বিশ্বজমিন

ঘটনাক্রম: ট্রাম্প ও কিমের ঐতিহাসিক বৈঠক

১২ জুন ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন

কিম-ট্রাম্প বৈঠকের বিস্তারিত ঘটনাবলী

বৈঠকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি!

সিঙ্গাপুরে নেতাদের সাথে প্রায় সবসময়ই দেখা গেছে এই নারীকে। তিনি আসলে কে?

ছবির এই নারী কিম জং-আনের অনুবাদক ও দোভাষী। দুই নেতার বৈঠকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন এই নারী।

কী থাকতে পারে লাঞ্চে?

এপ্রিলের দুই কোরিয়ার নেতার বৈঠকের সব কিছুতেই ছিল কোরিয়ার ঐতিহ্য ও কৃষ্টির নিদর্শন। তবে এবারের বৈঠকে সেরকম কিছু দেখা যায়নি। মধ্যাহ্নভোজের মেন্যুতে বার্গার থাকতে বলে মনে করা হচ্ছে কারণ ২০১৬'তে নির্বাচনী প্রচারণার সময় মি. ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি মি. কিম'এর সাথে বার্গার খেতে চান।

বৈঠকের সমালোচনা!

ঐতিহাসিক এই বৈঠক নিয়ে অধিকাংশ মানুষ আগ্রহী হলেও সামলোচনাও করছেন অনেকে।

লেখক ভিক্টোরিয়া ব্রাউনওয়ার্থ তাঁর টুইটারে লিখেছেন, "যেই ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের সাথে করমর্দন করেননি ও জাস্টিন ট্রুডো'কে 'দুর্বল' বলেছেন, সেই ট্রাম্প নিজ পরিবারের মানুষ হত্যা করে এমন একজন একনায়কের সাথে বৈঠক করছেন।"

মিডিয়া সেন্টারে কফি'র ঘাটতি!

মিডিয়া সেন্টারে দেখা গেলো ভিন্নরকম এক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। দুই নেতার বৈঠকের খবর জানাতে ভোর থেকে জড়ো হওয়া গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য যথেষ্ট খাবার থাকলেও, পাওয়া যাচ্ছিল না পর্যাপ্ত কফি।

মুন জে-ইনের নির্ঘুম রাত

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন বলেছেন বৈঠকের আগে নির্ঘুম রাত কেটেছে তাঁর। তবে মি. মুন আশাপ্রকাশ করেছেন যে এই বৈঠক 'পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ, শান্তি ও দুই কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরীর ক্ষেত্রে নতুন যুগের সৃষ্টি করবে।'

অর্কিড কূটনীতি

সিঙ্গাপুরের জাতীয় ফুল অর্কিড হওয়ায়, বারাক ওবামা, নরেন্দ্র মোদী, শি জিনপিংসহ আরো অনেক বিশ্বনেতারা সিঙ্গাপুর সফরের পর তাঁদের নামে অর্কিডের নামকরণ করা হয়েছিল।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অথবা কিম জং-আনের নামেও কি তাহলে অর্কিডের নামকরণ করা হবে? অথবা ঐতিহাসিক বৈঠকের নামেও নামকরণ করা হতে পারে অর্কিডের।

কে উপস্থিত আছেন বৈঠকে?

আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ও সেনাপ্রধান জন কেলি। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনও রয়েছেন বৈঠকে, যার মন্তব্যের কারণে প্রায় পন্ড হতে বসেছিল বৈঠক।

উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে বৈঠকে যারা রয়েছেন:

কিম ইয়ং-চল: তাঁকে কিম জং-আনের 'ডানহাত' বলে মনে করা হয়। এমাসের শুরুতে বৈঠকের প্রস্তুতির জন্য ওয়াশিংটন গিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

রি ইয়ং-হো: উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ১৯৯০ এর দশকেও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন এই কূটনীতিক।

রি সু-ইয়ং: পিয়ংইয়ং'এর শীর্ষপর্যায়ের এই কর্মকর্তা এর আগে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।

ট্রাম্প: 'আমি সম্মানিত'

সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন দুই নেতা:

ডোনাল্ড ট্রাম্প: "আমরা নিশ্চিতভাবে অত্যন্ত গঠনমূলক ও খুবই সফল একটি আলোচনা সম্পন্ন করতে পারবো। এটি আমার জন্য সম্মানের এবং আমি নিশ্চিত যে আমাদের মধ্যে চমৎকার সুসম্পর্ক তৈরী হবে।"

কিম জং-আন: "এখানে আসা আমার জন্য সহজ ছিল না। আমাদের অতীতের বিশ্বাস ও ধ্যানধারণা এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু সেসব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়েই আমরা আজ এপর্যন্ত এসেছি।"

একান্ত আলাপ

ক্যাপেলা'র লাইব্রেরিতে একান্ত আলোচনা করতে যাচ্ছেন কিম ও ট্রাম্প।

বৈঠক শুরু হওয়ার আগে

আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক শুরু হওয়ার আগে আবারো করমর্দন করেন দুই নেতা।

বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় কী?

কোরিয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন ও সম্ভব হলে পিয়ংইয়ং' মার্কিন দূতাবাস স্থাপন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের কাঠামো নিয়ে আলোচনা হবে এই বৈঠকে। কথা হতে পারে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়েও।

বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা

বহুল আলোচিত এই বৈঠকটি শেষপর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়েই তৈরী হয়েছিল সংশয়। লিবিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রক্রিয়ার সাথে উত্তর কোরিয়ার তুলনা করায় ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ং'এর মধ্যে বাগবিতন্ডা শুরু হলে একপর্যায়ে ২৪শে মে'তে ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈঠক স্থগিত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে মি.কিম ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি লিখলে আবারো বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।

সার সংক্ষেপ

    বৈঠকটি সিঙ্গাপুরের স্যান্টোসা দ্বীপের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে
    উত্তর কোরিয়ার নেতা এবং কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টর মধ্যে এটি প্রথম বৈঠক
    শীর্ষ বৈঠকটির লক্ষ্য ওয়াশিংটন এবং পিয়ংইয়ং-এর মধ্যে সামরিক উত্তেজনা কমিয়ে আনা, এবং উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির একটা সম্ভাব্য সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা


সূত্রঃ বিবিসি
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status