বাংলারজমিন

রূপগঞ্জ জুড়ে এখনো চলছে মাদকের কারবার

জয়নাল আবেদীন জয়, রূপগঞ্জ

২৭ মে ২০১৮, রবিবার, ৯:০৯ পূর্বাহ্ন

সম্প্রতি সারা দেশে মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে মাদক কারবারিরা গা ঢাকা দিলেও রূপগঞ্জের মাদক বিক্রেতারা রয়েছেন বহাল তবিয়তে। স্থানীয় পাড়া মহল্লায় এখনো সহজলভ্য মাদক। হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইনসহ যে কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য। আর এসব বিক্রেতারা স্থানীয় রাজনীতিবিদ, অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে চালাচ্ছেন তাদের কারবার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রূপগঞ্জের সর্বত্রই এখনো মাদক ব্যবসার ছড়াছড়ি। উপজেলার আনাচে কানাচে পাওয়া যাচ্ছে যে কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য। উপজেলার ক্রাইম জোন খ্যাত কায়েতপাড়ার চনপাড়া বস্তিতে সবচেয়ে বেশি জমজমাট মাদকের কারবার। মাদক ব্যবসার বদৌলতে অনেকে সেখানে কোটিপতি। শুধু চনপাড়া বস্তিতেই গত ১০ বছরে সাড়ে ৪ হাজার মাদকের মামলা রয়েছে। এখানকার মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে ১নং ওয়ার্ডে রাসেল, পিচ্ছি আনোয়ার, আয়নাল, জনি ও হাসি, ২নং ওয়ার্ডে জুয়েল, মোহাম্মদ আলী, কয়লারানী, ফারুক, শামীম ও শিল্পী, ৩নং ওয়ার্ডের মোস্তফা, কালাম, রশিদ, মিন্টু, ৪নং দেলোয়ার, ফারুক, ওয়ার্ডের মুজাহিদ, নুর জামাল, জনি, কদবানু ও শামসুন্নাহার, ৫নং ওয়ার্ডের মিল্লাত, ৬নং ওয়ার্ডের হাসিব, বোতল মিরজু, কাশেম, হাসান, সিপন, সেলিম, কামাল, ৭নং ওয়ার্ডের আলম, চানপুইরা লিটন, ৮নং ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর, রাজিব, মোকলেছ, শাহ আলম, আলতাফ এবং ৯নং ওয়ার্ডের শাহ আলম, রোশনী, ল্যাংড়া শাহিন, তপু, অপু, ফারুক, শামীম, অপু ও মাইগ্যা রাজু বর্তমানে সক্রিয়ভাবে মাদক ব্যবসা করছেন। আর পুরো বস্তিতে ডিলার হিসেবে কাজ করছে বোটলা স্বপন, শাহ আলম, অর্জুলা মেম্বার, জুয়েল, ফারুক, মোস্তফা, হযরত আলী। উপজেলার খাস দাউদপুর এলাকার আক্তারের ছেলে জুলহাস, সাবুর ছেলে হিরন, দুলাল, আশুলিপাড়ার রিটন, কাঞ্চন ব্যাপারি পাড়ার নাঈম, তারাব দক্ষিণপাড়া এলাকায় রুবেল ভুইয়া, ইব্রাহীম, প্রতিবন্ধী মোবারক, তারাব এলাকায় আফজাল, ইব্র্রাহীম, তারাব হাটিপাড়া এলাকায় মাদক সম্রাট ফরিদ, ফিরোজ মিয়ার ছেলে আতিকুর রহমান, আক্কাস আলীর ছেলে সোহেল মিয়া, দক্ষিণ মাসাবো এলাকায় মহসিন, নাছির, রূপসী স্লুইসগেইট এলাকার চান্দু ফকিরের ছেলে জামাল, কামাল ও আওলাদ। রূপসী ডেকো মিলের গেইট সংলগ্ন জহিরুল, গন্ধর্বপুর এলাকার আবদুল হকের ছেলে আবদুল সামাদ মিয়া, কাজেম মিয়ার ছেলে শরীফ মিয়া, ফারুক মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগম, ছফুল উদ্দিনের ছেলে ফারুক মিয়া, তেঁতলাব এলাকায় সজিব, নেছু, কালু, তারাব পৌরসভার উত্তর পবনকুল এলাকায় মাদক সম্রাট কাইল্লা দেলোয়ার, সাগর, কামালনগর এলাকায় সাব্বির, সজিব, মাসাবো এলাকায় আলমগীর, আ?