দেশ বিদেশ

যে কারণে সরাসরি সম্প্রচারে কাঁদলেন টিভি’র নারী সাংবাদিক

মানবজমিন ডেস্ক

২১ জুন ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

সরাসরি সম্প্রচারে খবর পড়তে এসে কাঁদলেন টিভি সাংবাদিক র‌্যাচেল ম্যাডো। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একজন টিভি উপস্থাপিকা ও রাজনৈতিক ভাষ্যকারও। যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতির অধীনে শিশু ও ছোট ছোট বাচ্চাদের তাদের মা-বাবা থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে এমএসএনবিসি টেলিভিশনে খবর জানাচ্ছিলেন র‌্যাচেল।  ব্রেকিং নিউজ হিসেবে তিনি ওই চ্যানেলে খবর পড়ছিলেন। একপর্যায়ে তাকে দেখা যায় তিনি নিজেকে সংবরণ করতে পারছেন না। অঝোরে কেঁদে ফেলেছেন। তখন মাথা নিচু করে নিজে আত্মস্থ হওয়ার চেষ্টা করেন। আবার খবর পড়ার চেষ্টা করেন। আবার কাঁদেন। তিনি স্বাভাবিকভাবে পড়তে পারলেন না যে, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পিতামাতার কাছ থেকে যেসব শিশুকে আলাদা করে রাখা হয়েছে তাদের কি অবস্থা। বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের আটকে রাখা হয়েছে। এসব ক্যাম্পকে বন্দিশিবির হিসেবেও আখ্যায়িত করা হচ্ছে। সেখানে শিশুদের আর্তচিৎকারের খবর ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। র‌্যাচেল এসব নিয়ে খবর পড়তে গিয়ে কয়েকবার চেষ্টা করেন। কিন্তু আড়ষ্ঠ হয়ে আসে তার কণ্ঠ। ফলে এ খবরকে তিনি বাদ দিতে বাধ্য হন। বলে দেন, ‘দুঃখিত। আমি মনে করি এই খবরটি আমাকে বাদ রাখতে হচ্ছে’। সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা কাট করে ঘুরিয়ে ধরা হয় অন্য একজন রিপোর্টারের দিকে। পরে এ ঘটনার জন্য টুইটারে দুঃখ প্রকাশ করেছেন র‌্যাচেল ম্যাডো। ওই মুহূর্তে তিনি হারিয়ে গিয়েছিলেন বলে দুঃখ জানান। তিনি জানান, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করতে চাননি। র‌্যাচেল ম্যাডোর ভিতর জেগে ওঠা মানবিকতার প্রশংসা করেছেন অন্য ধারাভাষ্যকাররা। একজন ভাষ্যকার তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি জবাবে টুইট করেছেন। লিখেছেন, র‌্যাচেল এর জন্য ক্ষমা চেয়ো না । তোমার একটা চমৎকার সুন্দর মানসিকতা আছে। তোমার সাহস ও সহানুভূতির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা। তুমি যে সহমর্মিতা দেখিয়েছো তা দুর্বলতা নয়, শক্তি। আরেকজন লিখেছেন, সহানুভূতিশীল একজন মানুষ হয়ে তুমি ক্ষমা চাইতে পারো না। এমন মানবিকতা এখনকার দিনে খুব বিরল। আরো একজন তাকে সমর্থন করে লিখেছেন, র‌্যাচেল আমরাও তোমার মতো একইভাবে অনুভব করি। আমি জুতায় ফিতা লাগানোর জন্য প্রস্তুত। তারপর ওই সব আটকে পড়া শিশুদের একবার আলিঙ্গন করতে এবং তাদেরকে পিতামাতাকে খুঁজে নিতে সহায়তা করতে টেক্সাস যেতে প্রস্তুত আমি। ওদিকে বার্তা সংস্থা এপি’র রিপোর্টে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা শিশু ও ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে জোর করে তাদের পিতামাতার কাছ থেকে আলাদা করে দিচ্ছে, যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন। এ ঘটনা ঘটছে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে। সেখান থেকে আলাদা করে ওইসব বাচ্চাকে রাখা হচ্ছে টেক্সাসের দক্ষিণে কমপক্ষে তিনটি আশ্রয় শিবিরে। এর মধ্যে রিও গ্র্যান্ডে ভ্যালি আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেছেন কিছু আইনজীবী ও চিকিৎসাদানকারী টিম। তারা বলেছেন, ওই আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা শিশুরা বিভিন্ন রুমে আটকে আছে। তাদের বয়স এখনও স্কুলে যাওয়ার মতো নয়। তারা অঝোরে কাঁদছে। এতে এক ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ওদিকে হিউজটনে অভিবাসী শিশুদের জন্য চতুর্থ আরো একটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা করেছে সরকার। তবে ওই শহরের রাজনৈতিক নেতারা এমন উদ্যোগের নিন্দা করেছেন মঙ্গলবার। ওদিকে মে মাসের শুরুর দিকে হোয়াইট হাউস থেকে অভিবাসন নীতিতে শূন্য সহনশীলতা দেখানোর ঘোষণা দেয়া হয়। তারপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধভাবে প্রবেশ করা পিতামাতার কাছ থেকে আলাদা করা হয়েছে কমপক্ষে ২৩০০ শিশুকে। এর ফলে যে অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে তা হলো, নতুন করে যে বিপুল পরিমাণ শিশু প্রবেশ করছে তাদের দায়ভার টানতে হবে সরকারকেই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status