দেশ বিদেশ

ইসরাইল যেভাবে পুরো ফিলিস্তিন দখল করে

মানবজমিন ডেস্ক

১৯ জুন ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

অর্ধশতাধিক বছর পূর্বে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম, গাজা উপত্যকা, সিরিয়ার গোলান হাইটস ও মিসরের সিনাই উপদ্বীপের ভূ-খণ্ড দখল করে ইহুদিরা বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছিল। তারা এই কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করে মাত্র ছয় দিনে। ১৯৬৭ সালে এ ভূ-খণ্ডগুলো দখল করে ইসরাইল রাষ্ট্রের ভিত্তি আরো মজবুত করে। এ সময় মিসর, জর্ডান ও সিরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয় ইসরাইল। এই যুদ্ধ ১৯৬৭ সালের যুদ্ধ বা জুনের যুদ্ধ বলেও পরিচিত। এতে ইসরাইল প্রতিবেশী আরব দেশগুলোকে পরাজিত করে। ফিলিস্তিনিদের জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত করে ইসরাইল রাষ্ট্রের পোক্ত ভিত্তি তৈরি করে। পরের বছর থেকে ফিলিস্তিনিরা জুন মাসের পাঁচ তারিখে ‘নাকসা’ বা পরাজয় হিসেবে স্মরণ করে।
নাকসা যুদ্ধের পটভূমি তৈরি হয়েছিল ১৯ বছর আগে। যখন ১৯৪৮ সালে সহিংসতার মাধ্যমে ইসরাইল রাষ্ট্র দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়। ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে নিজেদের জন্য স্বতন্ত্র দেশ গঠন করে ইহুদিরা। এজন্য প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়। তাদের গ্রামগুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়। ইসরাইল রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর আরব দেশের সেনারা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে নামে। কিন্তু ইহুদিরা পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম, গাজা উপত্যকা, সিরিয়ার গোলান হাইটস ও মিসরের সিনাই উপদ্বীপের প্রায় ৭৮ শতাংশ দখল করে নেয়। বাকি ২২ শতাংশে মিসর ও জর্ডান নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হয়। পরে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরাইল ওই অঞ্চল পুরোটাই দখল করে নেয়। পাশাপাশি মিসর ও সিরিয়ারও কিছু অংশে নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করে। যুদ্ধ শেষে ইসরাইল আরো তিন লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে।
কেন যুদ্ধ বেঁধেছিল?: ১৯৪৮ সালের ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সিরিয়া ও জর্ডানের সীমান্তে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে প্রায়ই সংঘর্ষ হতো। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থী তাদের পুরনো আবাসস্থলে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারা ইসরাইলের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নিজেদের জন্মভূমিতে যাওয়ার চেষ্টা করে। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ইসরাইলের সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে গুলি করে হত্যা করে ইহুদিরা। ১৯৫৩ সালে ইসরাইল পশ্চিম তীরে সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যা চালায়। ইসরায়েলি সেনারা সেখানকার কিবিয়া গ্রামের ৪৫টি বাড়ি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়। এতে একই দিনে প্রায় ৬৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়।
কয়েক বছর পর ১৯৫৬ সালে সুয়েজ খাল নিয়ে সংকট তৈরি হয়। মিসরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দেল নাসের সুয়েজ খাল জাতীয়করণ করেন। তিনি বৃটিশ ও ফরাসি কোম্পানির কাছ থেকে সুয়েজের নেতৃত্ব কেড়ে নেন। এ নিয়ে আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধ বাঁধে। ফ্রান্স ও বৃটেনের সহায়তায় ইসরাইল মিসর আক্রমণ করে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল মিসরের প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দেল নাসেরকে উৎখাত করা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের চাপের মুখে ইসরাইল, বৃটেন ও ফ্রান্স পিছু হটতে বাধ্য হয়। এক দশক পরে ইসরাইল-মিসর সীমান্তে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা হয়। ১৯৫০ ও ১৯৬০ সালের মধ্যভাগে ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ করতে শুরু করে। এই প্রতিরোধ ‘ফেদায়েন আন্দোলন’ নামে পরিচিতি পায়। তারা ফিলিস্তিনিদের হারানো ভূ-খণ্ড উদ্ধারে প্রচেষ্টা চালায়।
