ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০১৯
‘এত প্রাণবন্ত মস্কো আগে দেখা যায়নি’
২২ জুন ২০১৮, শুক্রবার, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন
বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলো রাশিয়া। নক আউট পর্বে যোগ্যতা অর্জন করলো মিশরকে হারিয়ে। ১৯৮৬ সালের পরে এই প্রথমবার। প্রথম সোভিয়েত জমানার পরেও।
দু’সপ্তাহ আগেই রাশিয়ার বিশ্বকাপ অভিযানে সাফল্য নিয়ে প্রবল সন্দেহ ছিল দেশের মানুষের। আজ তারাই গর্বিত। এটাই ফুটবল। একটা জয় সবকিছু পাল্টে দিতে পারে। বুধবার রাতে রাশিয়ার সমস্ত আয়োজক শহর তাই প্রত্যাশার বোঝা কাটিয়ে উৎসবে মেতেছিল। যে উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন বিদেশি সমর্থকরাও। বিশ্বকাপে রাশিয়ার আতিথেয়তায় সবাই খুব খুশি। শেষবার মস্কোকে কবে এত খোলামেলা, প্রাণবন্ত দেখেছি মনে করতে পারছি না। আশা করি বিশ্বকাপের পরেও এই ছবিটা বজায় থাকবে।
কোচ স্ট্যানিসলাস চেরিশভ একটা দল হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিল রাশিয়াকে। সেই লক্ষ্যে তিনি সফল। ফুলবলাররা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে লড়াই করছেন। ড্রেসিংরুমের পরিবেশও দারুণ। সালাহ, সুয়ারেজ বা কাভানির মতো বড় মাপের ফুটবলার না থাকা একটা দলের জন্য যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু এর পরে কী? রাশিয়া বিশ্বকাপে কতদূর যেতে পারে প্রশ্নটা এড়িয়ে যাচ্ছেন প্রধান কোচ। রাশিয়া এর পরে মুখোমুখি উরুগুয়ের। যারা নিশ্চিতভাবেই সৌদি আরব বা মিশরের চেয়ে শক্তিশালী। হয়তো রাশিয়া দল এবারের বিশ্বকাপে প্রথম কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে চলেছে এই ম্যাচেই।
এবার কিছু কথা বলা যাক দিনিস চেরিশেভকে নিয়ে। যে তিনটে গোল করে ফেললো দুটো ম্যাচে। পাশাপাশি দুটো ম্যাচেই সেরা ফুটবলারও ডেনিস। ও কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ একাডেমি থেকে উঠে এসেছে। ছোটবেলায় স্পেনেই খেলতো দিনিস। ‘‘রাশিয়ান হলেও স্প্যানিশ ফুটবলের শিক্ষা রয়েছে ওর মধ্যে।’’ বলছিলেন দিনিসের বাবা প্রাক্তন রুশ জাতীয় দলের ফুটবলার দিমিত্রি চেরিশেভ। তিনি আরো বলেন, ‘‘দারুণ মিশেল, তাই না?’’
দিনিস এক সময় রাশিয়ান ফুটবলের উঠতি তারকা ছিলেন। কিন্তু ক্রমাগত চোট সমস্যায় ভোগার ফলে বড় টুর্নামেন্টে খেলার স্বপ্ন বহুবার ভেঙে গিয়েছিল ওর। সেই কঠিন পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে শেষ পর্যন্ত দিনিস ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ দারুণ ভাবে উপভোগ করতে পারছেন।
তবে যতই মাতামাতি হোক, রাশিয়ার বেশির ভাগ মানুষ, বিশেষ করে যারা ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত তারা কিন্তু মনে করে একটা সাফল্যে সব পাল্টে যায় না। ফুটবল বিশ্বে এখনো কিন্তু আমরা প্রথম সারির দল নই। অবশ্য রাশিয়া প্রধান লক্ষ্য অর্জন করার দিকে এগিয়ে যেতেই পারে। নিজের দেশে আয়োজিত বিশ্বকাপ উৎসবে আমরাও কোনো অংশে কম যাই না!
বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচগুলো এখনো শেষ হয়নি, তবে একটা ব্যাপার কিন্তু ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করার মতো। ফেভারিট দলগুলো প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল পাচ্ছে না। জার্মানি হেরেছে প্রথম ম্যাচ। ব্রাজিল ড্র করেছে। তবে সবচেয়ে বেশি হতাশ প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার খেলা দেখে। আইসল্যান্ডকে ওরা হারাতে পারলো না। আগুয়েরোর গোল করে এগিয়ে দেয়া। ফিনবোগাসনের গোল শোধ করা। তারপর মেসির পেনাল্টি ফস্কানো। এসব দেখে একটা কথাই বলা যায়, দুর্ভাগ্য।
সবচেয়ে চিন্তার কথা হলো আর্জেন্টিনা দলের সে দিনের খেলা বুঝিয়ে দিয়েছে, মাঠে মেসির কোনো দিন খারাপ গেলে দলের কোনো বিকল্প পরিকল্পনা নেই। মেসি আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় শক্তি। আবার মেসিই ওদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হয়ে উঠতে পারে।
(লেখক রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা ‘তাস’-এর নামি সাংবাদিক)
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
দু’সপ্তাহ আগেই রাশিয়ার বিশ্বকাপ অভিযানে সাফল্য নিয়ে প্রবল সন্দেহ ছিল দেশের মানুষের। আজ তারাই গর্বিত। এটাই ফুটবল। একটা জয় সবকিছু পাল্টে দিতে পারে। বুধবার রাতে রাশিয়ার সমস্ত আয়োজক শহর তাই প্রত্যাশার বোঝা কাটিয়ে উৎসবে মেতেছিল। যে উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন বিদেশি সমর্থকরাও। বিশ্বকাপে রাশিয়ার আতিথেয়তায় সবাই খুব খুশি। শেষবার মস্কোকে কবে এত খোলামেলা, প্রাণবন্ত দেখেছি মনে করতে পারছি না। আশা করি বিশ্বকাপের পরেও এই ছবিটা বজায় থাকবে।
কোচ স্ট্যানিসলাস চেরিশভ একটা দল হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিল রাশিয়াকে। সেই লক্ষ্যে তিনি সফল। ফুলবলাররা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে লড়াই করছেন। ড্রেসিংরুমের পরিবেশও দারুণ। সালাহ, সুয়ারেজ বা কাভানির মতো বড় মাপের ফুটবলার না থাকা একটা দলের জন্য যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু এর পরে কী? রাশিয়া বিশ্বকাপে কতদূর যেতে পারে প্রশ্নটা এড়িয়ে যাচ্ছেন প্রধান কোচ। রাশিয়া এর পরে মুখোমুখি উরুগুয়ের। যারা নিশ্চিতভাবেই সৌদি আরব বা মিশরের চেয়ে শক্তিশালী। হয়তো রাশিয়া দল এবারের বিশ্বকাপে প্রথম কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে চলেছে এই ম্যাচেই।
এবার কিছু কথা বলা যাক দিনিস চেরিশেভকে নিয়ে। যে তিনটে গোল করে ফেললো দুটো ম্যাচে। পাশাপাশি দুটো ম্যাচেই সেরা ফুটবলারও ডেনিস। ও কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ একাডেমি থেকে উঠে এসেছে। ছোটবেলায় স্পেনেই খেলতো দিনিস। ‘‘রাশিয়ান হলেও স্প্যানিশ ফুটবলের শিক্ষা রয়েছে ওর মধ্যে।’’ বলছিলেন দিনিসের বাবা প্রাক্তন রুশ জাতীয় দলের ফুটবলার দিমিত্রি চেরিশেভ। তিনি আরো বলেন, ‘‘দারুণ মিশেল, তাই না?’’
দিনিস এক সময় রাশিয়ান ফুটবলের উঠতি তারকা ছিলেন। কিন্তু ক্রমাগত চোট সমস্যায় ভোগার ফলে বড় টুর্নামেন্টে খেলার স্বপ্ন বহুবার ভেঙে গিয়েছিল ওর। সেই কঠিন পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে শেষ পর্যন্ত দিনিস ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ দারুণ ভাবে উপভোগ করতে পারছেন।
তবে যতই মাতামাতি হোক, রাশিয়ার বেশির ভাগ মানুষ, বিশেষ করে যারা ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত তারা কিন্তু মনে করে একটা সাফল্যে সব পাল্টে যায় না। ফুটবল বিশ্বে এখনো কিন্তু আমরা প্রথম সারির দল নই। অবশ্য রাশিয়া প্রধান লক্ষ্য অর্জন করার দিকে এগিয়ে যেতেই পারে। নিজের দেশে আয়োজিত বিশ্বকাপ উৎসবে আমরাও কোনো অংশে কম যাই না!
বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচগুলো এখনো শেষ হয়নি, তবে একটা ব্যাপার কিন্তু ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করার মতো। ফেভারিট দলগুলো প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল পাচ্ছে না। জার্মানি হেরেছে প্রথম ম্যাচ। ব্রাজিল ড্র করেছে। তবে সবচেয়ে বেশি হতাশ প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার খেলা দেখে। আইসল্যান্ডকে ওরা হারাতে পারলো না। আগুয়েরোর গোল করে এগিয়ে দেয়া। ফিনবোগাসনের গোল শোধ করা। তারপর মেসির পেনাল্টি ফস্কানো। এসব দেখে একটা কথাই বলা যায়, দুর্ভাগ্য।
সবচেয়ে চিন্তার কথা হলো আর্জেন্টিনা দলের সে দিনের খেলা বুঝিয়ে দিয়েছে, মাঠে মেসির কোনো দিন খারাপ গেলে দলের কোনো বিকল্প পরিকল্পনা নেই। মেসি আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় শক্তি। আবার মেসিই ওদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হয়ে উঠতে পারে।
(লেখক রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা ‘তাস’-এর নামি সাংবাদিক)
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা