শেষের পাতা

রাজধানীতে সামান্য বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার

১৪ মে ২০১৮, সোমবার, ৯:৪৯ পূর্বাহ্ন

অল্প সময়ের বৃষ্টি। তাতেই নগরীতে সৃষ্টি হয়েছে চরম দুর্ভোগ। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আনুমানিক ২০ মিনিট বৃষ্টি হয়। এই একটু বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ সময় সড়কে আটকা পড়ে অসংখ্য যানবাহন। কোথাও কোথাও থেমে থেমে গাড়ি চললেও ট্রাফিক পুলিশদের তা নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে গতকাল ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ৪২ মিলিমিটার। গতকালের ওই বৃষ্টিতে রাজধানীর মিরপুর, গ্রিনরোড, বসুন্ধরা সিটির পেছনের রাস্তা, তেজকুনি পাড়া, তেজতুরী বাজার, খিলগাঁও, গোড়ান, বাসাবো, নয়া পল্টন, কাকরাইল, ফকিারপুল, মতিঝিল, মৌচাক, মগবাজারের ভেতরের দিকে গলি, ফার্মগেট থেকে কারওয়ান বাজার এলাকার অধিকাংশ সড়কই পানিতে তলিয়ে যায়। কোথাও হাঁটু পানি, আবার কোথাও কোমর পানি জমে ছিল। মিরপুরের ১১ নম্বর কালশী রোড, কাজীপাড়া, সেনপাড়া, ১৩ নম্বর সেকশনের বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। মিরপুর ৬ নম্বরের একাংশ, ১০ নম্বর গোলচত্বরের সড়কটি পানিতে ডুবে যায়। বাচ্চাকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে এক অভিভাবক জানান, বাচ্চার স্কুলে পরীক্ষা ছিল। তাই যেতে হয়েছে। ফেরার সময় হঠাৎ বৃষ্টি এলো। এ সময় একটি দোকানের সামনে গিয়ে আশ্রয় নিই। বেশিক্ষণ বৃষ্টি না হলেও পানি উঠে যায় মিরপুর ১০ নম্বর সড়কটিতে। বিপাকে পড়ে গেলাম। কোমর সমান পানিতে রিকশাও পেলাম না। এদিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার বেশ কিছু সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে ভোগান্তিতে পড়েন সেখানকার মানুষ। বিশেষ করে ধানমন্ডি ৮, ২৭, সোবহানবাগসহ বিভিন্ন সড়কের পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়ে যায়। ৮ নম্বর সড়কে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ছেলেকে পৌঁছে দিতে এসেছিলেন শারমিন আক্তার। বাসায় ফেরার পথে আটকে যান জলজটে। তিনি বলেন, সকাল থেকে আবহাওয়া ভালো ছিল। হঠাৎ করে বৃষ্টি আসে। একটুখানি বৃষ্টিতে এই জায়গাটিতে প্রায়ই পানি জমে যায়। রিকশা, সিএনজি কিছুই পাচ্ছি না। একঘণ্টা হলো দাঁড়িয়ে আছি এখানে। কিভাবে বাসায় যাবো। আবার কখন ছেলেকে বাসায় নেয়ার জন্য স্কুলে আসবো বুঝতে পারছি না। সড়কের এই খারাপ অবস্থা কবে শেষ হবে? আমরা সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছি। কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ডে মেয়েকে নিয়ে কলেজে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন মতিন আলী। কিন্তু বৃষ্টিতে জমে যাওয়া কোমর অবধি পানির কারণে কোনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা বাস পাননি আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরও। তিনি জানান, সবসময় এ অবস্থা। আমরা কবে মুক্তি পাবো? সামান্য বৃষ্টি হলেই শেওড়া পাড়া থেকে কাজীপাড়া পর্যন্ত পানি জমে যায়। এখন এখানে মেট্রো রেলের কাজ চলায় আরো বড় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে থাকে যানজটও। রাজধানীর আরামবাগে গিয়ে দেখা যায় আরো ভয়াবহ অবস্থা। এই এলাকায় বৃষ্টি নামলেই জলজটে পরিণত হয়। তবে গতকালের চিত্র ছিল অন্যদিনের তুলনায় আরো খারাপ। অল্প সময়ের ভারি বৃষ্টিতে সব সিএনজি চালিত অটোরিকশা, রিকশা আর, প্রাইভেটকারগুলো তলিয়ে যাওয়ার অবস্থা। ব্যবসায়ের কাজে হাসান নামের এক যুবক এসেছিলেন সেখানে। পানিতে আটকা পড়ে ফেরার কোনো কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না তিনি। হাসান জানান, গত সপ্তাহে একবার এসেছিলাম। আজ (গতকাল) এসেও একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে। মতিঝিল-আরামবাগের মতো এত গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা যদি এমন হয় তাহলে আমরা কাজকর্ম ঠিকভাবে করবো কীভাবে? এদিকে ফার্মগেট-কাওরান বাজার এলাকার মূল সড়কেও জলজটের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে পানি জমে যায়। গতকালের চিত্র আরো খারাপ ছিল। রাস্তা থেকে পানি উঠে যায় ফুটপাথে। যান চলাচলের বিঘ্ন ঘটার পাশাপাশি সাধারণ পথচারীদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। এ ছাড়া মৌচাক, মালিবাগ, শান্তিনগর ও কাকরাইল এলাকাগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, চিরাচরিত নিয়মে ওই সড়কগুলো বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। এসব সড়কে সুষ্ঠু পয়ঃনিষ্কাশনের অভাবে অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকে। গতকালও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। অল্প বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় নগরীর গ্রিনরোড ও বসুন্ধরা সিটির পেছনের রাস্তাটিতে চলাচলকারী মানুষদেরও। সবসময়ের মতো গতকালও বৃষ্টিতে কোমর সমান পানি জমে সড়ক দুটিতে। তাতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে অনেক মানুষকে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status