এক্সক্লুসিভ

টেলিটককে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রস্তাব দক্ষিণ কোরিয়ার

কাজী সোহাগ

১৯ জুলাই ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:১৫ পূর্বাহ্ন

রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটককে এক দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশি টাকায় যা ১০ হাজার কোটি টাকা। ফোর-জি নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য বাণিজ্যিক ঋণের প্রস্তাব করেছে দেশটি। রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো অপারেটরকে ঋণের প্রস্তাব দেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণ প্রস্তাবে কারিগরি ও আর্থিক বিষয়টি বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঋণের কারিগরি প্রস্তাবে রয়েছে, সারা দেশে ফোর-জি সেবা দেয়া। দেশের ৯৮ ভাগ ফোর-জি নেটওয়ার্ক কাভারেজের মধ্যে আনা। এজন্য স্থাপন করা হবে ১১ হাজার ২৭৫টি ফোর-জি ই-নোড বি। প্রস্তাবে আরো রয়েছে, ২ কোটি ৪০ লাখ গ্রাহক ক্ষমতার ফোর-জি ইপিসি (ইভলবড প্যাকেট কোর) স্থাপন। ভলটি সেবা দেয়ার জন্য ২ কোটি গ্রাহক ক্ষমতার আইপি মাল্টিমিডিয়া সাবসিস্টেম (আইএমএস) স্থাপন। এছাড়া এইচডি ভিডিও প্ল্যাটফরম বিলিং ট্রান্সমিশন এবং আইপি মাল্টি প্রটোকল লেবেল সুইসিং (আইপিএমপিএলএস) স্থাপন। ঋণের আর্থিক প্রস্তাবে জানানো হয়েছে, সর্বমোট ঋণ দেয়া হবে এক দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৩ ভাগ। এ জন্য সোভেরিন গ্যারান্টির প্রয়োজন নেই। ৫ বছর মেয়াদি ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রথম পর্যায়ে ৩ বছর, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২ বছর। ঋণের গ্রেস পিরিয়ড ধরা হয়েছে ২ থেকে ৫ বছর। আর পে-ব্যাক পিরিয়ড ধরা হয়েছে ১৫ থেকে ২০ বছর। সম্প্রতি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে দেয়া এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপ-সচিব ও বিশেষ কাউন্সিল অফিসার আমিনুল হক স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে টেলিটকের স্ট্যাটেজিক পার্টনারশিপের জন্য একটি প্রস্তাবনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রিয়াদে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের জন্য এরই মধ্যে ৫ হাজার ৫৫৪ দশমিক ২৪ কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণে সৌর বিদ্যুৎ চালিত বিটিএস স্থাপনের মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চলে টেলিটকের নেটওয়ার্কের শক্তিশালীকরণ নামে একটি প্রস্তাবিত  প্রকল্প রয়েছে। এর অর্থের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪২৫ দশমিক ৫২ কোটি টাকা। ওই প্রকল্পের অধীনে সৌর বিদ্যুৎচালিত ৪০০টি টু-জি বিটিএস, ১২শ টি থ্রি-জি নোড বি কোর ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হবে। অপর প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে টেলিটকের নিজস্ব অর্থায়নে গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের টু-জি, থ্রি-জি ও ফোর-জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন। ৯৮৭ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে এক হাজার ৮০টি টু-জি বিটিএস স্থাপন, এক হাজার ১১৪টি পুরাতন বিটিএস আধুনিকায়ন, ১৫শ’টি থ্রি-জি নোড-বি, ১১শ’ সাইটে ফোর-জি ই নোড-বি স্থাপন কোর ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। থ্রি-জি প্রযুক্তি চালু ও টু পয়েন্ট ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক (২য় পর্যায়) নামের ৬৭৫ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। জি ও বি ঋণ অর্থায়ন প্রকল্পের ৫শ’ টি টু-জি বিটিএস ১২শ’ টি থ্রি-জি নোড-বি কোর ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে টেলিটকের জন্য তিন হাজার ২৮২ দশমিক ১৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাবিত আকারে রয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে ইউনিয়ন পর্যায়ে টেলিটকের থ্রি-জি/ ফোর-জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ। প্রকল্পের আওতায় নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চার হাজার থ্রি-জি, ফোর-জি বিটিএস ও ১০ হাজার এজ-সাপোর্টেড বিটিএসসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় টেলিটক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে বর্তমান নেটওয়ার্কের সঙ্গে এগুলো সংযোজন করা হবে। এছাড়া হাওর ও দ্বীপাঞ্চলে উচ্চ গতির মোবাইল ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপনের নামে অপর একটি প্রকল্প (এসওএফ অর্থায়ন) রয়েছে ১৮৭ দশমিক ৫৭ কোটি টাকার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১৯শে ফেব্রুয়ারি ১০ কোটি টাকা দিয়ে ফোর-জি লাইসেন্স গ্রহণ করে টেলিটক। প্রায় ২শ’ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে টেলিটক বিভাগীয় শহরে ফোর-জি সেবা চালু করবে। প্রথম পর্যায়ে ১১শ’ টি ফোর-জি ই-নোড-বি স্থাপন করা হবে। ফোর-জি চালু করার লক্ষ্যে বর্তমান ব্যাকবোন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ককে সম্প্রসারণ করা হবে। আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে ফোর-জি সেবা চালু করা যাবে বলে আশা করা যায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status