বিশ্বজমিন

দুই কোরিয়ার ঐতিহাসিক বৈঠক আজ

মানবজমিন ডেস্ক

২৭ এপ্রিল ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৩৬ পূর্বাহ্ন

দুই কোরিয়ার ঐতিহাসিক বৈঠক আজ। সীমান্তবর্তী অসামরিক এলাকায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন উত্তরের প্রেসিডেন্ট কিম জং উন ও দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন এই বৈঠক উত্তেজনাপূর্ণ কোরিয়া উপদ্বীপে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে। যাতে প্রভাবিত হবে গোটা বিশ্ব। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

খবরে বলা হয়, কোরিয়া যুদ্ধের পর উত্তর কোরিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শুক্রবার ‘মিলিটারি ডিমার্কেশন লাইন’ অতিক্রম করে দক্ষিণের মাটিতে পা ফেলবেন কিম জং উন। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তা ইম জং সিউক বলেন, দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী পান মুঞ্জাম গ্রামে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানাবেন দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। অসামরিক এলাকা হলেও ভৌগোলিকভাবে এই গ্রামটির বেশির ভাগ অংশ দক্ষিণ কোরিয়ার ভূ-খণ্ডে অবস্থিত। সে অনুযায়ী, গত ৬৫ বছরের মধ্যে উত্তরের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে কিম জং উন দক্ষিণের ভূখণ্ডে পা ফেলবেন। এর আগে ২০০০ ও ২০০৭ সালে দুই দেশ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেছে। তবে তা অনুষ্ঠিত হয়েছে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে। স্বাভাবিকভাবেই এবারের বৈঠকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হবে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রম। ২০১১ সালে কিম জং উন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। কয়েক বছর ধরেই একের পর এক বিভিন্ন মাত্রার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে দেশটি। গত বছরের পরীক্ষা চালানো একটি ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। তেমনটিই দাবি উত্তর কোরিয়ার। এর পর থেকেই উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে হুমকি-পাল্টা হুমকি চলছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশ গ্রহণের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এছাড়া দ্রুতই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন কিম জং উন।

দক্ষিণ কোরিয়ার মুখপাত্র ইম জং সিউক বলেন, পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করা প্রয়োজন। যা অবশ্যই ১৯৯০ ও ২০০০ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির চেয়ে আলাদা হবে। এই বিষয়টি দুই কোরিয়ার সম্মেলনের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। এর আগে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া থেকে মার্কিন সেনা সরানোর শর্ত দিয়েছিল। একই সঙ্গে দক্ষিণে অবস্থিত মার্কিন সেনাঘাঁটিও সরিয়ে নেয়ার দাবি তুলেছিল। কিন্তু ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার এসব দাবিতে কর্ণপাত না করে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য দেশটির ওপর অব্যাহতভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। উত্তর কোরিয়ার ওপর একের পর এক নামতে থাকে নিষেধাজ্ঞার খড়গ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় দুই কোরিয়ার সম্মেলন নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। কোরিয়া ন্যাশনাল ডিপ্লোম্যাটিক একাডেমির প্রফেসর কিম হিউন উক বলেন, উত্তর কোরিয়া নিজেদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেবে। এখন দক্ষিণ কোরিয়া সে ক্ষেত্রে কতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারে সেটিই দেখার বিষয়। শক্ত কোনো প্রতিশ্রুতি ছাড়া উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি ত্যাগ করবে না।



   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status