প্রথম পাতা

জাপান-সেনেগাল রোমাঞ্চকর ড্র, জয়ে আশায় কলম্বিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক

২৫ জুন ২০১৮, সোমবার, ২:২২ পূর্বাহ্ন

রাশিয়া বিশ্বকাপে নকআউট পর্বের পথে সমানতালে এগোচ্ছে জাপান ও সেনেগাল। গতকাল এইচ গ্রুপের এ দুইদলের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচটি ২-২ সমতায় শেষ হয়। দু’দলই নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছিল। অন্যদিকে বাঁচা-মরার ম্যাচে পোল্যান্ডকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে টিকে গেল কলম্বিয়া। আর এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিশ্বকাপ শেষ হল পোলিশদের। গতকাল কাজান অ্যারেনায় ম্যাচের ৪০ মিনিটের মাথায় লিড নেয় কলম্বিয়া। একাদশে ফেরা হামেস রদ্রিগেজের চমৎকার ক্রস হেডে জালে পাঠান কলম্বিয়ান সেন্টারব্যাক ইয়েরে মিনা। প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে ছিল কলম্বিয়া। গোলমুখে তিনটি শট নেয় তারা। অন্যদিকে, পোলিশদের দুটি প্রচেষ্টার একটিও গোলে ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া পোল্যান্ড উল্টো আরো দুই গোল হজম করে। ৭০ মিনিটে মিডফিল্ডার হুয়ান ফার্নান্দো কুইনতেরোর পাস ধরে নিখুঁত ফিনিশিং টানেন কলম্বিয়ান অধিনায়ক রাদামেল ফ্যালকাও। পাঁচ মিনিট বাদেই পোলিশ গোলরক্ষককে মুখোমুখি অবস্থানে পরাস্ত করেন উইঙ্গার হুয়ান কুয়াদরাদো। ৩-০ গোলে পিছিয়ে ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায় পোল্যান্ড।
আগামী ২৮শে জুন ‘এইচ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে জাপানের মুখোমুখি হবে পোল্যান্ড। একইদিন সেনেগালকে মোকাবিলা করবে কলম্বিয়া। নিজেদের প্রথম ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে ২-১ গোলে কলম্বিয়া ও সেনেগালের কাছে সমান ব্যবধানে হার মানে পোল্যান্ড।
বিশ্বকাপ মঞ্চে এই প্রথম মুখোমুখি হয় পোল্যান্ড ও কলম্বিয়া। দুইদলের মধ্যকার চারটি প্রীতি ম্যাচে কলম্বিয়া ও পোল্যান্ড সমান দুই ম্যাচে জয় দেখে। সবশেষ ২০০৬ সালের আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচটিতে ২-১ গোলের জয় পায় দক্ষিণ আমেরিকার পরাশক্তি কলম্বিয়া। বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার সেরা সাফল্য ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল। অন্যদিকে গত দুই আসরে বাছাইপর্ব পেরোতে পারেনি পোল্যান্ড। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ হেরে কখনোই দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে পারেনি তারা। এবার পোলিশদের নেতৃত্বে ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানদোস্কি। ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইপর্বে সর্বোচ্চ ১৬ গোল করেন তিনি।
নকআউট পর্বের পথে এগিয়ে জাপান-সেনেগাল
গ্রুপ পর্বের মুখোমুখি লড়াইয়ে জাপান ও সেনেগাল কেউ কাউকে হারাতে পারেনি। গতকাল একাতেরিনবার্গ অ্যারেনায় দুইদলের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচটি ২-২ সমতায় শেষ হয়। দুই দফায় পিছিয়ে থেকে ম্যাচে ফেরে ‘সামুরাই ব্লু’ খ্যাত এশিয়ার পরাশক্তি জাপান। পয়েন্ট ভাগাভাগি করলেও নকআউট পর্বের লক্ষ্যে সুবিধাজনক অবস্থানেই রয়েছে জাপান ও সেনেগাল। দুই ম্যাচ শেষে সমান এক জয় ও এক ড্রয়ে সমান ৪ পয়েন্ট তাদের। প্রথম ম্যাচে