এক্সক্লুসিভ

যুদ্ধ জাহাজে দূরপাল্লার মিসাইল ও আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র

কাজী সোহাগ

২২ মে ২০১৮, মঙ্গলবার, ৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

নৌ-বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজগুলোতে যোগ করা হচ্ছে দূরপাল্লার মিসাইল ও আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র। নৌবহরের যুদ্ধ সক্ষমতা বাড়াতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুন প্রযুক্তির জাহাজ, ইক্যুইপমেন্ট ও যুদ্ধাস্ত্রসমূহের ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরির পরিকল্পনাসহ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সংসদ কার্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক সর্বশেষ সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব তথ্য জানান। সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি নূরজাহান বেগমের প্রশ্নে তিনি সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিন বাহিনীতে এরই মধ্যে যেসব আধুনিক সরঞ্জাম দেয়া হয়েছে তা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীতে যুক্ত করা হচ্ছে আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম। নৌ-বাহিনী প্রসঙ্গে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলা হয়, দেশের বিশাল সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা ও সম্পদ রক্ষার্থে শক্তিশালী নৌ-বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই মধ্যে নৌবাহিনীতে ফ্রিগেট, করভেট, হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে ভেসেল, লার্জ প্যাট্রোল, ক্রাফট (এলপিসি), প্যাট্রোল ক্রাফট (পিসি), ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি (এলসিইউ), ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক৯ এলসিটি), কন্টেইনার ভেসেল, ফ্লিট ট্যাংকার ইত্যাদি নতুন যুদ্ধজাহাজ সংযোজিত হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে রূপান্তরের লক্ষ্যে চীন থেকে কেনা দু’টি সাবমেরিন সংযোজিত হয়েছে। নৌবাহিনীতে সামুদ্রিক নজরদারির জন্য দুইটি মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ার ক্রাফট (এমপিএ) ও দুইটি হেলিকপ্টার বিদ্যমান রয়েছে। মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্র এলাকায় নিরাপত্তা, দুর্ঘটনারোধ, দূষণরোধ, চোরাচালান, দলদস্যুতা ও অন্যান্য নামকতামূলক অপতৎপরতা রোধে স্পেশাল ওয়ারফেয়ার, ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ (এসডব্লিউএডিএস) কমান্ড প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এদিকে নৌবাহিনীকে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নতুন ঘাঁটি হিসেবে বানৌজা নির্ভীক ও নেভাল এভিয়েশন কমিশনিং করা হয়েছে বলে জানানো হয়। ২০১৩ সালের ১৯শে নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পায়রা বন্দর সংলগ্ন এলাকায় বানৌজা শের-ই-বাংলা ঘাঁটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। সাবমেরিনের অপারেশনাল কর্মকাণ্ড, রক্ষণাবেক্ষণ ও জেটি সুবিধাদি এবং ভবিষ্যৎ সাবমেরিন ফ্লিট এর সম্প্রসারণ ইত্যাদি বিবেচনায় কুতুবদিয়ার পেকুয়া এলাকায় সাবমেরিন ঘাঁটি বানৌজা শেখ হাসিনা এর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার সহায়তায় ঢাকা নৌ অঞ্চলের খিলক্ষেত এলাকায় বানৌজা শেখ মুজিব নামে নতুন একটি ঘাঁটি নির্মাণাধীন রয়েছে। নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যে নৌবাহিনী পরিচালিত চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেড (সিডিডিএল) এ বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ফ্রিগেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশাল সমুদ্র এলাকা টহলের জন্য ৬টি ফ্রিগেট নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এসব জাহাজসমূহ নির্মাণের ক্ষেত্রে কোয়ারিটি স্টেট অফ দ্য আর্ট টেকনোলজি এর ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। যা পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এবং নতুন ধরনের হুমকি মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। এছাড়া সামুদ্রিক নজরদারির জন্য ২টি এমপিএ কেনা প্রক্রিয়াধীন। পাশাপাশি ২টি হেলিকপ্টার কেনারও পরিকল্পনা রয়েছে। মন্ত্রী জানান, নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আরও ২টি ফ্রিগেট, এমসিএমভি, সাবমেরিন রেসকিউ ভেসেল, লজিস্টিক শিপ, প্যাট্রোল ক্রাফট, ওশান টাগ, ফ্লোটিং ডক ইত্যাদি কেনা পরিকল্পনাধীন রয়েছে। সংসদে জানানো হয়, সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাতিসংঘ মিশনে বর্তমানে দু’টি নৌ যুদ্ধজাহাজ, ২৭২ জন জনবল ও ইউএনমিস মিশনে ২০০ জন জনবল এবং ১৪টি হাইস্পিড বোট মোতায়েন রয়েছে। ভবিষ্যতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আরও জনবল বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status