খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য উপযুক্ত সময়ে কার্যকর কর্মসূচি আসবে: মওদুদ

কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বিএনপি। শিগগিরই কার্যকর কর্মসূচির ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং তার জন্য প্রয়োজন হলে যে আন্দোলনের কর্মসূচি আমরা এতদিন দিয়ে এসেছি, সেটা আমাদেরকে পরিবর্তন করতে হবে। এমন কর্মসূচি দিতে হবে, যে কর্মসূচি কার্যকর কর্মসূচি হবে। যার মাধ্যমে আমরা তাকে মুক্ত করে আনতে পারবো। ঈদের সময় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে নিজের বাড়িতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে অবরুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদ জানাতে গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, কেবল ওই নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো স্বৈরাচারী সরকারকে পৃথিবীর কোথাও অপসারণ করা সম্ভবপর হয়নি। সুতরাং এদেশেও এটা সম্ভবপর হবে না। এই উপলব্ধি থেকে উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কর্মসূচি দেয়া হবে। সেই কর্মসূচি সফল হবে এবং দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রবীণ এ নেতা বলেন, সরকার বিএনপিকে মাঠে নামতে দেবে না, রাস্তায় নামতে দেবে না। এটাই তাদের উদ্দেশ্য। আমরা বলতে চাই, এর জবাব আমরা ইনশাআল্লাহ দেবো। আর অল্পকিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, যে ধরনের আন্দোলনে অতীতে ১৯৬৯ এবং ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে। সেই ধরনের আন্দোলনই বাংলাদেশে হবে। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে নোয়াখালীর নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ হওয়া দলীয় কোন্দলে নয়, হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ইশারায়। কেবল নোয়াখালী নয়, সারা দেশেই বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর চলছে দমন-পীড়ন। তবে এ অবস্থা আর বেশিদিন চলবে না। ঈদের দিনের দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে না দেয়া ও বড় মসজিদে ঈদের জামাতে নামাজ পড়তে বাধা পাওয়ার অভিযোগ করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, পুলিশ আমাকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো। আমার বাড়ির সামনে একটি ট্রাক আড়াআড়ি করে রেখে দিয়েছিল। আজকে ওবায়দুল কাদেরের পায়ের নিচে মাটি নেই। তিনি এখন মিথ্যা কথা বলছেন। ঈদের দিনের ঘটনার পেছনে ওবায়দুল কাদেরই দায়ী। পুলিশই আমাকে বলেছে, ‘স্যার আমাদেরকে কোনো দোষ দিয়েন না। আমরা উপরের হুকুমে করছি’। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, বর্ষীয়ান নেতা মওদুদ আহমদকে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশেই। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রাজনীতির সহবস্থানের ঐতিহ্য নষ্ট করেছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকতউল্লাহ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবিএম আশরাফউদ্দিন নিজান, রেহানা আখতার রানু বক্তব্য দেন। এ সময় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সঙ্গে নোয়াখালীর সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে যাওয়ার আগে খালেদা জিয়া নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বলেছিলেন দলীয় নেতাদের। এরপর কোনো কঠোর কর্মসূচি দেয়নি বিএনপি। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত খালেদার কারামুক্তি সরকার ঠেকিয়ে রাখবে এমন আশঙ্কা থেকে এখন জোরালো কর্মসূচি দেয়ার কথা বলছেন বিএনপির নেতারা। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করতেও আন্দোলনের কথা বলছেন তারা।॥