অনলাইন

অচল অবস্থায় তালতলীর প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা

মোঃ খাইরুল ইসলাম আকাশ, তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

২১ জুলাই ২০১৮, শনিবার, ৫:০৯ পূর্বাহ্ন

শিক্ষাই জাতির মেরুদ- কথাটি স্বতসিদ্ধ একটি বাণী।  কিন্তু এ কথার সাথে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না বরগুনার তালতলী উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেখলে।
নানামূখী সমস্যায় ভুগছে এ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। শিক্ষক সংকট, শিক্ষকদের দায়িত্ব অবহেলা, শিক্ষা কর্মকর্তারা নিয়মিত স্কুল পরিদর্শন না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাবস্থাকে ঘিরে। এদিকে শিক্ষার এমন বেহাল অবস্থা দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েছে অভিভাবকরাও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিবাবক জানান, নোট বা গাইড ছাড়া অচল তালতলীর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো, এমনকি শিক্ষকরাই বিক্রি করছেন এসব নোট গাইডসহ বাধ্যতামূলক টেস্ট পেপার।
সরেজমিনে তাঁতিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, তারা ক্লাসরুমের  কোন সরঞ্জাম ছাড়াই ২ বছর ধরে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অথচ ২ বছরে এসবের জন্য বরাদ্দ ছিলো ৮০ হাজার টাকা।
ডিপিই থেকে জারি করা পরিপত্র ও নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত সমাবেশ, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া, শিক্ষার্থীদের শপথ পাঠ করানো, জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শনে উদ্বুদ্ধ করা, নির্ধারিত পাঠের বাইরে ক্রীড়া ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন, জাতীয় দিবস উদযাপন,বইপড়া প্রতিযোগিতা, মা দিবস আয়োজনসহ নানা কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও তা মানছে না তালতলীর বেশিরভাগ বিদ্যালয়।

ফলে এ উপজেলার শিশুদের মানবিক বিকাশ ব্যহত হচ্ছে এবং দেশের ইতিহাস স¤পর্কে কোন ধারণা পাচ্ছে না। এসব অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন তুললে শিক্ষকরা বলছেন, এ সকল সমস্যার জন্য এক মাত্র কারণ হচ্ছে শিক্ষক সংকট। এ উপজেলার বেশ কয়েকটি স্কুলে দেখা গেছে একজন বা দুইজন শিক্ষক দিয়ে স্কুল চালানো হচ্ছে। প্রতিদিন প্রাক-প্রাথমিকসহ ৬টি শ্রেণীতে ২৩টি ক্লাশ রয়েছে। যা এক বা দুই জন শিক্ষক দিয়ে চালানো সম্ভব নয়।
তালতলী উপজেলা প্রাথমিক অফিস সূত্রে ও সরেজমিনে দেখা গেছে, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের মৌরভী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি শিক্ষক শুন্য থাকায়, তাৎক্ষনিক মোয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাওলানা জালাল আহম্মেদকে এই বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে বদলী করা হলেও জানুয়ারি মাসে তিনি পিটিআইতে প্রশিক্ষণে যান।

এরপরই বিদ্যালয়টি আবারো শিক্ষক শূন্য হয়ে পড়ে। অথচ ওই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭১ জন।
আবার কলারং সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক রয়েছে দুই জন, তার মধ্যে এক জন রয়েছে পিটিআইতে ট্রেনিংয়ে।
বাদুরগাছা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছে এক জন, শিক্ষার্তি সংখ্যা ১২৬ জন। হুলাটানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক এক জন। উত্তর গাব্বাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক দুই জন।
তালতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, এ সকল সমস্যার মুল কারণ হচ্ছে শিক্ষক সঙ্কট। আর এ সমস্য থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে তালতলীর জন্য বিশেষভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status