রিফ, নুরুল। কান্দাপাড়া এলাকায় বিল্লাল মিশরী, মদিনাবাগ এলাকায় রুহুল, বরাব এলাকায় সজিব, বরপা এলাকায় রুহুল সিকদারের পুত্র সাইফুদ্দিন, তোবারকের পুত্র নাহিদ ও তানভীর, লতিফের ছেলে অহিদ, সহিদ, মিজানের পুত্র শাহিন, আবু সিদ্দিকের ভাগিনা মাদক সম্রাট নবী, অকি, অকির স্ত্রী, রুমি, চনপাড়া গ্রামে হাবু, অহিদ, রবিউল্লাহ রবু, পূর্বাচল উপশহরের হারারবাড়ি এলাকায় রুবেল, কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পূর্বগ্রাম এলাকায় খায়রুল আলম শরীফ, পাপেল, মাসুম খান, দক্ষিণপাড়া গ্রামে মাদক সম্রাট মানিক, নান্নু, রব, দিল মোহাম্মদ দিলু, আলমগীর, রাতালদিয়া এলাকার রহমান আলীর স্ত্রী ছলে বেগম, কেওডালা এলাকায় মঞ্জুরুল আলম, নাছির, পশ্চিমগাঁও এলাকায় রমজান, জহির, শুভ, জাকির, কামশাইর এলাকার হাবিবুল্লাহ মোল্লার ছেলে মিন্টু মোল্লা, নয়ামাটি এলাকার হবুর ছেলে কবির হোসেন, নগরপাড়া এলাকার তাফাজউদ্দিনের ছেলে মিতু মিয়া, গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকার কুখ্যাত মাদক সম্রাট রঞ্জু, মজিদের ছেলে পরদেশী সফিক, দরিকান্দি এলাকার পোশানির ছেলে মজিবুর রহমান, মাছিমপুর এলাকার সালামের ছেলে জসিম, রূপগঞ্জ থানার পাশের নিলু ফকিরের ছেলে জুয়েল, হাটাবো টেকপাড়া এলাকার আঃ হেকিমের ছেলে মিলন, গোয়ালপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে শফিকুল, ছনি এলাকার আমির হোসেনের ছেলে শামীম প্রমুখ। এরাই সবাই মাদকের ডিলার। পুলিশের তালিকায়ও রয়েছে এদের সকলের নাম। অনেকেই আবার মাদকের মামলায় একাধিক বার জেল খেটেছে। সারা দেশে মাদকের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হলেও রূপগঞ্জে মাদকের বিরুদ্ধে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বিক্রেতারা রয়েছেন অনেকটা নির্ভাবনায়। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও থানা পুলিশের কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ও কার্ডধারী সাংবাদিকদের সঙ্গে মাসোয়ারার মাধ্যমে আঁতাত করে তারা তাদের কারবার অব্যাহত রেখেছেন। রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শাজাহান ভূঁইয়া বলেন, সময় এসেছে মাদক কারবারিদের সমাজ থেকে সমূলে উপড়ে ফেলার। মাদক কারবারিদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিলে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। প্রতিদিনই কমবেশি মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ বিক্রেতারা আটক হচ্ছেন। অনেকে ব্যবসা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। আমার কোনো কর্মকর্তা যদি কোনো মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে থাকে তাহলে আমাকে প্রমাণ দিন। তার বিরুদ্ধে আইনানুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status