ভারত
মিশনারিজের বিরুদ্ধে নবজাতক বিক্রির অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক
কলকাতা প্রতিনিধি
১৩ জুলাই ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
মাদার টেরিজার তৈরি মিশনারিজ অব চ্যারিটির বিরুদ্ধে নবজাতক বিক্রির অভিযোগ নিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। হিন্দুবাদী সঙ্ঘ পরিবার এই ইস্যুতে সরব হয়ে উঠেছে। পাল্টা প্রতিবােিদ সোচ্চার হয়েছেপশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সিপিআইএমের সাধালন সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মত নেতারা। অভিযোগ উঠেছে, ঝাড়খন্ডের রাঁচিতে মিশনারিজ অব চ্যারিটি পরিচালিত ‘নির্মল হৃদয়ে’র দুই সিস্টার নাকি এক নবজাতককে বিক্রি করেছেন। সেখানকার দুই সিস্টারকে গত ৫ জুলাই গ্রেপ্তারও করা হয়। বিষয়টির তদন্ত করছে ঝাড়খন্ড পুলিশ। মিশনারিজ অব চ্যারিটির তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, তারা তিন বছর হল শিশুদের দত্তক দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সংস্থার মুখপাত্র সুনীতা কুমার জানিয়েছেন, খবরটি শুনে আমরা বিস্মিত। এটা মিশনারিজ অফ চ্যারিটি, সন্ন্যাসিনী এবং সংস্থার প্রতিষ্ঠাতার নৈতিক অবস্থানের পরিপন্থী। রাঁচীর ২ কর্মীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটিকে আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। অবশ্য ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্স অফ ইন্ডিয়ার মহাসচিব বিশপ থিয়োডর রাঁচীর আর্চ বিশপ হাউসে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, বাচ্চা বিক্রির ঘটনায় নির্মল হৃদয়ের এক কর্মীর ভূমিকা থাকলেও থাকতে পারে। তবে নির্মল হৃদয়ের কোনও সিস্টার বাচ্চা বিক্রির সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে আরএসএসেরদিল্লি শাখার প্রধান রাজীব টুলি দাবি জানিয়েছেন, মাদার টেরিজার ‘ভারতরতœ’ সম্মান ফিরিয়ে নেওয়া হোক। কারণ, ভারতীয় নাগরিকেরা চান না ‘ভারতরতœ’ সম্মান কলঙ্কিত হোক। তাঁর ওই দাবিকে সমর্থন করেছেন বিজেপি নেতা সুব্রক্ষ্মণ্যম স্বামী। সঙ্ঘ ও বিজেপির এমন ভূমিকার সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপি কাউকে বাদ দিতে চায় না। নিন্দার ভাষা নেই। তিনি আরও বলেছেন, মিশনারিজ অব চ্যারিটি বলতে মাদার টেরিজা বা সিস্টার নির্মলার কথা মনে পড়ে। একটি ঘটনা ঘটেছে, তাতে এক জন বা ব্যক্তিগত ভাবে কেউ দোষী হতে পারে। তাই বলে একটি সংস্থাকে এ ভাবে জড়ানোটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের সমালোচনা করে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, মিশনারিজ অব চ্যারিটির নামে এমন প্রচার, ভাবা যায় না। এ সব সঙ্ঘ পরিবারের কাজ। বিশ্বাসযোগ্য কোনও অভিযোগ থাকলে তদন্ত হোক। কিন্তু এ ভাবে হেনস্থা করার অধিকার কারও নেই। তবে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, আগেও এমন অভিযোগ ওদের বিরুদ্ধে উঠেছে। সরকারের উচিত নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বার করা। তা না করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ভোটের জন্য অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। ঝাড়খন্ডের রাজ্য চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন রূপা বর্মা জানিয়েছেন, প ুলিশ ধৃতদের জেরা করে চারটির মধ্যে তিনটি শিশুর হদিশ পেয়েছে। বাকি এক জনের সন্ধান চলছে। পুরো ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে কমিটি।