অনলাইন
বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণে নীতিমালা হচ্ছে
সংসদ রিপোর্টার
১২ জুলাই ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৬:৩৪ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশের রোগীদের বিদেশ গিয়ে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা প্রণয়নের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ পর্যন্ত কতজন রোগী বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছে এবং কত টাকা ব্যয় হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান আপাতত দেয়া সম্ভব নয়। তবে নীতিমালা প্রণয়নের পর এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য দেয়া সম্ভব হবে। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে গতকাল সংসদ অধিবেশনে সরকার দলীয় এমপি ডা. এনামুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংসদে উত্তর দেন। আওয়ামী লীগের সিনিয়র দুই সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান ও মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের পৃথক দুটি সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মানদন্ড অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে এই মুহুর্তে ১ লাখ ডাক্তারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই মুহুর্তে দেশে সরকার নিবন্ধিত ডাক্তার রয়েছে মাত্র ২৮ হাজার। সরকার অচিরেই আরও ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এতেও চিকিৎসকের সঙ্কট থেকেই যাবে, এই সঙ্কট দ্রুতই সমাধান করা যাবে না। মন্ত্রী জানান, প্রতিবছর দেশ থেকে চিকিৎসার জন্য কিছুসংখ্যক রোগী বিদেশে চলে যায়। পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, প্রধানত চারটি কারণে বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে থাকে। কারণগুলো হচ্ছে- আর্থীক স্বচ্ছলতা, বিদেশে চিকিৎসা প্রীতি, হেলথ টুরিজম ও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে উপযুক্ত চিকিৎস স্বল্পতা। এ প্রবণতা রোধকল্পে আমাদের দেশে সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালকে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সুসজ্জিতকরণের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি জানান, বাংলাদেশে বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের বেশ কিছু আধুনিক হাসপাতাল যেখানে অন্য দেশ থেকে এসে রোগীগণ চিকিৎসা গ্রহণ করার বহু নজির রয়েছে। বাংলাদেশের রোগীদের বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়নের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এ পর্যন্ত কতজন রোগী বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছে এবং কত অর্থ ব্যয় হয়েছে- তার সঠিক পরিসংখ্যান আপাতত দেয়া সম্ভব নয়, তবে নীতিমালা প্রণয়নের পর এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য দেয়া সম্ভব হবে। এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ঔষধ কোম্পানীগুলো দাম বাড়ানোর পূর্বে উৎপাদন বা বিপনন কমিয়ে বেশির ভাগ সময় কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা ঔষধের মূল্য বৃদ্ধি করে- এই বিষয়টি সঠিক নয়। বর্তমানে দেশের চাহিদার প্রয় ৯৮ শতাংশ ঔষধ স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে মেটাতে সক্ষম। তিনি জানান, একই জেনেরিকের ঔষধ দুই বা ততোধিক কোম্পানী উৎপাদন করে থাকে বিধায় প্রতিযোগিতামূলক বাজারে কোন ঔষধের মূল্য পরিস্থিতির উপর ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের নিয়মিত মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে। তবে কোন কোম্পানী বাজারে ঔষধের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করলে এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে ঔষধ বিক্রির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়ে থাকে। অপর প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে যক্ষ্মা কোন প্রাণঘাতি রোগ নয়, চিকিৎসার মাধ্যমে শিশুদের যক্ষ্মা সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। অতীতে শিশু রোগী সনাক্ত ও চিকিৎসার বাইরে ছিল। তাই যক্ষ্মায় মৃত্যু হতো, বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে শিশুদের যক্ষ্মা নির্ণয় ও চিকিৎসার আওতায় আনায় অধিক সংখ্যক শিশু যক্ষ্মা রোগীকে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ নিরাময় করা সম্ভব হচ্ছে।