বাংলারজমিন
মতিউরের প্রতিবন্ধিতা জয়
জালাল উদ্দিন আহমেদ, পটুয়াখালী থেকে
২১ জুলাই ২০১৮, শনিবার, ৯:১১ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালী জেলার দুুমকি উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের লেবুখালী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. ইউনুস হাওলাদার ও গৃহিণী ফাতিমা বেগমের চার সন্তানের মধ্যে তৃতীয় সন্তান এইচএম মতিউর রহমান। আড়াই বছর বয়সে তিনি পোলিও আক্রান্ত হয়ে স্থায়ীভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধিতার (বাম হাত সম্পূর্ণভাবে অচল) শিকার হন। শারীরিক প্রতিবন্ধিতার শিকার হয়েও দমে যাননি তিনি। প্রতিবন্ধিতাকে উপেক্ষা করে বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। যথারীতি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ শেষ করে বরিশাল ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ১৯৯৫ সালে বিকম (সম্মান) এবং ১৯৯৬ সালে হিসাব বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি প্রতিবন্ধিতার কারণে শিক্ষা জীবনে সহপাঠী থেকে শুরু করে সমাজের অনেকের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে উপহাসমূলক বিভিন্ন শব্দ শুনতে হতো, যা ছিল খুবই কষ্টদায়ক। এমনকি চাকরি সন্ধানের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সবকিছুকেই উপেক্ষা করে সরকারি চাকরি পাওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি তিনি ২০০০ সালে জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম-এ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এবং ২০০১ সাল থেকে সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজ অ্যাবিলিটি (সিএসআইডি) তে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে মাঠপর্যায়ে দীর্ঘদিন কাজ করেন। এরপর তিনি ২০০৬ সালে পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে অদ্যবধি কর্মরত আছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিএড সম্পন্ন করেন। তিনি দক্ষতার সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্ন প্রণেতা ও প্রশ্ন পরিশোধক এবং ২০১২ সাল থেকে প্রধান পরীক্ষক হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক শিক্ষক শিক্ষাক্রম নির্দেশিকা (টিসিজি) এর ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বইয়ের রচয়িতা হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কল্যাণে হিসাব বিজ্ঞান, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং এবং ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয়ে জাতীয় একটি দৈনিকে টিউটোরিয়াল বিভাগে নিরলসভাবে লিখে যাচ্ছেন। নিঃসন্দেহে তার উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।
প্রতিবন্ধী শিক্ষক এইচএম মতিউর রহমান সিপিডি, সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, একীভূত শিক্ষা, শিক্ষাক্রম বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তার পেশাগত জীবনে সর্বোতভাবে প্রয়োগ করার চেষ্টা করছেন। প্রতিবন্ধিতাকে উপেক্ষা করে তিনি পেশাগত উৎকর্ষতায় এবং স্বমহিমায় উজ্জ্বল ও অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার কাজের স্বীকৃতি স্বরুরূ জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৮ এর মূল্যায়ন কমিটি তাকে মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক মনোনীত করেন এবং ২৫শে জুন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করেন। তাকে সম্মাননা প্রদানের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং বলেন ‘এ সম্মাননা আমার দায়িত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে’।
প্রতিবন্ধী শিক্ষক এইচএম মতিউর রহমান সিপিডি, সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, একীভূত শিক্ষা, শিক্ষাক্রম বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তার পেশাগত জীবনে সর্বোতভাবে প্রয়োগ করার চেষ্টা করছেন। প্রতিবন্ধিতাকে উপেক্ষা করে তিনি পেশাগত উৎকর্ষতায় এবং স্বমহিমায় উজ্জ্বল ও অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার কাজের স্বীকৃতি স্বরুরূ জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৮ এর মূল্যায়ন কমিটি তাকে মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক মনোনীত করেন এবং ২৫শে জুন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করেন। তাকে সম্মাননা প্রদানের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং বলেন ‘এ সম্মাননা আমার দায়িত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে’।