ঈদ আনন্দ ২০১৮

খেলাধুলা

রাশিয়া মিস করবে যাদের

সমৃদ্ধ সুহৃদ

৩০ জুন ২০১৮, শনিবার, ৬:৪০ পূর্বাহ্ন

বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখেন প্রত্যেক ফুটবলারই। আর বড় মঞ্চে সেরা ফুটবলারের নৈপুণ্য দেখার অপেক্ষায় থাকেন ফুটবলপ্রেমীরাও। তবে রাশিয়ায় এবারের বিশ্বকাপে দেখা যাবে না বড় বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে। যারা ইতিমধ্যে অবসর নিয়েছেন কিংবা যাদের দেশ বিশ্বকাপেই নাম লেখাতে পারেনি। তেমনই কয়েক জনের গল্প তুলে ধরা হলো
দানি আলভেস
টানা তৃতীয় বিশ্বকাপে খেলার অপেক্ষায় ছিলেন দানি আলভেস। কোচ লিওনার্দো বাচ্চির পরিকল্পনায় ভালোমতোই ছিলেন ব্রাজিলিয়ান এ রাইট-ব্যাক। তবে বিশ্বকাপের এক মাস বাকি রেখে ব্রাজিল সমর্থকরা পান দুঃসংবাদ। ফ্রেঞ্চ কাপে ফাইনালে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন প্যারিস সেইন্ট জার্মেই’র ডিফেন্স তারকা দানি আলভেস। এতে তিনি ছিটকে পড়েন রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকেও। ২০০৬-এ ব্রাজিলের জার্সি গায়ে অভিষেক আলভেসের। এফসি বার্সেলোনার সাবেক তারকা আলভেস জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১০৭ ম্যাচ। ক্যারিয়ারে অনন্য রেকর্ডের গর্বও আলভেসের। পেশাদার ফুটবলে সর্বাধিক ৩৬টি বড় শিরোপা জয়ের রেকর্ড এ ব্রাজিলিয়ান তারকার।
জিয়ানলুইজি বুফন
অন্যতম বিশ্বসেরা গোলরক্ষক। বোদ্ধারা ইকার ক্যাসিয়াস এবং লেভ ইয়াসিনদের কাতারেও স্থান দেন তাকে। ২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালের নায়ক জিয়ানলুইজি বুফনই। জিনেদিন জিদানের ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জেতে বুফনের ইতালি। এবার জিয়ানলুইজি বুফনের ঘটনাটি ভক্তদের জন্য হতাশার। এবারের বিশ্বকাপ খেলারও স্বপ্ন ছিল ৪০ বছর বয়সী গোলরক্ষক বুফনের। কিন্তু বাছাইপর্ব থেকেই ছিটকে পড়েছে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি।
জাভি হার্নান্দেজ
২০১০ বিশ্বকাপ বিজয়ী স্পেনের অন্যতম তারকা। স্পেনের সোনালি প্রজন্মের অন্যতম সেরা ফুটবলার। স্পেনের ‘ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরো’ ত্রিমুকুট জয়ের অন্যতম কারিগর। ২০০৮ ও ২০১২ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের বিজয়ী তারকা ২০১০-এ নেন বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ। এফসি বার্সেলোনার এ তারকা জাভিকে শুধু স্পেনেরই নয়, সময়ের বিশ্বসেরা মিডফিল্ডারই ভাবা হতো। ২০১৪ বিশ্বকাপের পর অবসরে চলে গিয়েছেন বিশ্বজয়ী এই ফুটবলার।
ইকার ক্যাসিয়াস
সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক ভাবা হয় ইকার ক্যাসিয়াসকে। স্পেনের সোনালি প্রজন্মের আরেক প্রতিনিধি। ইউরো এবং বিশ্বকাপ জয়ে স্পেন দলকে দিয়েছেন নেতৃত্ব। তার হাতে উঠেছে ২০০৮ ও ২০১২ ইউরো এবং ২০১০ বিশ্বকাপ শিরোপা। ক্যারিয়ারে প্রায় সব শিরোপারই স্বাদ নিয়েছেন স্পেন ও রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এ গোলরক্ষক। ২০০০ সালে জাতীয় দলে অভিষেক তার। এখনো অবসরের ঘোষণা দেননি। তবে এবারের বিশ্বকাপে কোচ হুলেন লোপেতেগি দলে রাখেননি তাকে।
ফিলিপ লাম
