বাংলাদেশ কর্নার

বিশ্বকাপের প্রথম গোলদাতারা

কাফি কামাল

২৫ জুন ২০১৮, সোমবার, ৯:৪৭ পূর্বাহ্ন

গোলের খেলা ফুটবল। প্রতিটি বিশ্বকাপেই গোল হয় প্রচুর। কিন্তু উদ্বোধনী ম্যাচের প্রথম গোলটির প্রতি আলাদা একটি আগ্রহ থাকে সবার। রাশিয়া বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলটি করেছেন স্বাগতিক দেশের ইউরি আলেকজান্দ্রোভিচ গাজিনস্কি। ফিরে দেখা যাক, প্রতিটি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের প্রথম গোল কারা করেছিলেন। প্রতিটি উদ্বোধনী ম্যাচেই কি গোল হয়েছিল? প্রথম গোল করেও কি তারা দলকে বিজয়ী করতে পেরেছিলেন? চলুন, প্রথম বিশ্বকাপ দিয়ে শুরু করি।
বিশ্বকাপের প্রথম গোলদাতা হলেন ফ্রান্সের ফরোয়ার্ড লুসিয়ান লরেন্ট। ১৯৩০ সালে উরুগুয়ে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী তথা বিশ্বকাপের ইতিহাসের প্রথম ম্যাচটিতে মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্স ও মেক্সিকো। দিনটি ছিল ১৩ই জুলাই। মন্টিভিডিউর এসতাদিও পসিটস (পসিটস স্টেডিয়ামে) ম্যাচের ১৯ মিনিটে গোল পান লুসিয়ান লরেন্ট। বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম গোলদাতা হিসেবে ইতিহাসে যুক্ত হয় তার নাম। সে ম্যাচে ৪-১ গোলে হেরেছিল মেক্সিকো।
১৯৩৪ সালের ইতালী বিশ্বকাপে আলাদা করে কোন উদ্বোধনী ম্যাচ ছিল না। ২৭শে মে ব্লোগনা, ফ্লোরেন্স, মিলান, ত্রেইস্তে, নেপলেস, তুরিন, জেনোয়া ও রোমে একই সময়ে শুরু হওয়া ৮টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ১৬টি দল। ব্লোগনায় অনুষ্ঠিত আর্জেন্টিনা-সুইডেনের ম্যাচে ৪ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলটি পান আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার বেলিস। তবে ম্যাচটি ৩-২ গোলে হেরেছিল তার দল।
১৯৩৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপে ৪ঠা জুন উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল সুইজারল্যান্ড-জার্মানী। ১-১ গোলে ড্র হওয়া সে ম্যাচের ২৯ মিনিটে গোল পান জার্মান স্ট্রাইকার গাউসেল।
১৯৫০ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল রিও ডে জেনেরিও’র বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে। স্বাগতিক ব্রাজিলের মুখোমুখি হয়েছিল মেক্সিকো। সে ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায় ব্রাজিলের স্ট্রাইকার অ্যাডেমির প্রথম গোল পান ৪-০ গোলে জিতে তার দল।
১৯৫৪ সালের সুইজারল্যান্ড বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে একই সময়ে ব্রাজিল-মেক্সিকো ও যুগোশ্লাভিয়া-ফ্রান্স মুুখোমুখি হয়েছিল। ১-০ গোলে নিস্পত্তি হওয়া ম্যাচটির ১৫ মিনিটের মাথায় ফ্রান্সের বিপক্ষে গোল পান যুগোশ্লাভিয়ার স্ট্রাইকার মিলুটিনোভিচ।
১৯৫৮ সালের সুইডেন বিশ্বকাপেও ৮জুন উদ্বোধনী দিন দুইটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। আর্জেন্টিনা-জার্মানীর ম্যাচে খেলার মাত্র ৪ মিনিটের মাথায় গোল করেন আর্জেন্টাইন উইঙ্গার করবাট্টা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে তারা ম্যাচটি হেরে যায়।
১৯৬২ সালের চিলি বিশ্বকাপে ৩০ মে উদ্বোধনী ম্যাচে অংশ নেন উরুগুয়ে-কলম্বিয়া। ম্যাচের ১৯ মিনিটে কলম্বিয়ার সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার জুলুয়াগা প্রথম গোল পেলেও উরুগুয়ের কাছে হেরে যায় ২-১ গোলে।
১৯৬৬ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে অংশ নিয়েছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে। ১১ই জুলাই অনুষ্ঠিত সে ম্যাচটি ছিল গোল শূন্য। ১৩ই জুলাই ফ্রান্স-মেক্সিকোর মধ্যে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচটিতে ৪৮ মিনিটে প্রথম গোল দেন মেক্সিকোর ফরোয়ার্ড বোরজা।
