শেষের পাতা

আরিফের অভিযোগ কামরানের অস্বীকার

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

১২ জুলাই ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শুরু থেকেই নানা অভিযোগ বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর। অভিযোগ সম্পর্কে গতকাল মুখ খুললেন কামরান। বললেন ‘কে কী বললো সেদিকে আমার নজর নেই। আমার সময় নেই অন্যদের ব্যাপারে মাথা ঘামানোর। ভোটারের দ্বারে দ্বারে ঘুরতেই আমার সময় চলে যাচ্ছে।’ সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে এবার সব অভিযোগ বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর। নির্বাচনের শুরু থেকেই তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছেন- ‘সিলেটের মাটিতে কোনো অন্যায় আল্লাহ সহ্য করবেন না।’ এখন পর্যন্ত যেসব অভিযোগ উত্থাপিত করেছেন তার মধ্য রয়েছে- ‘পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে, গোয়েন্দা পুলিশ তার কর্মীদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে, নির্বাচন কমিশন তার অভিযোগ সম্পর্কে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, প্রিজাইডিং অফিসারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে, আওয়ামী লীগ প্রার্থী শোডাউন করছেন- কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।’ আরিফ এ অভিযোগ সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ কমিশনারকে ইতিমধ্যে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন- এবার প্রশাসন এক তরফা নীতি গ্রহণ করেছে। এ কারণে কোথাও অভিযোগ দিয়ে লাভ হচ্ছে না। তিনি নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সব ধরনের কারচুপি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন বলে জানান। এদিকে- সিলেটে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হলেও আরিফুল হক চৌধুরী নিজ দল ও জোট থেকে ছাড় পাননি। আরিফের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে দল থেকে বিদ্রোহী হয়ে প্রার্থী হয়েছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। সেলিমকে মঙ্গলবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি বহিষ্কারও করেছেন। কিন্তু বহিষ্কার করলেও সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় সেলিমের কারণে দলের ভেতরে এক তরফা সমর্থন পাবেন না আরিফুল হক চৌধুরী। সেলিমের পক্ষে একাংশ মাঠে সক্রিয়। আর সেলিম গতকালও জানিয়েছেন- বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের মৌন সমর্থন তিনি পাচ্ছেন। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও এবার সিলেটে তাদের মেয়র প্রার্থী রেখেছে। জামায়াতের প্রার্থী হলেন মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। ফলে এবার আরিফ জামায়াতে ইসলামীরও ভোট ব্যাংক হারালেন। নিজ দল ও জোটের ভেতরে সু-সংহত অবস্থান না থাকার পরও নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আরিফুল হক চৌধুরী। তার দাবি- তিনি ৫ বছরের মধ্যে প্রায় আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন। আর আড়াই বছর কাজ করেছেন। এই আড়াই বছরে যে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে সেটিই হচ্ছে তার আগামীতে মেয়র হওয়ার বড় উদাহরণ। বিএনপি, জামায়াত ও ২০ দলীয় জোটে এতো নাটকীয়তার পরও কামরান প্রতিপক্ষ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি তার নির্বাচনী কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। আরিফুল হক চৌধুরী প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগের তীরে বিদ্ধ করলেও তিনি নীরব থাকছেন। গতকাল নগরীর রিকাবীবাজার এলাকায় গণসংযোগ কালে কামরানকে আরিফের অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি সব কিছু অস্বীকার করেন। কামরান বলেন- ‘হাতে সময় কম। ভোটারের কাছে যেতে হবে। আমার সময় নেই অন্যদের ব্যাপারে মাথা ঘামানোর।’ তাদের দলের ভেতরেই সমস্যা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন কামরান। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- সিলেটের মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি পুলিশের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। পুলিশ কেবলমাত্র গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যাদের রয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করবে। সিলেটের পুলিশ কাউকে হয়রানি করছে না বলে ইতিমধ্যে তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। এদিকে- গতকাল সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের অনুষ্ঠানে সিলেটের মেয়র প্রার্থীরা উৎসবমুখোর পরিবেশে নির্বাচন করার অঙ্গীকার করেছেন। তারা বলেছেন- ‘ঈদ-পার্বণের মতো নির্বাচনও একটি উৎসব। এখানে যাতে কেউ অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে নগরবাসীকে সোচ্চার থাকতে হবে।’ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তাদের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান মেয়র প্রার্থীরা।
মখলিছুর রহমানকে কারণ দর্শাও নোটিশ প্রদান: আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে মখলিছুর রহমান কামরানকে নির্বাচন কমিশনে তলব করা হয়। গতকাল বিকাল সাড়ে চারটায় তাকে তলব করে নির্বাচন কমিশন। কাউন্সিলর প্রার্থী মখলিছুর রহমান নির্বাচন কমিশনে আসলে তাকে জেরা করে কমিশন। প্রতীক প্রদানের প্রথমদিনই আচরণবিধি ভঙ্গ করে মোটরসাইকেল শোডাউন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিশনের কর্মকর্তারা। এ সময় মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার কারণ দর্শাও নোটিশ ধরিয়ে দেন মখলিছুর রহমানের হাতে। সংবাদমাধ্যমকে মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘আমরা কোনভাবেই আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ মেনে নেবো না। প্রতীক বরাদ্দের প্রথমদিনই আমাদের কাছে মখলিছুর রহমান কামরানের শোডাউনের খবর আসে যার প্রেক্ষিতে কমিশনে তাকে তলব করে। তার হাতে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশের জবাবের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status