বাংলারজমিন

দোহারে পুলিশ পাহারায় পাঠদান

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি

২৪ জুন ২০১৮, রবিবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন

দোহার নারিশা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিতের ঘটনার তিন মাসের মাথায় ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠে প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. আজিম খান দুই মাসের ছুটি কাটিয়ে বিদ্যালয়ে যোগদানের জন্য প্রবেশের চেষ্টা করলে তাকে প্রতিষ্ঠানটির মাঠেই বাধা দেয় অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা। খবর পেয়ে দোহার থানা পুলিশ ও দোহার শাইনপুকুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। একপর্যায়ে পুলিশের সামনেই অভিভাবক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিম খানকে ধাক্কা দিতে দিতে বিদ্যালয়ের বাইরে নিয়ে যায়।
প্রধান শিক্ষক আজিম খান বলেন, আমি গত দুই মাস আগে বিদ্যালয় থেকে কোনো এক কারণে ছুটি নেই, আজ ছুটি কাটিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে পরিচালনা পরিষদের লোকজন আমাকে আমার কক্ষে প্রবেশ করতে দেয়নি। এমনকি তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে। এদিকে নারিশা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুনা আক্তার বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষক আজিম খান স্যার আমাদের শরীরে হাত দিয়ে মারধর করে। তাই তিনি এই স্কুলে থাকলে আমরা সবাই স্কুল ছেড়ে চলে যাব। একই কথা বলেন, ১০ম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন। বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী সামন্ত বৃষ্টির অভিভাবক বলেন, এই ধরনের নির্লজ্জ শিক্ষক আমরা আর কোনদিন দেখিনি। তাই তাকে স্কুল থেকে সরে যেতে হবে। সে থাকলে আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে অন্যত্র চলে যাব।
এলাকাবাসীরও দাবি শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত একটি পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে এই শিক্ষক সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি নুরুল হক বেপারী বলেন, দুর্নীতিবাজ ও অযোগ্য প্রধান শিক্ষক এই প্রতিষ্ঠানে থাকলে আমাদের সন্তানরা সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। তাই তাকে এ প্রতিষ্ঠানে কোনোভাবে থাকতে দেয়া হবে না। দোহার শাইনপুকুর তদন্ত কেন্দ্রের তদন্ত কর্মকর্তা এমারত হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে তিন মাস আগে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক লাঞ্ছিত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত গোটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তারই ধারাবাহিকতায় গতকালও একটি ঘটনা ঘটেছে। যা আমরা এসে হস্তক্ষেপ করায় তেমন বড় ঘটনার জন্ম হয়নি। ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বাইরে বেরিয়ে আসলে পরিচালনা পরিষদের হস্তক্ষেপে তারা ক্লাসে ফিরে গেলেও পুলিশ পাহারায় পরে ক্লাস চলে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৫শে মার্চ সকালে বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির নোমান নামের এক শিক্ষার্থীকে প্রধান শিক্ষক বেদম প্রহার করে অচেতন করে ফেলে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জেরেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে আসছিল।

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status