প্রথম পাতা

ক্যাম্পাসে মানববন্ধন

ত্রাসের রাজত্ব ভেঙে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

১৯ জুলাই ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের অব্যাহত হামলা ও শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে গতকালও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা আগামীতে এ ধরনের হামলা হলে প্রতিহতের ঘোষণা দেয়। সমালোচনা করেন ভিসি ও প্রক্টরের। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ভিসি ও প্রক্টর  দায়িত্বশীল আচরণ করছেন না বলে আজ ক্যাম্পাসে শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক মানববন্ধনে এসব অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিক দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেছে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে শিক্ষকদের ওপরও তারা হামলা করছে। হামলার বিচার চাইতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিশ্চুপ। তারা কোনো জবাব দিচ্ছে না। আমরা আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহতভাবে পালন করবো। এবার যদি ছাত্রলীগ হামলা চালায় তবে তাদের শক্তভাবে প্রতিহত করা হবে। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড বহন করেন।

এতে লেখা- ‘আগে নিরাপত্তা পরে ক্লাস’, ‘শিক্ষা ও হাতুড়ি এক সঙ্গে চলতে পারে না’, ‘শিক্ষকদের ওপর হামলা কেন প্রশাসন জবাব চাই’, ‘প্রক্টর, ভিসি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চাই’, ‘উদ্বেগ উৎকণ্ঠা আর কত দিন’, ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে ?রুখে দাঁড়াও ছাত্রসমাজ’ ইত্যাদি। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি, কোটা সংস্কার আন্দোলন করতে গিয়ে আটককৃতদের কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার কারণ প্রকাশ করা ও তাদের মুক্তি এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এদিকে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. রুশাদ ফরিদি বলেন, গত সমাবেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন। এর আগে ছাত্ররা ক্যাম্পাসে নিরাপদে বিভিন্ন আন্দোলন করতো।

তিনি বলেন, আজকের এই মানববন্ধন প্রমাণ করে শিক্ষার্থীরা ত্রাসের রাজত্ব ভেঙে প্রতিবাদ করতে শিখেছে। ঢাবির এ শিক্ষক বলেন, ছাত্রলীগের কথাবার্তা পোলাপানের মতো। তাদের বিভিন্নভাবে ব্রেন ওয়াশ করা হয়। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের গণরুমে যে টর্চার করা হয় এর মধ্য দিয়ে তারা ভবিষ্যতে ছাত্রলীগের বড় ক্যাডারে পরিণত হয়। এদের আশ্রয় দিচ্ছে কারা তাদের খুঁজে বের করতে হবে। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ সরকারের উপর মহলের কথায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করছে। এর বিচার চাইতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, ‘শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতে অনুমতি নেইনি কেন?’ আমরা কার কাছে বিচার দাবি জানাবো? এর বিচার করার কেউ নেই। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানাবো। তাই আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

ইতিহাস বিভাগের মানববন্ধন: এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গিয়ে ছাত্রলীগের হাতে মারধরের শিকার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী তানজির হোসেনকে মারধরের সঙ্গে জড়িতদের বিচার, শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ, কোটা আন্দোলনের নেতাদের মুক্তি ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি করেছে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত আরেকটি মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চাই, বাক স্বাধীনতা চাই, শিক্ষকদের ওপর হামলা কেন? প্রশাসন চুপ কেন? ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে বিভাগের শিক্ষক এমএ কাউসার বলেন, কোটা সংস্কার একটি যৌক্তিক আন্দোলন। পর্যায়ক্রমে কোটা কমিয়ে আনা প্রতিটি সরকারের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু তারা তা না করে শিক্ষার্থীদের ওপর দমন নিপীড়ন চালাচ্ছে। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status