দেশ বিদেশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক আজ

সংসদ রিপোর্টার

২২ মে ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৪১ পূর্বাহ্ন

জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল-২০১৮’ অধিকতর যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে এডিটরস কাউন্সিলসহ সুবিধাভোগীদের (স্টেক হোল্ডার) আজ মঙ্গলবার বৈঠক করবে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বেলা ১১টায় সংসদ সচিবালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, গত ২২শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওই বৈঠকে সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস কাউন্সিল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন-অ্যাটকোরসহ সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সকলের মতামতের ভিত্তিতে বিলটি চূড়ান্ত করে সংসদের আগামী অধিবেশনে প্রতিবেদন উত্থাপন করা হবে। বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হককেও বিশেষ আমন্ত্রণে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মন্ত্রিসভায় ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের পর থেকে বিলের কয়েকটি ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন গণমাধ্যম ও মানবাধিকারকর্মীরা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ মানবাধিকার সংগঠন, সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন কঠোর ও বিতর্কিত কিছু ধারা বাদ দেয়ার দাবি তোলে। আইনের ২১, ২৫ ও ২৮ ধারা নিয়ে গত ২৫শে মার্চ উদ্বেগ জানান ১১টি দেশের কূটনীতিক। আর এডিটরস কাউন্সিলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) এর ২১, ২৫, ২৮, ৩১, ৩২ ও ৪৩ ধারা সম্পর্কে তাদের আপত্তি রয়েছে। কাউন্সিল মনে করে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এর এই ছয়টি ধারা বিদ্যমান থাকলে স্বাধীন সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। বিলের ৩২ ধারাসহ বেশ কয়েকটি ধারার বিষয়ে লিখিত আপত্তি জানিয়েছে বিএফইউজে। উল্লেখ্য, বিভিন্ন মহলের আপত্তি সত্ত্বেও গত ৯ই এপ্রিল বহুল আলোচিত ৩২ ধারা বহাল রেখে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল-২০১৮’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে গত ২৯শে জানুয়ারি খসড়া আইনটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ব্যাপক সমালোচিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা তথ্যপ্রযুক্তি আইন থেকে সরিয়ে সেগুলো আরো বিশদ আকারে যুক্ত করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। বিলের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থার কোনো ধরনের অতি গোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করিতে সহায়তা করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে কম্পিউটার বা ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ। বিলে এ ধরনের অপরাধের শাস্তির বিধানে বলা হয়েছে, এ ধরনের অপরাধের অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আরো বলা হয়েছে, উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয়বার বা পুনঃপুন সংঘটন করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এই ধারা নিয়ে বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম চলছে। সংসদে উত্থাপনকালেও বিলের ওই ধারার বিরোধিতা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. ফখরুল ইমাম। তিনি বলেন, ২০০৬ সালের আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ হয়েছে। সেটা বাতিলের প্রতিশ্রুতিও ছিল। কিন্তু ৫৭ ধারা বাতিল করে যে ৩২ ধারা করা হয়েছে, সেটা সংবিধানবিরোধী। যা জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করবে। বিলের ৩৯/খ ধারাও সংবিধানবিরোধী। আর কয়েকটি অপরাধে জামিন অযোগ্য বিধানে বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ বলে তিনি দাবি করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status