পরে ইসরাইল পশ্চিম তীরে আস-সামু গ্রামে সামরিক অভিযান চালায়। কিন্তু এ অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে ফিলিস্তিনিরা। তারা কয়েকজন ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করে। প্রতিশোধ নিতে ইসরাইল পুরো গ্রাম ঘিরে ফেলে। সেখানকার কয়েক ডজনবাড়ি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়। এতে নিহত হয় ১৮ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয় আরো শতাধিক মানুষ। এদিকে, জর্ডান নদীর পানি ব্যবহার ও সীমান্তে কৃষিকাজকে কেন্দ্র করে সিরিয়া ও ইসরাইলের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। ১৯৬৭ সালে ১৩ই মে সোভিয়েত ইউনিয়ন মিসরকে সতর্কবার্তা দেয় যে, সিরিয়ায় আক্রমণ করার জন্য সীমান্তে সেনা জড়ো করছে ইসরাইল। ১৯৫৫ সালে স্বাক্ষরিত মিসর ও সিরিয়ার প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী, আক্রান্ত হলে দুই দেশ পরস্পরের নিরাপত্তা বিধানে অঙ্গীকারবদ্ধ। ফলে সিরিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয় মিসর। দেশটি সীমান্তবর্তী সিনাই উপত্যকা থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীকে সরিয়ে সেখানে নিজেদের সেনা মোতায়েন করে। কয়েকদিন পরে প্রেসিডেন্ট আব্দেল নাসের লোহিত সাগর দিয়ে ইসরাইলের পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেন। মে মাসের শেষের দিকে মিসর ও জর্ডানের মধ্যেও একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যাতে জর্ডানের সৈন্যরা মিসরের নেতৃত্বে যুদ্ধ করার সুযোগ লাভ করে। পরে ইরাকও এই জোটে যোগ দেয়।
৫ই জুন ভোরে ইসরাইল আকস্মিকভাবে মিসরের বিমান ঘাঁটিতে হামলা করে ঘাঁটিটি পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। এর মধ্য দিয়ে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠে। তবে ঠিক কি কারণে ইসরাইল সর্বাত্মকভাবে হামলা করলো, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন পুরোপুরি দখল করতে পারেনি ইসরাইল। সে ইচ্ছা পূর্ণ করতেই তারা ৫ই জুন হামলা চালায়। কেননা তখন ইসরাইলের মন্ত্রী ইগাল অ্যালোন লিখেছিলেন, নতুন বছরে আমাদের অবশ্যই স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরনো ত্রুটি এড়িয়ে চলতে হবে। অবশ্যই পুরোপুরি বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত, ইসরাইলের ভূ-খণ্ড পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।
যুদ্ধ যেভাবে ছড়িয়ে পড়লো: সিনাই ও সুয়েজে মিসরের বিমান ঘাঁটিতে চালানো হামলা দেশটির বিমান বাহিনীর সক্ষমতা প্রায় ৯০ শতাংশ ধ্বংস করে দেয়। একই সঙ্গে যুদ্ধে ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। একই দিনে ইসরাইলের সেনারা গাজা উপত্যকা ও সিনাই উপদ্বীপে আক্রমণ চালায়। পাশাপাশি সিরিয়ার বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ শুরু করে। পরের দিন জর্ডান নিয়ন্ত্রিত পূর্ব জেরুজালেমে জর্ডানের সেনাদের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধ বাঁধে। ৭ই জুন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কমান্ডার মোশে হায়ান তার সেনাদের জেরুজালেম ‘ওল্ডসিটিতে’ পুরোপুরি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় জাতিসংঘ বিবাদমান সব পক্ষের প্রতি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়। কিন্তু ইসরাইল ফিলিস্তিনে তাদের অভিযান সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির নির্দেশ বিলম্বিত করার প্রচেষ্টা চালায়। নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিতে নিযুক্ত ইসরাইলের কূটনীতিকরা যুদ্ধবিরতি বিলম্ব করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে দর কষাকষির মধ্যেই ৭ই জুন দিনের মধ্যভাগে জর্ডানের কাছ থেকে ওল্ডসিটির কর্তৃত্ব ছিনিয়ে নেয় ইসরায়েলি বাহিনী। পরের দিন পশ্চিম তীরের নাবলুস, বেথেলহাম, হেবরন ও জেরিকোশহর দখল করে ইসরাইল। এ সময় ইসরাইলের সেনারা জর্ডান নদীর ওপরে নির্মিত জর্ডান ও পশ্চিম তীরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী আব্দুল্লাহ এন্ড হোসেইন সেতু উড়িয়ে দেয়। ওল্ড সিটি দখলের পর ‘মরোক্কান কোয়ার্টারে’ বসবাসকারী প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনি পরিবারকে তাদের বাড়ি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। ‘ওয়েস্টার্ন ওয়ালে’ যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য ইসরাইলি বাহিনী ৭৭০ বছরের পুরনো ‘মরোক্কান কোয়ার্টার’ ধ্বংস করে দেয়। সেখানে ইহুদিরা ওয়েস্টার্ন ওয়াল প্লাজা নির্মাণ করে। পাশাপাশি ওয়েস্টার্ন ওয়ালের কর্তৃত্ব এককভাবে ইসরাইলের হাতে চলে যায়। উল্লেখ্য, ওয়েস্টার্ন ওয়াল মুসলিমদের কাছে ‘আল বুরাক ওয়াল’ নামে পরিচিত। পবিত্র মেরাজে গমন করার সময় মহানবী (সা.) এখান থেকেই স্বর্গীয় বাহন বোরাকে আরোহণ করেছিলেন। মুসলিম ও ইহুদি উভয় সম্প্রদায়ের কাছেই এটি তাৎপর্যপূর্ণ। এ ছাড়াও যুদ্ধের সময় আইজ্যাক রবিনের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি গ্রামগুলো গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। উৎখাত করা হয় প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনিকে। ৯ই জুন ইসরাইল সিরিয়ার গোলান হাইটসে আক্রমণ শুরু করে। পরের দিনই তা নিজেদের দখলে নেয়। এর ফলে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের সঙ্গে ইসরাইলের সীমান্তের দূরত্ব একেবারেই কমে যায়।