কলম্বিয়াকে ২-১ গোলে জাপান ও পোল্যান্ডকে একই ব্যবধানে হারায় সেনেগাল। বদলি হিসেবে নেমে জাপানের হার এড়ানো গোল উপহার দেন অভিজ্ঞ উইঙ্গার কেইসুকে হোন্ডা। প্রথমে খেলোয়াড়দের জটলায় বল ক্লিয়ার করতে পারেননি সেনেগাল গোলরক্ষক খাদিম এনদাইয়ি। ফিনিশিং লাইনের বাম পাশ থেকে গোলমুখের দিকে বল বাড়িয়ে দেন জাপানের প্রথম গোলদাতা তাকাশি ইনুয়ি। শিনজি ওকাজাকি বলের নাগাল না পেলেও বুলেট শটে ফিনিশিং টানতে ভুল করেননি হোন্ডা। ৭৮ মিনিটে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ২-২। সাত মিনিট আগে জাপানের জালে বল পাঠান সেনেগাল রাইটব্যাক মুসা ওয়াগ। এর আগে প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ সমতায়। ম্যাচের ১১ মিনিটে সেনেগালকে লিড এনে দেন অধিনায়ক সাদিও মানে। গোলরক্ষক ইজি কাওয়াশিমার ভুলের খেসারত দেয় জাপান। সেনেগাল ডিফেন্ডার ইফসুফ সাবালির শট গ্লাভসে না আটকে পাঞ্চ করেন কাওয়াশিমা। সামনেই দাঁড়ানো সাদিও মানের গায়ে লেগে বল জালে জড়ায়। ৩৪ মিনিটের মাথায় জাপানকে সমতায় ফেরান মিডফিল্ডার তাকাসুই ইনুয়ি। ডি-বক্সের বাম প্রান্তে উড়ন্ত পাস দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ইনুয়ির দিকে বাড়িয়ে দেন ডিফেন্ডার ইয়োতে নাগাতোমো। ঝাঁপিয়ে পড়েও ইনুয়ির কোনোকুনি শট ফেরানোর সুযোগ ছিল না এনদাইয়ির। পুরো ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল জাপান। ৫৭ শতাংশ বল তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু আক্রমণে এগিয়ে থাকে আফ্রিকার দেশ সেনেগাল। গোলমুখ তাক করে জাপান মোট ৭টি শট নেয়। তিনটি ছিল সরাসরি গোলমুখে। বিপরীতে গোলের প্রচেষ্টায় ১৫টি শট নেয় সেনেগাল। সাতটি ছিল টার্গেটে। জাপানকে দুইটি ও সেনেগালের তিনজনকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। ম্যাচে পাঁচটি সেভ করেন জাপান গোলরক্ষক কাওয়াশিমা। গোলের দারুণ কিছু সুযোগ পায় জাপানও। ৬১ মিনিটের মাথায় গোলমুখের সামনে বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন ফরোয়ার্ড ইউইয়া ওসাকা। এর চার মিনিট বাদেই ইনুয়ির স্ট্রাইক ক্রসবারে লাগে। বিশ্বকাপে এবারই প্রথম মুখোমুখি হয় জাপান ও সেনেগাল। এর আগে প্রীতি ম্যাচে দুইবারের সাক্ষাতেই জয় পায় সেনেগাল। ২০০৩ সালে জাপানের মাঠে ১-০ গোলের জয় পায় তারা। এর দু’বছর আগে সেনেগালে গিয়ে ২-০ গোলে হারে জাপান। ষষ্ঠবার বিশ্বকাপ খেলা জাপান দু’বার দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলে। গত আসরে তারা গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়। এবার প্রথম ম্যাচেই ইতিহাস গড়ে সূর্যোদয়ের দেশ জাপান। এশিয়ার প্রথম দল হিসেবে দক্ষিণ আমেরিকান দলের বিপক্ষে জয়ের রেকর্ড গড়ে জাপানিজরা। ম্যাচটিতে ৮৭ মিনিট দশজন নিয়ে খেলে কলম্বিয়া। জাপানের শট হাত দিয়ে ঠেকিয়ে ৩ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখেন কলম্বিয়ান মিডফিল্ডার কার্লোস সানচেজ মোরেনো। অন্যদিকেব নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ খেলছে সেনেগাল। ২০০২ আসরে অভিষেকেই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে বাজিমাত করে আফ্রিকার দেশটি। সেবার গ্রুপের প্রথম ম্যাচেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে (১-০) হারিয়ে দেয় সেনেগাল।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status