এক্সক্লুসিভ

সিলেটে একযুগে সর্বনিম্ন ফলাফল

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

২০ জুলাই ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৩৪ পূর্বাহ্ন

এইচএসসিতে একযুগের সর্বনিম্ন ফলাফল নিয়ে সিলেটে ক্ষোভ বিরাজ করছে। হতাশ হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এমন ফলাফল মেনে নিতে পারেননি সিলেটের নামিদামি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও। এ কারণে গতকাল ফলাফল ঘোষণার পর মদনমোহন কলেজে বিক্ষোভ হয়েছে। সিলেট শিক্ষাবোর্ডের ফলাফলকে  মেধার ধস হিসেবে মনে করছেন কেউ কেউ। তবে সিলেট শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ ফলাফলে সন্তুষ্ট। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কবির আহমদ দাবি করেছেন পাসের হার কমলেও মেধার বিকাশ ঘটেছে। এবার সিলেট শিক্ষাবোর্ডে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে। প্রকাশিত এইচএসসি ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে দেশের ৮টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে সিলেট শিক্ষাবোর্ড এবার সবার পেছনে। সিলেট শিক্ষাবোর্ডে এবছর পাসের হার মাত্র ৬২ দশমিক ১১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৭৩ জন শিক্ষার্থী। গেল বার পাসের হার ছিল ৭২ দশমিক ০৩ শতাংশ। তবে মোট পরীক্ষার্থী ও পাসের হারের ক্ষেত্রে ছেলেদের চেয়ে সিলেটের মেয়েরা এগিয়ে আছে। সিলেট শিক্ষাবোর্ড থেকে এবার মোট ৭১ হাজার ৪২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এরমধ্যে পাস করেছে ৪৪ হাজার ১২৭ জন। শতভাগ পাস করেছে ১০টি কলেজ। এছাড়া এবছর দুটি কলেজে কোনো শিক্ষার্থী কেউ পাস করতে পারেনি। এ দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের উত্তর সুরমা আছমত উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ,  মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার নুরুন্নেছা খাতুন চৌধুরী কলেজ। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৩২ হাজার ৮৮৫ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৯ হাজার ১৮৬ জন। পাসের হার ৫৮.৯২। ছাত্রী ছিল ৩৮ হাজার ৭৯০ জন। পাস করেছে ২৪ হাজার ৯৪১ জন। পাসের হার ৬৪.৮১। দুপুর সাড়ে ১২টায় সিলেট শিক্ষাবোর্ডে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কবির আহমদ বলেন, এবার পাসের হার কমলেও মেধাবীদের সংখ্যা বেড়েছে। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৭০০ জন। এবার আরো বেড়েছে। তিনি বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ানোই এখন শিক্ষাবোর্ডের টার্গেট। ফল খারাপ করার কারণ ব্যাখ্যা করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, এবার ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বেশি অকৃতকার্য হয়েছে। একারণে সামগ্রিক ফলাফলে এর প্রভাব পড়েছে। বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, ২০০৬ সালে পাসের হার ৬৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ।  ২০০৭ সালে পাসের হার ৬৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ২০০৮ সালে পাসের হার ৭১ দশমিক ১৭ শতাংশ। ২০০৯ সালে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। ২০১০ সালে পাসের হার ৭৬ দশমিক ১২ শতাংশ। ২০১১ সালে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ২০১২ সালে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ২০১৩ সালে পাসের হার ৭৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। ২০১৪ সালে পাসের হার ৭৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২০১৫ সালে পাসের হার ৭৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ২০১৬ সালে পাসের হার ৬৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং ২০১৭ সালে পাসের হার ৭২ দশমিক ০৩ শতাংশ। এবছর সিলেটে ৭১ হাজার ৪২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এদের মধ্যে পাস করেছে ৪১ হাজার ১২৭ জন। এর মধ্যে ছেলে ১৯ হাজার ১৮৬ জন ও মেয়ে শিক্ষার্থী ২৪ হাজার ৯৪১ জন। বোর্ডের অধীনে ২৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ পাসকৃত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০।
ফলাফল বিপর্যয়ে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ: এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ৫০৯ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ’র অপসারণ দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ ছাত্রলীগের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে নগরীর রিকাবীবাজার লামাবাজার ঘুরে অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, কলেজের পাঠদানের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। কর্তব্যরত শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস না নিয়ে যে যার মতো কোচিং বাণিজ্য সহ বিভিন্ন বাণিজ্যে ব্যস্ত থাকেন। এসব বিষয়ে বারবার অধ্যক্ষকে জানানো হলেও তিনি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার শিক্ষাবান্ধব হওয়ার পরেও কলেজের এই ফলাফল বিপর্যয় সাধারণ ছাত্রছাত্রী তথা সিলেটবাসী কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি একেএম মাহমুদুল হাসান সানির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মিফতাহুল হুসেন লিমনের পরিচালনায় সমাবেশে কলেজ ছাত্রলীগ ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীবৃন্দ
উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status