শেষের পাতা
কামরানের শোডাউন আরিফের অপেক্ষা
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২৪ জুন ২০১৮, রবিবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
নৌকার টিকিট নিয়ে পৌঁছানোর পর কামরানকে নিয়ে সিলেটে শোডাউন করেছে নেতাকর্মীরা। কামরান শিবিরে নেমে এসেছে উচ্ছ্বাস। কামরানকে ঘিরে সরব সিলেট আওয়ামী লীগের তৃণমূল। অপরদিকে এখনো অপেক্ষায় আরিফ। ঢাকা থেকে সিলেটে ফিরে তিনি গতকাল নিজ বাসাতেই কাটিয়েছেন। আরিফ সমর্থকরা মনে করছেন, ধানের শীষের টিকিটের শেষ হাসি হাসবেন আরিফই। কারণ, বর্তমান মেয়র হিসেবে তারই অগ্রাধিকার বেশি। আর বিএনপি নেতারা বলছেন, দল যাকে দেবে তার পক্ষেই সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামবেন। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ২৮শে জুন। তার আগেই দলীয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে মেয়র পদে মনোনয়ন দিতে হবে। সেই আঙ্গিকে একেক করে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘোষিত হয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের নাম। দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এই নাম ঘোষণা করা হয়। নৌকার টিকিট নিয়ে গতকাল বিকালে ঢাকা থেকে সিলেটে এসে পৌঁছেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। এ সময় তাকে স্বাগত জানাতে হাজারো নেতাকর্মী ভিড় জমান কদমতলীস্থ হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী স্কয়ারে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কামরান এসে পৌঁছেন সেখানে। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় কামরান সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। বলেন, ‘সিলেটের মানুষের পাশে ছিলাম। পাশে আছি। আগামীতে পাশে থাকতেই প্রধানমন্ত্রী তার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছেন।’ এখন তিনি সব নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। বক্তব্য শেখ হওয়ার পর শতাধিক মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে কামরানকে নিয়ে আসা হয় ছড়ারপাড়স্থ বাস ভবনে। ওখানেও শত শত নেতাকর্মী তাকে বরণ করতে ভিড় জমান। এদিকে, মনোনয়ন পাওয়ার পর সিলেটে পৌঁছে কামরান মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘সিলেটের মানুষ গেল পাঁচ বছর তেমন সেবা পায়নি। আমি মেয়র না হলেও তাদের পাশে ছিলাম। এবার নির্বাচনের মাধ্যমে মেয়র হয়ে নগরবাসীর সেবা করতে চাই।’ তিনি জানিয়েছেন, আজ-কালের মধ্যে তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে মনোনয়ন সংগ্রহ করবেন। এরপর তা জমা দেবেন। নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেয়া নিয়ম রক্ষা করে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন বলে জানান। ওদিকে, সিলেট বিএনপিতে এখনো অপেক্ষায় বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। কিন্তু বিএনপির তরফ থেকে এখনো ঘোষণা করা হয়নি প্রার্থীর নাম। বৃহস্পতিবার বিকালে আরিফসহ ছয় জন দলীয় মনোনয়ন দাখিল করেন। এরপর তারা স্থায়ী কমিটির কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। কিন্তু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সিলেট নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি। এ কারণে গতকাল পর্যন্ত সিলেট বিএনপির মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। আরিফুল হক চৌধুরী গত শুক্রবার রাতেই সিলেটে এসে পৌঁছেছেন। তিনি গতকাল বাসাতেই ছিলেন। দলের কেউ কেউ গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তবে, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সিলেটবাসীর সেবা করেছি। মানুষের ভালোবাসা আমার সঙ্গে রয়েছে। বিএনপির মনোনয়ন আমার পক্ষে আসবে বলে আশাবাদী।’ আরিফ ছাড়াও বিএনপির অন্য প্রার্থীরাও সিলেটে ফিরে এসেছেন। তারাও আছেন অপেক্ষায়। সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী নাসিম হোসাইন জানিয়েছেন, ‘সিলেট বিএনপি চায় দল ঘেঁষা মেয়র প্রার্থী। বিগত পাঁচ বছরে বিএনপির নেতাকর্মীরা মেয়রের কাছাকাছি যেতে পারেননি। এ নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ রয়েছে। বিষয়টি আমরা স্থায়ী কমিটিকে জানিয়ে এসেছি।’ তিনি বলেন, বিএনপি মেয়র প্রার্থীর নাম আজ-কালের মধ্যে ঘোষণা করবে। এখনো দলের শীর্ষ মহল প্রার্থী নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। তারা যা ভালো মনে করবেন তাই করবেন। তাদের সিদ্ধান্তের পক্ষে সিলেট বিএনপির নেতারাও ঐক্যবদ্ধ থাকবেন বলে জানান তিনি।