কার্যকর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন: নজরুল ইসলাম

বিএনপি সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের কার্যকর ও কঠোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে শফিউল বারী মুক্তি পরিষদের আয়োজনে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান। নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করছি। তবে এভাবে আন্দোলন করে তাকে মুক্ত করা যাবে না। তাকে মুক্ত করতে হলে কঠোর আন্দোলনের প্রয়োজন। কারণ আজকে দেশে অস্বাভাবিক সব ঘটনা ঘটছে। মিথ্যা অভিযোগে সাজা পেয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে গেলেন। এরপর সরকার তার জামিন নিয়ে টালবাহানা শুরু করলো। এক পর্যায়ে দেশনেত্রীকে জামিন দেয়া হলো। কিন্তু সরকার পক্ষ চেম্বার জজের কাছে চলে গেলেন। এক শুনানি থেকে আরেক শুনানিতে সময় নেয়া হলো অনেক। অবশেষে জামিন হলো। তবে এর আগেই আরেকটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হলো। আমরা আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু না, এভাবে তাকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। আমাদের কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। তাই সেই আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিন। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্যকর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিন। তিনি বলেন, জনতা পারে না- এমন কোনো কাজ নেই। আমরা ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছি। আয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা তখন পেরেছি কারণ তখন আমাদের আন্দোলনের বয়স ছিল। তবে এখন যদি সেই সময়ের মতো আন্দোলন করতে বলেন তাহলে পারবো না। এখন আন্দোলন করতে হবে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলকে। আমাদের বক্তৃতায় খুব বেশি সাহসী হওয়ার চেয়ে কাজে বেশি সাহসী হতে হবে। সবারই ধৈর্যের সীমা থাকে। এই দেশ এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বৈরাতান্ত্রিক দেশে পরিণত হয়ে গেছে। তাই জনগণ এখন আর বর্তমান সরকারের পক্ষে নেই। তারা সুযোগ পেলে বিএনপিকেই ভোট দিতে চায়। নজরুল ইসলাম খান বলেন, ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আজ কারাগারে খুব বেশি অসুস্থ। তিনি বাইরে থাকাকালীন আমরা কেউ তাকে অসুস্থ দেখাচ্ছে বললে রেগে যেতেন। কিন্তু এখন আমরা তার সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি বলেন, হাত অবশ হয়ে গেছে। প্রচণ্ড ব্যথা করে। চোখ দুটি লাল হয়ে গেছে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত ডাক্তাররা বলেছেন- এমন অবস্থায় থাকলে তিনি পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন। অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। সরকারি চিকিৎসকরাও তার উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করেছে। এরপরও সরকার সেটা আমলে নেয়নি। এই স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আজ দেশের পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে সরকারের অবস্থা ভালো না। আর ভালো না বলেই গত ৭ দিনে ৫০ জনকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। সরকার নির্বিচারে দেশের সাধারণ মানুষের ওপর মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ক্রসফায়ার চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবৈধ সরকার বেগম জিয়ার জনপ্রিয়তায় ভয় পেয়ে তাকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাবন্দি করে রেখেছে। তারা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে সরকার ভালো নির্বাচন করতে চায় না। তবে আগামীতে তাদের কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। নির্বাচনের আগে কারাবন্দি বেগম জিয়া এবং আমাদের নেতাকর্মীরা বের হয়ে আসবেন। আগামী ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে আমরা সরকার গঠন করবো। সংগঠনের আহ্বায়ক ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি গোলাম সরোয়ার, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।