অনলাইন

‘প্রধানমন্ত্রীর সফরে তিস্তা চুক্তির অগ্রগতি হবে’

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৬ মে ২০১৮, শনিবার, ৮:২২ পূর্বাহ্ন

প্রধাধমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে তিস্তা চুক্তি না হলেও অগ্রগতি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বর্তমানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি ভালো । চুক্তি যেকোনো সময় হতে পারে। ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের যে দেয়াল ছিল আমরা ভেঙে  ফেলেছি। যা ২১ বছর ধরে বিরাজমান ছিল। বিএনপি এই সম্পর্ক তিক্ত করার জন্য বহুলাংশে দায়ী। তারা যে সমস্যাটাকে জিইয়ে রেখেছে এখন যেকোনো সময় (তিস্তা) সমাধান হয়ে যাবে। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আধুরিয়া এলাকায়  ভুলতা ফ্লাইওভারের সাইড অফিসে ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানজট নিরসনে করণীয় বিষয়ক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
 মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, গঙ্গা চুক্তির বিষয়ে বিগত সরকারের আমলে বিএনপির নেত্রী ভারত সফর শেষে বাংলাদেশে আসার পর বিমানবন্দরে যখন সাংবাদিকরা তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিল তখন তিনি বলেছিলেন, আমি তিস্তার বিষয়টি ভুলে গিয়েছিলাম। আমরা কিন্তু ভুলে যাইনি। কিছুদিন আগে আমার নেতৃত্বে ভারত সফরে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তিস্তা চুক্তি ও রোহিঙ্গা বিষয়ে কথা বলেছি। কারণ আমরা আন্তরিকভাবে এ সমস্যার সমাধান চাই।
সীমান্ত চুক্তির মতো চ্যালেজিং কাজ আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করে ফেলেছেন সে তুলনায় এটা কোনো সমস্যাই নয়। এ সমস্যারও সমাধান হবে। প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় গেছেন, সেখানে নরেন্দ্র মোদি, মমতা ব্যানার্জী থাকবেন, এ ব্যাপারে কথা হবে, আমি এখানে বসে বলতে পারি না রেজাল্টা কি হবে। তবে, এটা বলি এই সফরে চুক্তি না হলেও অগ্রগতি হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার একদিকে বাংলাদেশে স্রোতের মতো রোহিঙ্গা পাঠিয়েছে, অন্যদিকে এর সঙ্গে মাদকের স্রোত সুনামীর মতো বাংলাদেশে এসেছে। মিয়ানমার শুধু রোহিঙ্গা পাঠায়নি, ইয়াবাও পাঠিয়েছে। কাজেই আমাদের সবার এখানে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। দেশ থেকে মাদক নির্মুল করতে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।  এখানে আমরা কাউকে ছাড় দেইনি, সে যেই হোক, অভিযোগ যদি তদন্তে প্রমাণ আসে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি যেই হোন  যেই জায়গায় থাকেন, জনপ্রতিনিধি হন, নেতা হোন, বড় রাজনৈতিক হোন, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। রাঘববোয়াল থেকে  চুনোপুঁটি কেউ ছাড়া পাবে না। টেনে সবাইকে আনা হবে, শুরু হয়েছে দেখতে পাবেন। মাদক বিক্রেতা, ডিলার, মজুদকারি ও সেবনকারি সবাই অপরাধী। শেখ হাসিনার সরকার মাদকের ব্যপারে কাউকে ছাড় দেবেন না। মাদকের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের এমপি নয়, আওয়ামী লীগ বিএনপি বলে কথা নয়, যে দলেরই হোক, যেই হোক, অপরাধ প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ হলে কারো রেহাই নেই।
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পুলিশকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, যখনই কোনো সড়ক, মহাসড়কে যানজট পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তখন উল্টাপথে যাতে কোনো গাড়ি আসতে না পারে।  উল্টাপথে আমার গাড়ি আসলে জারিমানা করবেন।
তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঈদের আগে সবাইকে সেক্রিফাইস করতে হবে। চাঁদাবাজি সব পুলিশ করে না। আমাদের দেশে যে সমাজ ব্যবস্থা কেউ কেউ করতে পারে। এখানে কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতারও যোগসাজশ থাকতে পারে। মন্ত্রী পুলিশকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, মহাসড়কে  থ্রি হুইলার, ইজিবাইক, ভটভটি, নসিমন করিমন  চলাচল করতে দেয়া যাবে না। এগুলোকে অন্যরোড়ে পাঠিয়ে দিতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামানো যাবে না।  ঈদের আগের তিন দিন ভারি যানবাহন রাস্তায় চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে, পচনশীল দ্রব্য, জ্বালানি তেল, গার্মেন্টস সামগ্রী, ওষুধ  এগুলো ভারি পরিবহনের আওতায় পড়বে না। ঈদের সময় হাইওয়ে পুলিশের পাশপাশি জেলা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
রাস্তার কারণে কোনো যানজট যাতে সৃষ্টি না হয়। ঈদ নয় ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে সারা বাংলাদেশে আমাদের টার্গেট হবে রাস্তা সচল রেখে গাড়ি চলাচল সচল রাখা। ভাঙাচোরা রাস্তা কোথাও যেন সমস্যার কারণ না হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের এগুলো সতর্ক নজরে রাখতে নির্দেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, এই সময়টা আমাদের জন্য খুব চ্যালেজিং। তাই ইঞ্জিনিয়ারসহ সড়ক পরিবহনের সঙ্গে সশ্লিষ্ট সবাইকে বলবো ৯টা পাঁচটা ডিউটি মনে না করে আন্তরিকভাবে কাজ করার। প্রয়োজনে রাতের বেলায়ও কাজ করতে হবে, রাস্তায় আসতে হবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, নজরুল ইসলাম বাবু, সড়ক পরিবহন বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ইবনে আলম হাসান, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুর রহমানসহ  প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে তিনি এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের কাঞ্চন সেতুর টোল প্লাজায় গিয়ে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত গাড়ির টোল আদায় করার জন্য নির্দেশ দেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status