শেষের পাতা

‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত পাঁচ

বাংলারজমিন ডেস্ক

১১ জুলাই ২০১৮, বুধবার, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন

মাদকবিরোধী অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার ভোর ছয়টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় দুইজন, নাটোরে একজন,  কেরানীগঞ্জে একজন এবং লক্ষ্মীপুরে একজন মাদক ব্যবসায়ী মারা গেছে। র‌্যাব ও পুলিশের দাবি তারা প্রত্যেকেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল।

মিরপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি জানান, মিরপুরে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ফুটু ওরফে মান্না (৩৫) ও রাসেল আহম্মেদ (৩০) নামের দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগ্নে। র‌্যাবের দাবি এ ঘটনায় তাদের ২ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার ভোরে মিরপুর উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের আনন্দ বাজার বালুচর সংলগ্ন জোয়ার্দ্দারের ইটভাটার কাছে এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়া র‌্যাব-১২ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মোহাইমিনুল রহমান জানান, মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে একদল মাদক ব্যবসায়ী আনন্দবাজার বালুচর সংলগ্ন জোয়ার্দ্দারের ইটভাটার কাছে অবস্থান করছে সংবাদ পেয়ে একটি অভিযানিক দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। এসময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে দুইজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া  জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে র‌্যাব জানতে পারে বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুই ব্যক্তি সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে ও তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। র‌্যাব আরো জানায়, ঘটনাস্থল থেকে ১টি বিদেশি নাইন এমএম পিস্তল, ১টি দেশে তৈরি ওয়ান শুটারগান, ২টি কার্তুজ, ১২ রাউন্ড গুলি, ৪০ লিটার চোরাই মদ, ১৫শ’ পিস ইয়াবা ও ২শ’ ৩০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর-চাঁদপুর সড়কের চরপাতা এলাকায় পুলিশ-মাদক ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে ১৯ মামলার আসামি মাদক ব্যবসায়ী সোহেল রানা ওরফে চোরা সোহেল নিহত হয়েছেন। এসময় রায়পুর থানার এসআই মোস্তফা ও মোতাহের হোসেন আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে তিনশ’ পিস ইয়াবা ও ৯ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল ভোরে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, সোহেল রানা ওরফে চোরা সোহেল পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার ঝুমুর সিনেমা হল এলাকা থেকে সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভোররাতে তাকে নিয়ে ইয়াবা উদ্ধারে যায় পুলিশ। এক পর্যায়ে রায়পুর-চাঁদপুর সড়কের পাশে চরপাতা এলাকায় পৌঁছলে মাদক ব্যবসায়ী সোহেলের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। এতে সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এ সময় মোস্তফা ও মোতাহের হোসেন নামে দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয় বলে দাবি করে পুলিশ। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজিজুর রহমান মিয়া জানান, পুলিশ-মাদক ব্যবসায়ীর গোলাগুলিতে ১৯ মামলার আসামি মাদক ব্যবসায়ী সোহেল নিহত হয়।

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, নাটোরের বড়াইগ্রামে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ওসমান গণি (৩২) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এসময় ৪১০ গ্রাম হেরোইন, একটি ৭.৬২ বিদেশি পিস্তল, ৪ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি ম্যাগাজিন, পিস্তলের গুলির একটি খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের বাহিমালী বাজার মোড়ে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ওসমান গণি উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের গুরুমশাইল এলাকার মৃত মুনসুর আলী মুন্সীর ছেলে। ওসমান গণির বিরুদ্ধে নাটোর জেলার বিভিন্ন থানায় মাদক ও চাঁদাবাজি সহ ৫টি মামলা রয়েছে এবং সে নাটোর জেলার অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। র‌্যাব-৫ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর শিবলী মোস্তফা জানান, বাহিমালী বাজার মোড় থেকে ভাটুপাড়া গ্রামে যাওয়ার একশত গজ উত্তরে কাঁচা রাস্তার উপর টর্চের আলো এবং কিছু লোকের আনাগোনা দেখতে পায় র‌্যাব সদস্যরা। এসময় তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে র‌্যাবের টহল দল উক্ত স্থানের দিকে অগ্রসর হয়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে কিছু লোক দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তাদেরকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলে তারা টহল দলকে লক্ষ্য করে অতর্কিত গুলিবর্ষণ শুরু করলে র‌্যাবও পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। এসময় মাদক ব্যবসায়ী দলের ৩-৪ জন সদস্য পালিয়ে যায় এবং গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অজ্ঞাতনামা একজন পড়ে থাকে। পরে তাকে দ্রুত বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন এবং পরবর্তীতে থানা পুলিশের মাধ্যমে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। এদিকে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ওসমান গণির ভাই শাহিন সেখ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে বনপাড়া পৌরসভার রশিদ ডিলারের মোড় থেকে র‌্যাব সদস্যরা হেলমেট পরিয়ে তাকে মোটরসাইকেলযোগে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার খোঁজে র‌্যাব, ডিবি ও থানা অফিসে খোঁজ করা হলে ওসমান গণিকে আটক বা তুলে আনার কথা অস্বীকার করেন। এরপর রাত দুইটার দিকে ফেসবুকে সাংবাদিকদের নিউজ দেখে জানা যায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সে নিহত হয়েছে। পরিবারের দাবি, ওসমান গণি গত ৬ মাস যাবৎ কোনো মাদক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিল না।

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ঢাকার কেরানীগঞ্জে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেওশুর এলাকায় ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে মাদক ব্যবসায়ী নুর হোসেন (৩৬) ওরফে নুরা। এ ঘটনায় ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঢাকা জেলা দক্ষিণ ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, মো. নুর হোসেনকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারের জন্য ওই রাতেই নুর হোসেনকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার দেওশুর এলাকায় জনৈক মনির হাজীর বালুর মাঠে  নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় নুর হোসেনের সহযোগীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। এতে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ১০ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি করে। এসময় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময়কালে আসামি ও মাদক সম্রাট নুর হোসেন এক পর্যায়ে পালানোর চেষ্টা করলে সে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত নুর হোসেনের নামে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ডাকাতি, খুন ও মাদকের ২১টি মামলা রয়েছে। নুর হোসেন কেরানীগঞ্জ মডেল থানার জিয়ানগর এলাকার নুর ইসলামের ছেলে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status