এমন অবস্থায় ৯ই জুন ইসরাইল ও মিসর যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে। আর সিরিয়ার সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১১ই জুন। এতে মধ্যস্থতা করে জাতিসংঘ। ফলে একটি যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের বেশিরভাগই জর্ডানে আশ্রয় নেয়।
ফিলিস্তিন, ইসরাইল ও আরব বিশ্বের ওপর যুদ্ধের প্রভাব: ছয় দিনের যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। অতি অল্প সময়ে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকায় ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনির ওপর ইসরাইল সরাসরি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। অন্যদিকে পূর্ব অনুমিত পরাজয়ে ফিলিস্তিনিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ইসরাইলকে প্রতিরোধ করতে সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে ওঠে। তারা শপথ নেয় ফিলিস্তিনের ভূ-খণ্ড ফিরিয়ে নেয়ার। আর ইসরায়েলিদের জন্য ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল একটি উৎসবের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তারা ওয়েস্টার্ন ওয়ালের কাছে জড়ো হয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানায়। তারা মনে করে, এই ‘হলি ল্যান্ড’ তাদের জন্যই নির্ধারিত। যুদ্ধের মাধ্যমে নিজেদের ভূ-খণ্ড আবারো ফিরে পেয়েছে তারা। এর পরে ইসরাইল ক্রমশ তার সীমানা বাড়াতে থাকে। ইহুদিরা ইসরাইলের সীমান্ত অতিক্রম করে পশ্চিম তীর ও গাজায় বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। যা ইসরাইল রাষ্ট্রের অংশ না। বিশেষ করে, ছয় দিনের যুদ্ধ ইহুদিদের মধ্যে ঔপনিবেশিক মনোভাব তৈরি করে। শান্তিপূর্ণভাবে ভূমি বিনিময়ের পরিবর্তে তারা ফিলিস্তিনিদের ভূ-খণ্ডে বসতি স্থাপন করে। আর এতে রাষ্ট্রীয় সহায়তা দেয় ইসরাইল। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় গোলান হাইটসে মাত্র ছয়টি ইহুদি বসতি ছিল। ১৯৭৩ সালের মধ্যে ইহুদি বসতির সংখ্য ১৭টিতে পৌঁছে।
দখলদারিত্বের পঞ্চাশ বছর: গত বছর এক প্রতিবেদনে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, পাঁচটি উপায়ে ফিলিস্তিনিদের  মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। সেগুলো হলো- বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নিগ্রহমূলক বন্দি, গাজা উপত্যকা অবরোধ, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের বাধা দেয়া ও অবৈধ দখলদারিত্ব বৃদ্ধি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক সারাহ লিহ উইটসন বলেন, বর্তমানে ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে ফিলিস্তিনিদের ওপর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে। তাদের ওপর এমন নির্যাতন চালানো হচ্ছে যা সংজ্ঞায়িত করা যায় না। বর্তমানে ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের অবৈধ বসতিগুলোতে কমপক্ষে ছয় লাখ ইহুদি বসবাস করছে। পশ্চিম তীরের উন্নত ভূ-খণ্ডগুলোর ৪০ শতাংশই ইসরাইলের দখলে। ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সুবিধার জন্য সেখানে উন্নত অবকাঠামো ও সড়ক তৈরি করা হয়েছে। এর পাশেই ফিলিস্তিনিরা জীবন হারানোর শঙ্কায় দিনাতিপাত করে। প্রায়ই তাদেরকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার শিকার হতে হয়। প্রকৃতপক্ষে ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে এমন পরিবেশ তৈরি করেছে, যাতে অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর ইহুদিদের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে। লন্ডন ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স বলেছে, একই জায়গায় দুই নীতি অনুসরণ করে ইসরাইল আন্তর্জাতিক বৈষম্য নিরোধ আইন লঙ্ঘন করেছে। মোটের ওপর, ফিলিস্তিনে তীব্র মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অসহনীয় জীবনব্যবস্থার জন্য ইসরাইলের দখলদারী মনোভাব দায়ী। যেখানে সুবিধাবঞ্চিতদের সামনে স্থানান্তরিত হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status