বাংলারজমিন

পাবনায় সাঁকোতেই লাখো মানুষের পারাপার

রাজিউর রহমান রুমী, পাবনা থেকে

২১ মে ২০১৮, সোমবার, ৮:৩৫ পূর্বাহ্ন

পাবনায় ছোট ইছামতি নদীর এপার ওপারের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ যতায়াত করে একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে। সদর উপজেলার সাদুল্লাহপুর ইউনিয়নের কামারডাংগা-চরপাড়া সংলগ্ন এই ইছামতি  ছোট নদী। ৯টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই বাঁশের সাঁকো। এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, এ নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের। সকল জনপ্রতিনিধি এই ব্রিজের আশ্বাস দিলেও তা কেউ বাস্তবায়ন করেনি। কামার ডাংগা, ঢালি পাড়া, মোল্লা পাড়া, চরপাড়া, দাসপাড়া, বেড়পাড়া, মুন্সীপাড়া, ফারাদপুর, শাঁখারী পাড়ার জনগণ এ সাঁকোর ওপর দিয়ে যাতায়াত করে। ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজ, বাজার হাটসহ পাবনা শহরে আসতে হয় এই সাঁকো দিয়ে। এই নদীতে ব্রিজ না থাকায় গ্রামের জনগণ সকলে মিলে ১ হাজার ফুট লম্বা বাঁশর সাঁকো তৈরি করে তার ওপর দিয়েই রাত-দিন যাতায়াত করছে। এলাকার স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, কৃষক, দিনমজুর ও স্থানীয় জনগণসহ বাঁশের সাঁকো দিয়ে, প্রতিদিন পারাপার হয় প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যায় জর্জরিত এ এলাকার ভুক্তভোগী জন সাধারণ, অসুস্থ ব্যাক্তিদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে। এ বাঁশের সাঁকো উপর দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে কমলমতি স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এ ব্রিজটি না হওয়ার কারণে এ এলাকার জনগণ চিকিৎসা, শিক্ষা, জমি চাষাবাদ ও জরুরি প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিসের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিদিন মানুষ যাতায়াত করে। বিশেষ করে দুবলিয়া হাজী জসিম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, ফজিতুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দুবলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করার জন্য প্রতিদিন এই সাঁকোর ওপর দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়। এ কারণে মাঝে মধ্যেই ঘটে দূর্ঘটনা।  এলাকার কলে পড়ুয়া  ছাত্র কবির হোসেন জানান, মাঠ থেকে কৃষি পণ্য ঘরে তুলতে যাবতীয় মালামাল পারাপার করতে হয় এ বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে,  যা একজন কৃষকের জন্য অনেক কষ্টের কাজ। আর আমাদের কথা কি বলব, প্রতিদিন কেউনা কেউ দুর্ঘটনার শিকার হয়। কামার ডাংগা গ্রামের আজমত আলী প্রামানিক জানান, এই সাঁকোর ওপর দিয়ে একা একাই পাড় হওয়া যায় না, তার উপর কৃষি ক্ষেত খামার থেকে ফসল ঘরে তুলতে ব্রীজ না থাকায় খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচলের সময় অনেক কৃষকই পড়ে গিয়ে হাত-পা ভেঙে গিয়েছে বলে তিনি জানান। চরপাড়া গ্রামের আব্দুল ফজলু প্রামানিক জানান, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করার জন্য এলাকার বাড়ি বাড়ি থেকে বাঁশ ও টাকা তুলে আমরা এ বাঁশের সাঁকো তৈরি করে আসছি। প্রতি বছর এ বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। তিনি আরও জানান আমাদের এই দুর্ভোগ দেখের কেউ নেই। নির্বাচনের সময় আসলেই বিভিন্ন প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু পরে ব্রিজ নির্মাণের তাদের আর খোঁজ থাকে না। সাঁকো নির্মাণের জন্য অর্থ চাইলেও তাদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না। এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস মুন্সি জানান, ব্রিজটি নির্মাণের জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তা কে জানানো হয়েছে। আশা করছি আগামী বছরের শুরুতেই ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status