অনলাইন
খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা: রিজভী
স্টাফ রিপোর্টার
২২ জুন ২০১৮, শুক্রবার, ৯:২০ পূর্বাহ্ন
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের বরাত দিয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দিনের পর দিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় খালেদা জিয়ার মস্তিষ্কে রক্তরণ বা পূর্ণাঙ্গ স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. এফএম সিদ্দিকীর বরাত দিয়ে যে শঙ্কার কথা প্রকাশ পেয়েছে আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যম বিবিসির একটি প্রতিবেদনে। আজ দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, আমরা বার বার খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি করে আসছি। কেন তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চান তাও বিস্তারিতভাবে আমরা দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করেছি। আমার বার বার বলেছি পিজি বা সিএমএইচে দেশনেত্রীর প্রকৃত চিকিৎসা হবে না। কারণ সেখানে ডপলার টেস্ট এবং বিশেষ ধরনের এমআরআই-এর সুবিধা নেই। আছে শুধু ইউনাইটেডে। চিকিৎসকের বক্তব্যেও সেটি পরিস্কার হলো। তিনি বলেন, সরকার ও কারার্কতৃপক্ষ কারাবিধির দোহাই দিয়ে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করছেন। তিনি যাতে প্রকৃত চিকিৎসা না পেয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েন সেজন্যই এত বাধা ও আপত্তি সরকারের। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী থাকাকালীন স্কয়ার হাসপাতালে তিনবার চিকিৎসা নিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম আব্দুল জলিল ল্যাবএইডে, বর্তমান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ল্যাবএইডে, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম বারডেমে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাহলে এ সমস্ত আওয়ামী লীগ নেতা কোন কারাবিধানের বলে উল্লেখিত বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন? দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যেভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাতে দেশবাসীর নিকট এটা ক্রামাগতভাবে পরিস্কার হয়ে গেছে সরকার তাঁর জীবন নিয়ে দুরভীসন্ধিমূলক খেলায় মেতে উঠেছে। একজন সঙ্কটাপন্ন রোগীকে চিকিৎসা না দেয়া চরম মানবধিকার লঙ্ঘন। রিজভী বলেন, মানবাধিকার তদন্তে জাতিসঙ্ঘের অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে না বাংলাদেশ। জাতিসঙ্ঘের এ ধরনের অন্তত দশটি অনুরোধে বাংলাদেশ সাড়া দেয়নি। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনার জিয়াদ রাদ আল হুসেইন এ কথা জানান। জিয়াদ রাদ আল হুসেইন নাগরিক সমাজের কাজ করার ক্ষেত্র সঙ্কুচিত হওয়ার উদ্বেগ প্রকাশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিচারবহির্ভূত কর্মকান্ড বন্ধের দাবি জানান। তিনি বলেন বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। দেশটিজুড়ে বিচারবর্হিভূত হত্যা চলছেই। জাতি সংঘের পক্ষ থেকে অবিলম্বে বিচারবর্হিভুত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। রিজভী বলেন, নিশ্চিত ভরাডুবির ভয়ে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বিএনপি ও বিরোধী দলের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীদের গণগ্রেফতার ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। গত কয়েকদিনে বেশ কিছু নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের পর এখন নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা-কর্মীরা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। খুলনায় পুলিশের ভোট সন্ত্রাসে আওয়ামী সরকার দারুণ উল্লসিত ও আনন্দিত। সুতরাং গাজীপুরেও তারা খুলনা মার্কা নির্বাচনের জন্যই পুলিশকে দিয়ে ধানের শীষের সমর্থক ভোটারদেরকে এলকা ছাড়া করে সিটি কর্পোলেশন এলাকাকে শ্মশানভুমিতে পরিণত করা হচ্ছে-যাতে ভোটারবিহীন নির্বাচন সুচারোভাবে সম্পন্ন করা যায়।