশেষ জোন। তবে অংশগ্রহণকারী দলগুলো কোথায় থাকবে, বা আদৌ তারা কাতারে থাকবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ইরান প্রস্তাব দিয়েছে তাদের নিকটবর্তী কিশ দ্বীপে কিছু দলের থাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব। তবে আগামী বিশ্বকাপ ৩২ দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি ৪৮ দলের হবে, সেই ব্যাপারে ফিফার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।
নিরাপত্তার জন্য কাতার বিদেশি পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেবে। যারা এ ধরনের পরিস্থিতি সামলিয়ে অভ্যস্ত। সংগঠকরা বলছেন, তাদের লক্ষ্য হলো সবচেয়ে নিরাপদ বিশ্বকাপ আয়োজন করা। টুর্নামেন্ট চলাকালে আকাশে নিরাপত্তা ও টহলের দায়িত্বে থাকবে বৃটিশ টাইফুন যুদ্ধবিমান। যেগুলো কাতার গত বছর ৮০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করেছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status