বাংলারজমিন
মেয়রের ভাইপোর দোকানে চুরি জীবন গেল রাসেলের
স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
২৫ মে ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মেয়রের ভাইপোর কাপড়ের দোকানে চুরির অভিযোগে আটকের পর থানার ছাদ থেকে পড়ে আহত রাসেল মিয়া (২৩) মারা গেছে। ঘটনার ৩ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে মারা যায় সে। রাসেল একটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী ছিলো। পুলিশ নির্যাতন করে রাসেলকে থানার ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে বলে ঘটনার পর থেকেই অভিযোগ করে আসছে পরিবার। পুলিশের নির্যাতনের বিচার চেয়ে মানববন্ধনও করে এলাকার মানুষ। আর পুলিশের দাবি ছিলো পালাতে রাসেল থানার ছাদে উঠে নিচে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়। ২০শে মে দিনগত মধ্যরাতে শহরের সিটি সেন্টারের তৃতীয় তলার ‘স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউজ’ নামে একটি কাপড়ের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এই দোকান থেকে নগদ প্রায় দুই লাখ টাকা, একটি ল্যাপটপ, সিসিক্যামেরার ডিবিআর চুরি হয়। ‘স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউজ’ এর মালিক আসিফ ইকবাল খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মেয়র নায়ার কবিরের আপন ভাইপো। সেকারণে তার দোকানে চুরির বিষয়টিকে পুলিশ বেশ গুরুত্ব দেয়। পরদিন সকাল ১০টায় দোকান মালিকের কাছ থেকে চুরির মৌখিক অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ‘স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউজ’ কাপড়ের দোকান থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শওকত মিয়া (১৭), আশিক মিয়া (২০) ও তানজিল আহমেদ (২৫), মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী সুভাষ সাহা (৫০)কে থানায় নিয়ে যায়। ওইদিন বিকালে বেসরকারি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী রাসেল মিয়াকে তার বাড়ি থেকে ডেকে থানায় নিয়ে যাওয়া যায়। ওইদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে থানার দ্বিতীয় তলায় সিসি টিভি ক্যামেরার কক্ষে নিয়ে রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পুলিশ বলছে এসময় পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে রাসেল থানার ছাদে উঠে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। নিচে পড়ে আহত হয় সে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতাল নিয়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় রাসেলকে। সেখানে গতকাল রাত সাড়ে ৩টার দিকে মারা যায় রাসেল। রাসেলের ভাই লিটন মিয়ার অভিযোগ রাসেলকে থানা ভবনের ছাদে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। মারধর থেকে বাঁচতে রাসেল ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবীর হোসেন জানান, চুরির ঘটনায় স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউজ’এর ব্যাবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরে এই মামলায় তানজিল (২৫), আশিক (২৮) ও শওকত (২৬) নামে তিন যুবককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
এরা তিনজন ওই ফ্যাশন হাউসের কর্মচারী বলে জানা গেছে। এছাড়া মামলায় রাসেল মিয়াকেও আসামি করা হয়। সদর থানা পুলিশের দাবি ওই রাতে ব্যাগ নিয়ে আসা যাওয়া করতে রাসেলকে সিসিটিভির ক্যামের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে। এদিকে থানার ছাদ থেকে রাসেল মিয়া লাফিয়ে পড়ার ঘটনা তদন্তে মঙ্গলবার (২২ মে) বিকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা পুলিশ। রাসেলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকে তার মধ্যপাড়ার বাসায় ভিড় জমাতে থাকে এলাকার মানুষ। এ ঘটনায় রাসেল জড়িত ছিলো না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার মানুষ। রাসেল এর মা আমেনা বেগম সন্তান হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
এরা তিনজন ওই ফ্যাশন হাউসের কর্মচারী বলে জানা গেছে। এছাড়া মামলায় রাসেল মিয়াকেও আসামি করা হয়। সদর থানা পুলিশের দাবি ওই রাতে ব্যাগ নিয়ে আসা যাওয়া করতে রাসেলকে সিসিটিভির ক্যামের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে। এদিকে থানার ছাদ থেকে রাসেল মিয়া লাফিয়ে পড়ার ঘটনা তদন্তে মঙ্গলবার (২২ মে) বিকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা পুলিশ। রাসেলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকে তার মধ্যপাড়ার বাসায় ভিড় জমাতে থাকে এলাকার মানুষ। এ ঘটনায় রাসেল জড়িত ছিলো না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার মানুষ। রাসেল এর মা আমেনা বেগম সন্তান হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।