দেশ বিদেশ

১১৯তম নজরুল জয়ন্তী আজ

স্টাফ রিপোর্টার

২৫ মে ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৫০ পূর্বাহ্ন

বিদ্রোহ ও প্রেমের কবি, মানবতা ও শোষিত মানুষের মুক্তির বার্তাবাহক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সারা দেশে দিনটি উদযাপিত হবে নানা আয়োজনে। রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত কবির সমাধি ছেয়ে যাবে বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসার ফুলে ফুলে।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে ১৩০৬ সালের ১১ই জ্যৈষ্ঠ জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের হিসাবে সেটা ছিল ১৮৯৯ সালের ২৪শে মে। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা নজরুল জীবিকার দায়ে লেটো দলের বাদক, রেলগার্ডের খানসামা, রুটির দোকানের শ্রমিক- নানা রকম পেশা বেছে নিয়েছিলেন শৈশব ও কৈশোরে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। সাংবাদিকতাও করেছেন।
‘চির উন্নত মম শির’ বলে কাজী নজরুল ইসলাম সারা জীবন শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা ও কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। জয়গান গেয়েছেন মানবতার। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে পথে নেমেছেন। শাসকের কোপানলে পড়ে কারারুদ্ধ হয়েছেন বারবার। তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে কাজী নজরুল তার সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন। তিনি ছিলেন অসামপ্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ। তার লেখনী জাতীয় জীবনে অসামপ্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীপ্তিতে ভাস্বর বাংলা সাহিত্যের ভুবনে স্বতন্ত্র ভাষারীতি ও শব্দের প্রয়োগে এক নতুন কাব্যধারার সংযোগ করেছিলেন কাজী নজরুল। একইভাবে বাংলা গানের ক্ষেত্রেও তিনি সংযোজন করেছিলেন নতুন মাত্রা। উত্তর ভারতীয় রাগ সংগীতের দৃঢ় ভিত্তির ওপর রচনা করেছিলেন আধুনিক বাংলা গানের সৌধ। প্রবর্তন করেছিলেন বাংলা গজল। নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল।
স্বাধীনতা লাভের পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেছিলেন।
বাণী ও কর্মসূচি: জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া জাতীয় কবির ১১৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার বাণীতে বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম সকল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে অনমনীয় প্রতিবাদী। তিনিই উপমহাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। বিএনপি মহাসচিব তার বাণীতে বলেন, কাজী নজরুল ইসলামই উপমহাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর।
জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে ঢাকায়। নজরুল ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এ উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল, কুমিল্লার দৌলতপুর ও চট্টগ্রামে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। দিনটিতে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হবে কবিকে নিয়ে বিশেষ নিবন্ধ। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহ এ উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status