দেশ বিদেশ
গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য
পিটিয়ে পুলিশ পরিদর্শক মামুনকে হত্যা করা হয়
স্টাফ রিপোর্টার
২০ জুলাই ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৩১ পূর্বাহ্ন
টাকা হাতানোর জন্য জন্মদিনের পার্টিতে অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে জিম্মি করে পিটিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন এমরান খানকে হত্যা করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে এই ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত বুধবার দিবাগত রাতে ডিবি পূর্ব বিভাগের সদস্যরা বাড্ডা ও হাজারীবাগে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মিজান শেখ, মেহেরুন্নেছা স্বর্ণা ওরফে আফরিন ওরফে আন্নাফি, সুরাইয়া আক্তার ওরফে কেয়া ও ফারিয়া বিনতে মীম। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল বাতেন। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, রহমত ?উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি পরিদর্শক মামুনের বন্ধু ছিল। রহমত পেশায় প্রকৌশলী। তাদের অন্তত পাঁচ বছরের বন্ধুত্ব। দুজনে বিভিন্ন নাটক ও সিরিয়ালে অভিনয় করতেন। আটককৃত আফরিনের সঙ্গে রহমত আগে অভিনয় করেছেন। আফরিন মোবাইল করে রহমতকে তার বান্ধবীর জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রণ জানান। রহমত একা না গিয়ে তার বন্ধু ও এসবি পরিদর্শক মামুনকে সঙ্গে নেন। তারা পার্টিতে গেলে তাদের বনানীর বাসার দ্বিতীয় তলায় নেয়া হয়। সেখানে একপর্যায়ে স্বপন, দিদার, আতিক ও মিজান নামে চার ব্যক্তি ওই বাসায় ঢুকে পড়ে। মামুন ও রহমতের প্রতি অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে। মামুন ও রহমতকে আটকে রেখে মারধর শুরু করে। মামুন নিজেকে পুলিশ সদস্য দাবি করলে তাকে আরো বেশি পেটানো হয়। একপর্যায়ে মামুন মারা যান। মামুন মারা গেলে তারা হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। রহমতের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেয়া হয়। তারা মামুনের লাশ গুমের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে গত ১০ই জুলাই গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন উলুখোলা এলাকায় রাস্তার পাশে একটি জঙ্গলে মামুনের বস্তাবন্দি লাশ ফেলে দেয়। লাশের পরিচয় গোপন করতে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়ে বিকৃত করা হয় চেহারা। পরে ডিবির কাছে গ্রেপ্তারের পর এসব কথা স্বীকার করেন রহমত। রহমতের দেখানো মতে গাজীপুরের উলুখোলা থেকে মামুনের বিকৃত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অবশ্য এর আগে রহমত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। আর রহমতের দেয়া তথ্যে গত বুধবার দিবাগত রাতে বাড্ডা ও হাজারীবাগে অভিযান পরিচালনা করে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মেহেরুন্নেছা স্বর্ণাও প্রায় অভিন্ন তথ্য দেন। তিনি বলেন, রহমত উল্লাহ ভিকটিম মামুনকে বনানীর মডেল টাউনস্থ রোড ২/৩ এর ৫ নং বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানেই আসামিরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে জানান। গত ৮ই জুলাই সবুজবাগ থানায় মামুনের নিখোঁজের একটি জিডি করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা জিডির ছায়াতদন্ত হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত ১০ই জুলাই মামুনের বন্ধু রহমত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে মামুন এমরান হত্যার বর্ণনাসহ জড়িত সবার নাম প্রকাশ করে। গত ১০ই জুলাই গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন উলুখোলা এলাকায় রাস্তার পাশে একটি জঙ্গল থেকে মামুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে এই ঘটনায় বনানী থানায় হত্যা মামলা করা হয়।