বাংলারজমিন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা
নিরাপত্তাহীন বিশ্বনাথের যুবলীগ নেতা
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২৫ জুন ২০১৮, সোমবার, ৯:৩৬ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের বর্বরতার বিচার চেয়ে আবেদন করায় সিলেটের বিশ্বনাথের যুবলীগ নেতা সুন্দর আলী রুহুলের জীবন হুমকির মুখে। অভিযুক্তদের স্বজনদের ক্রমাগত হুমকির কারণে তিনি বিশ্বনাথ থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছেন। এর পরও স্বস্তিতে নেই অভিযোগকারী রুহুল। নানাভাবে তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগকারী সুন্দর আলী রুহুল বিশ্বনাথের জানাইয়া গ্রামের মৃত আছদ্দর আলীর পুত্র। তিনি বিশ্বনাথ বাজারের একজন ব্যবসায়ী। পাশাপাশি তিনি বিশ্বনাথ ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। তার চাচা হাজী মনু মিয়া ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ৩রা জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে একই গ্রামের আইয়ূব আলী, আব্বাস আলী, মছদ্দর আলী ও কাছিম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে ওপরের চার ব্যক্তিকে তিনি ‘রাজাকার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তার প্রমাণ স্বরূপ তিনি ‘রণাঙ্গন-৭১’ বইয়ের রাজাকারের তালিকায় নাম রয়েছে বলে জানান। আবেদনে রুহুল দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তার চাচা হাজী মনু মিয়া ছিলেন বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের সভাপতি। এ কারণে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের এলাকায় চোখ পড়ে রাজাকার ও আল সামসদের। ১৯৭১ সালের ১৪ই অক্টোবর শনিবার বেলা ১১টার দিকে ওই ৪ জনের নেতৃত্বে পাকবাহিনীর সদস্যরা তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা তাদের বাড়িতে লুটপাট ছাড়াও অগ্নিসংযোগ করে সবকিছু জ্বালিয়ে দেয়। পরবর্তীকালে ৩১শে আগস্ট রাজাকারদের সহায়তায় তাদের জগন্নাথপুর এলাকার শ্রীরামসীতে গণহত্যা চালানো হয়। এদিকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ই জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে পিবিআইয়ের একটি টিম এলাকায় গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত সম্পন্ন করেন। প্রাথমিক তদন্ত টিম ফিরে যাওয়ার পর দিন ১৫ই জুন বিশ্বনাথ থানায় নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন সুন্দর আলী রুহুল। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পর আসামিদের স্বজনরা তাকে নানাভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। এর মধ্যে ১৪ই জুন বিকালে বিশ্বনাথ বাজারের লাইটেস স্ট্যান্ডের অভিযুক্ত আব্বাস আলীর ছেলে শামীম আহমদ তাকে পেয়ে অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেয়। অভিযোগ তুলে না নিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করবে বলে জানিয়েও যায়। এদিকে- রুহুলের অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করেছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ।