প্রথম পাতা

সংখ্যালঘু নির্যাতনকারীদের মনোনয়ন না দেয়ার দাবি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের

স্টাফ রিপোর্টার

২৬ মে ২০১৮, শনিবার, ১০:১০ পূর্বাহ্ন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই জাতীয় সংখ্যালঘু  মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ ৫ দফা জাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সংগঠনের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে তিন দশক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ সব দাবি জানানো হয়। সভায় লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক  এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেই সরকারকে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়া সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠন, বর্ণবৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন এবং পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের বাস্তবায়নসহ পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণসহ জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংসদে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, কোনও রাজনৈতিক দল বা জোট আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে এমন কাউকে মনোনয়ন দেবে না যারা অতীতে বা বর্তমানে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে বা রাজনৈতিক নেতৃত্বে থেকে সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী, স্বার্থবিরোধী কোনও প্রকার কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বা আছেন। রানা দাসগুপ্ত বলেন, এমন  কাউকে নির্বাচনে প্রার্থী দেয়া হলে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী সেসব নির্বাচনী এলাকায় তাদের ভোটদানে বিরত থাকবে বা ভোট বর্জন করবে।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, নির্বাচনের পূর্বাপর ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে ধর্ম ও সামপ্রদায়িকতার ব্যবহার, মন্দির, মসজিদ, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় সব উপাসনালয়কে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার, নির্বাচনী সভাগুলোতে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচার নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি যারা এসব করবে তাদের প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলসহ এক বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী আইনের যুগোপযোগী সংস্কার করতে হবে।
সূচনা বক্তব্যে ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত আশা প্রকাশ  করে বলেন, সংখ্যালঘু জনজীবনের যে বিদ্যমান সমস্যা, সংকট, হতাশা তা  রাষ্ট্র, সরকার ও রাজনৈতিক দল যথাযথভাবে বিবেচনা করবে। তিনি বলেন, ‘ভোটব্যাংক’ বা ‘আপৎ’ ভেবে যদি তাদের রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে রাখা হয় তবে তা কারো জন্যে শুভ হবে বলে মনে করি না। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, স্বস্তি চাই, জীবনের নিরাপত্তা চাই, নাগরিক হিসেবে নাগরিকের মর্যাদা চাই, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চাই- সে লক্ষ্যে ঐক্য পরিষদের সংগ্রাম চলছে, চলবে। রানা দাসগুপ্ত বলেন, বিগত তিন দশক ধরে গণতান্ত্রিক  পন্থায় এ সংগঠন তার আন্দোলন পরিচালনা করে এসেছে। সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় এ সংগঠন যেমন রাজপথে স্লোগান তুলেছে আবার সংগ্রামের অংশ হিসেবে এ দেশের সরকার, গণতান্ত্রিক সকল রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সঙ্গে অব্যাহত সংলাপ চালিয়ে গেছে, যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশপ্রেম, মানবপ্রেম ও বিশ্বপ্রেমের যে ঐতিহ্যের ধারা আমাদের পূর্ব-পুরুষেরা রেখে গেছেন সে পথেরই পথিক আমরা। তা থেকে এখনো আমরা ভ্রষ্ট হইনি, হবোও না।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গোমেজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল সেলিম, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান, বাসদের (বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল) সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status