শেষের পাতা

নি র্বা চ নী হা ল চা ল (ঢাকা-২০)

বড় দু’দলেই কোন্দল

আজাহারুল ইসলাম রাজু, ধামরাই থেকে

২৪ এপ্রিল ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা-২০ ধামরাই আসন থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। যদিও দুই দলেই দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে রয়েছে। তারপরও মনোনয়ন প্রত্যাশীরা  পথসভা, ওঠান বৈঠক, জনসভা ও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। দু’দল থেকে একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগ থেকে ডজন খানেক আর বিএনপি থেকে ৪ জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। বিএনপির প্রার্থীরা এখনো প্রকাশ্যে প্রচারণা না চালালেও গোপনে গোপনে এগিয়েছে অনেক দূর।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- বর্তমান এমপি এমএ মালেক, সাবেক এমপি বেনজীর আহমদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র গোলাম কবির, মেঘনা ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম খান সেলিম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সাকু ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু সাইদ মিয়া। আর বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বর্তমান ধামরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা আহম্মেদ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শিল্পপতি ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদ। তারা সবাই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে জোর লবিং ও এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি খান মোহাম্মদ ইসরাফিল খোকন ও যুব সংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খান মিলনও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সাবেক এমপি  বেনজীর আহমদকে মনোনয়ন না দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ মালেককে মনোনয়ন দেয়। এরপর জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক এমপি খান মোহাম্মদ ইসরাফিল খোকন তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলে এমএ মালেক বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন। সে সময় কোন্দল ভুলে এমপি এমএ মালেক ও সাবেক এমপি বেনজীর আহমদ এক মঞ্চে উঠেন। ২০১৫ সালে ধামরাই পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে, ২০১৬ সালের ইউপি চেয়ারম্যান পদে ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে এমপি এমএ মালেকের দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে সাবেক এমপি বেনজীর আহমদ প্রার্থী দাঁড় করিয়ে তাদের পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচন করলে আবারো কোন্দলের সৃষ্টি হয়। যদিও বেনজীর আহমদের বিরোধিতার পরও পৌর মেয়র, প্রায় সকল ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্যরা এমএ মালেকের প্রার্থীই জয়ী হয়েছেন। তখন থেকে ধীরে ধীরে কোন্দল চরম আকার ধারণ করে। এখন সাবেক এমপি বেনজীর আহম্মদ ও বর্তমান এমপি এমএ মালেক পাল্টাপাল্টি সমাবেশে একে অপরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন। এতে দু’পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, দ্রুত নিজেদের কোন্দল মিটিয়ে ফেলা উচিত। তা না হলে দুই শীর্ষ নেতার দ্বন্দ্বে  ধামরাইয়ের তৃতীয় কোনো পরিচ্ছন্ন নেতা মনোনয়ন পেতে পারেন।

পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র গোলাম কবির জানান, আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ধামরাইবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছি।

কয়েকজন প্রবীণ নেতা জানান, ধামরাইয়ে  আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব শুধু ধামরাইয়ে সীমাবদ্ধ নয়। এখন কেন্দ্রীয় ভাবেও ছড়িয়েছে। তাই সময় থাকতে সমাধান করা ভালো। তারা আরো জানান, বিএনপি হঠাৎ প্রকাশ্যে কিছু কর্মসূচি পালন করছে। তারাও দ্বন্দ্বের সুযোগ কাজে লাগাতে পারে।

এদিকে, প্রচারণায় পিছিয়ে নেই পৌর মেয়র গোলাম কবিরও। এমপি এমএ মালেক বলেন, ব্যক্তি থেকে দল বড় আর দলের থেকে দেশ বড়। তাই নিজের স্বার্থ নয় দেশ, দল ও ধামরাইবাসীর উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করছি। আমার উন্নয়ন কোনো অপশক্তি বাধা দিয়ে আটকে রাখতে পারেনি। তাই ধামরাইয়ের বংশী নদীতে ১৮টি সেতুসহ কয়েক কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছি। সাবেক এমপি বেনজীর আহমদ বলেন, আমার সময়েও ধামরাইয়ে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছিলাম। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বর্তমান ধামরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিন বলেন, ধামরাইয়ে বিএনপির দুঃসময়ের কাণ্ডারী হয়ে হাল ধরেছি। জনপ্রিয়তার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও তাদের দেয়া প্রার্থী পরাজিত করে পরপর কয়েকবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। তাই দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নিশ্চিত জয়ী হবো।

আগামীকাল: যশোর-৫
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status