আরেক বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। জার্মানিকে ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ে দিয়েছেন নেতৃত্ব। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে ছিলেন জার্মান কোচ জোয়াকিম লোর অন্যতম ভরসা। তবে ২০১৪ বিশ্বকাপে খেলেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে। মাঝ মাঠ থেকে বল যোগানে দক্ষ লামের নৈপুণ্যের সুফলটা পায় জার্মানরা ২০১৪’র বিশ্বকাপে। রিও ডি জেনিরোর মারাকানা থেকে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতেই দেশে ফেরে জার্মানরা। বিশ্বকাপের পরই অবশ্য অবসরের ঘোষণা দেন তিনি।
বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগার
বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার। জার্মানিকে চতুর্থ বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দেয়ার অন্যতম নায়ক। মাঠে তার উপস্থিতি ছিল সব সময়ই চোখে পড়ার মতো। একদিকে আক্রমণ তৈরি করা, অন্যদিকে প্রতিপক্ষ দলের আক্রমণ ঠেকানোÑ দুটি দায়িত্বই বেশ দক্ষতার সঙ্গে পালন করতেন তিনি। জার্মানির হয়ে ২০০৪ সালে অভিষেক। ২০১৪ বিশ্বকাপের পর পান জার্মানি দলের অধিনায়কের আর্মব্যান্ড। তবে ২০১৬ ইউরোর পর অবসরের ঘোষণা দেন তিনি।
মিরোসøাভ ক্লোসা
জার্মানির বিশ্বকাপ বিজয়ী আরেক দিকপাল। বিশ্বকাপে সর্বাধিক গোলের রেকর্ড তারই। ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মাটিতেই বল পায়ে ভেঙেছেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো ডি লিমার রেকর্ড। রোনালদোর ১৫ গোলের রেকর্ড ভেঙে আসরের ইতিহাসে নিজের ১৬তম গোলটি আদায় করেন ব্রাজিলেরই বিপক্ষে সেমিফাইনালে। জার্মানির হয়ে সর্বোচ্চ ৭১ গোলের কীর্তিও পোলিশ বংশোদ্ভূত ফুটবলার ক্লোসার। মারাকানায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনালে ৮৮ মিনিট পর্যন্ত মাঠে ছিলেন ক্লোসা। তার পরিবর্তেই মাঠে নামানো হয় মারিও গোটসাকে। অতিরিক্ত সময়ে যার গোলে শিরোপা কুড়ায় জার্মানি। ২০১৪ বিশ্বকাপের পরই অবসরের ঘোষণা দেন ক্লোসা।
আন্দ্রে পিরলো
ইতালির ২০০৬ বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক। কোচ মার্সেলো লিপ্পি তাকে ঘিরেই সাজাতেন রণকৌশল। ২০০৬ বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের পথে ইতালির সবগুলো ম্যাচে তিনি মাঠে কাটান ৬৬৮ মিনিট। ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালসহ আসরে তিনবার কুড়ান ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব। ব্রাজিলে ২০১৪ বিশ্বকাপেও খেলেছেন যথারীতি। তবে ২০১৫তে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দেন ইতালির মাঝমাঠের এ ফুটবল শিল্পী।
আরিয়েন রোবেন
ডাচ্ ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা উইঙ্গার। ২০১০ বিশ্বকাপে দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে। ২০১৪ বিশ্বকাপে স্বাগতিক ব্রাজিলকে হারিয়ে নেদারল্যান্ডস অর্জন করে তৃতীয় স্থান। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকিট পায়নি রোবনের দল নেদারল্যান্ডস।
রবিন ভ্যান পার্সি
অন্যতম বিশ্বসেরা স্ট্রাইকার। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই বিশ্বজয়ী স্পেনকে ৫-১ গোলে হারায় ডাচ্রা। অধিনায়ক ভ্যান পার্সি করেন জোড়া গোল। যার একটি ছিল উড়ন্ত হেডে। আসর সেরা গোলের ‘পুসকাস অ্যাওয়ার্ড’ জেতে সেটি।
ওয়েসলি স্নাইডার
আরিয়েন রোবেনের সমসাময়িক বিশ্বের অন্যতম সেরা আরেক ফুটবলার। ২০১০ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসেক ফাইনালে তোলা কিংবা ২০১৪ বিশ্বকাপে দলকে তৃতীয় করার পেছনে অন্যতম অবদানও ছিল তারও। তবে ব্রাজিলে সেমিফাইনালের টাইব্রেকারে স্নাইডারের স্পট কিক ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো। গত বছর এ ডাচ্ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার অবসরের ঘোষণা দেন।
আলেক্সিস সানচেজ
বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। বার্সেলোনা হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে আর্সেনাল এবং সর্বশেষ তিনি খেলছেন ম্যানইউতে। চিলির সোনালি প্রজন্মের ফুটবলার সানচেজ কুড়িয়েছেন টানা দুটি কোপা আমেরিকা শিরোপার গৌরব। কোপা আমেরিকার শেষ দুই আসরের ফাইনালে চিলি হারায় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে। তবে এবারের বিশ্বকাপের মূল পর্বের টিকিট কাটতে ব্যর্থ হয় চিলিয়ানরা।
আরতুরো ভিদাল
বায়ার্ন মিউনিখের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার। নিজেদের মাটিতে কোপা আমেরিকা আসরে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চিলিকে তাদের ইতিহাসে প্রথম কোনো বড় ট্রফি এনে দেয়ার ক্ষেত্রে বড় অবদান ছিল আরতুরো ভিদালের। ২০১৫ কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে টাইব্রেকারে গোল পান ভিদাল। ফাইনালে হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা। ২০১৬’র কোপা আমেরিকায়ও তিনি ছিলেন চিলির অন্যতম সেরা তারকা। যদিও টাইব্রেকারে গিয়ে প্রথম শটটা মিস করেছিলেন তিনি। তবে টাইব্রেকারে শেষ পর্যন্ত ৪-২ ব্যবধানে জয় দেখে তার দল চিলিই।
দিয়েগো ফোরলান
উরুগুয়ের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফুটবলার। ১৯৫০ বিশ্বকাপ জয়ের পর উরুগুয়ে যেন হারিয়েই গিয়েছিল বিশ্ব ফুটবল থেকে। আশির দশকে এনজো ফ্রান্সেকোলির খেলা নজর কাড়লেও উল্লেখ করার মতো সাফল্যের গল্প ছিল না লাতিন পাওয়ার হাউজ উরুগুয়ের ফুটবলে। ২০১০’র বিশ্বকাপে দিয়েগো ফোরলানের আবির্ভাব। তাদের হাত ধরে উরুগুয়ে উঠে গেল সেমিফাইনালে। দল চতুর্থ হলেও টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল পুরস্কার জেতেন উরুগুয়ের অধিনায়ক দিয়েগো ফোরলান। ২০১৪ বিশ্বকাপেও যথারীতি দলে ছিলেন তিনি। আসর শেষে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান ৩৫ বছর বয়সী দিয়েগো ফোরলান।
জøাতান ইবরাহিমোভিচ
সুইডেনের সর্বকালের সেরা ফুটবলার। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলেছেন ১১৬ ম্যাচ। এতে সর্বাধিক ৬২ গোলের রেকর্ড তারই। ২০১৬’র ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেয় সুইডেন। গ্রুপের তিন ম্যাচে অধিনায়ক ইবরাহিমোভিচ প্রতিপক্ষের গোলবারে অন টার্গেটে শট নেন একবারই মাত্র। আর আসর শেষে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দেন এ সফল স্ট্রাইকার। ক্যারিয়ারে দুটি বিশ্বকাপ আসরে (২০০২ ও ২০০৬) খেলার গৌরব কুড়ান ইবরা। তবে ২০১০ ও ২০১৪’র বিশ্বকাপের মূল আসরের টিকিট কাটতে ব্যর্থ হয় সুইডিশরা। ত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status