১৯৭০ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে অংশ নিয়েছিল স্বাগতিক মেক্সিকো ও সোভিয়েত ইউনিয়ন। ম্যাচটি ড্র হয় গোল শূন্য এ বিশ্বকাপের প্রথম গোলটি হয় উরুগুয়ে-ইসরাইল ম্যাচে। ২-০ গোলে জয়ী ম্যাচটির ২৩ মিনিটে ওই বিশ্বকাপের প্রথম গোল করেন উরুগুইয়ান মিডফিল্ডার ইলডো মানেইরো।
১৯৭৪ সালের পশ্চিম জার্মানী বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক জার্মানী ও চিলি। ম্যাচের ১৮ মিনিটে জার্মানীর মিডফিল্ডার পল ব্রেইথনার প্রথম গোল দেন। জার্মানী ম্যাচটি জিতে নেয় ১-০ গোলে।
১৯৭৮ সালের আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয় ইতালী-ফ্রান্স। ম্যাচের প্রথম মিনিটে ফ্রান্সের ফরোয়ার্ড লাকুম্বে গোল পান। দ্রুততম সময়ে গোল করেও পরে ২-১ গোলে হেরে যায় তার দেশ।  
১৯৮২ সালে স্পেন বিশ্বকাপের ইতালী-পোলান্ডের উদ্বোধনী ম্যাচটি ছিল গোলশূন্য ড্র। পরদিন পেরু-ক্যামেরুনের ম্যাচটি ছিল গোল শূন্য ড্র। তৃতীয়দিন জার্মানী-আলজেরিয়ার ম্যাচে আলজেরিয়ার স্ট্রাইকার মাদজের ৫৪ মিনিটে ওই বিশ্বকাপের প্রথম গোল পান। তার দেশ ম্যাচটি জিতে যায় ২-১ গোলে।
১৯৮৬ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইতালী-বুলগেরিয়া। ১-১ গোলে ড্র ম্যাচটির ৪৪ মিনিটে ইতালীর স্ট্রাইকার আলেসান্দ্রো আলতোবেল্লী প্রথম গোল করেন।
১৯৯০ সালের ইতালী বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে অংশ নেন আর্জেন্টিনা-ক্যামেরুন। মিলানের সান সিরো স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতে নেয় ক্যামেরুন। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে একমাত্র গোলটি পান ক্যামেরুনের ওমাম বিয়িক।
১৯৯৪ সালের যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মান-বলিভিয়া। ৬১ মিনিটে জার্মানির স্ট্রাইকার ইয়ুরগন ক্লিন্সম্যান গোল দেন এবং তার একমাত্র গোলে জার্মান জিতে যায়।
১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে লড়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ও স্কটল্যান্ড। ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় গোল করেন ব্রাজিলের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার সিজার সাম্পাইও। ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতে ব্রাজিল।
২০০২ সালের জাপান-কোরিয়া বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ঘটেছিল অঘটন। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় নতুন দল সেনেগাল। ৩০ মিনিটের মাথায় একমাত্র গোলটি করেন সেনেগালের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার পাপা বৌবা দিওপ।
২০০৬ সালের জার্মান বিশ্বকাপে স্বাগতিক জার্মানী ও কোস্টারিকার ম্যাচটি ছিল গোলে ভরপুর। জার্মানির ৪ গোলের বিপরীতে কোস্টারিকা পরিশোধ করে ২ গোল। ম্যাচের ৬ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলটি করেন জার্মানীর তখনকার দুর্দান্ত ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ও বর্তমানে দেশটির কোচ ফিলিপ লাম।
২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটি ড্র হয় ১-১ গোলে। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে প্রথম গোলটি করেন দক্ষিণ আফ্রিকার এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সাবালালা।
২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটি স্মরণীয় হয়ে আছে আত্মঘাতি গোলের কারণে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নিজেদের জালে বল পাঠিয়ে ওই বিশ্বকাপের প্রথম গোলটি করেন ব্রাজিলের লেফট উইঙ্গার মার্সেলো। অবশ্য ২৯ মিনিটের মাথায় দলীয় প্রথম গোলটি করেন হাল আমলের অন্যতম পারফরমার নেইমার। ব্রাজিল ম্যাচটি জিতে ৩-১ গোলে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status