দেশ বিদেশ
সত্যিকারের শান্তি নিয়ে উত্তর কোরিয়া-চীন আলোচনা
মানবজমিন ডেস্ক
২১ জুন ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
চীনের সঙ্গে সত্যিকার শান্তি ও পারমাণবিক অস্ত্রমুক্তকরণ নিয়ে আলোচনা করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। চীন সফরে গিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে কথা দিলেন। বললেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব, ঐক্য ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। সেখান থেকে তাদেরকে কেউ থামাতে পারবে না। এর মধ্য দিয়ে উত্তর কোরিয়া তাদের একমাত্র মিত্র চীনের কাছে আনুগত্য প্রকাশ করলো। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে সাক্ষাতের কয়েকদিন পরই কিম জং উন চীন সফরে যান মঙ্গলবার। তার দু’দিনের এ সফর শেষ হয় গতকাল বুধবার। বার্তা সংস্থা এএফপি এ নিয়ে লিখেছে, এ বছর এ নিয়ে তৃতীয়বার চীন সফর করলেন কিম। তবে সর্বশেষ সফরে তিনি পিয়ংইয়ংকে নিশ্চিত করেছেন যে, তারা তাদের ইন্টারেস্ট বা স্বার্থকে অবহেলা করবে না, যদিও ট্রাম্পের সঙ্গে তার একটি কূটনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে। কিম জং উনের এই তৎপরতাকে বিশ্লেষকরা দেখছেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা হিসেবে। তাদের মতে কিম চাইছেন প্রত্যেকের সঙ্গে স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে। তিনি চাইলে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ডাকে সাড়া দিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু নিকটবর্তী দেশ চীন এবং তাদের একমাত্র ঘনিষ্ঠ মিত্র এ দেশটি। উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতিতে চীনের বড় ভূমিকা রয়েছে। তা ছাড়া উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক রক্ষাকারী হিসেবেও দেখা হয় চীনকে। কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চল পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত হোক এমনটা দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দু’দেশই। তবে তা নিয়ে বেইজিংয়ে এক রকম উদ্বেগ আছে। তারা মনে করে তাদের প্রচেষ্টায়, তাদের উদ্যোগকে ব্যবহার করে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ং একে অন্যের খুব কাছাকাছি চলে যাবে। তাতে চীন পিছিয়ে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়। তারা মনে করে এমনটা হলে ওই অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে ঝুঁকিতে পড়তে পারে চীন। সিঙ্গাপুরে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ১২ই জুন যে সামিট হলো সেখানে উপস্থিত ছিল না চীন। তবে তারা কিম জং উনকে নিতে একটি বিমান পাঠিয়েছে। এতে পরিষ্কার হয় যে, উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক পালাবদলে প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে রয়ে গেছে চীন। শীতল যুদ্ধের সময় থেকেই চীন ও উত্তর কোরিয়া একে অন্যের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তারা তখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জাতিসংঘ বাহিনী ও ১৯৫০-১৯৫৩ সাল পর্যন্ত কোরিয়া যুদ্ধে যুদ্ধ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে। তবে পিয়ংইয়ং যে পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে তাতে সম্পর্কে যে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে তা মেরামত করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে উভয় পক্ষই। কিম জং উন অনেক দিন ধরে ক্ষমতায় বসে আছেন। তবে এবারই প্রথম তিনি বিদেশ সফরে বের হয়েছেন। মার্চে প্রথমবার বিদেশ সফর হিসেবে বেছে নেন বেইজিংকে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দালিয়ান শহরে সাক্ষাৎ করেন মে মাসে। তৃতীয়বার তিনি মঙ্গলবার চীনে যান। বুধবার তারা আলোচনা করেন ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক সিঙ্গাপুর সামিট নিয়ে।