খেলা

বিশ্বকাপে স্পন্সর সংকট

পশ্চিম ছেড়ে পূর্বের দিকে ঝুঁকছে ফিফা

মানবজমিন ডেস্ক

২৪ এপ্রিল ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

ফুটবল বিশ্বকাপ শুরুর আর দুই মাস বাকি। অথচ, ফুটবলের আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিফা এখনো এই টুর্নামেন্টের স্পন্সর পেতে হিমশিম খাচ্ছে। ২০১৪ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের দুই মাস আগে যত কোম্পানি স্পন্সরশিপের চুক্তি করেছিল ফিফা’র সঙ্গে, তার চেয়েও এবারের সংখ্যা বেশ কম। অগত্যা, এখন স্পন্সর পেতে পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরে মধ্যপ্রাচ্য, চীন ও রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে ফিফা। এ খবর দিয়েছে সিএনবিসি।
খবরে বলা হয়, ফিফা’র তিন রকমের স্পন্সর রয়েছে: অংশীদার, পৃষ্ঠপোষক ও আঞ্চলিক সমর্থক। ৭টি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এই বিভাগে ৭টি প্রতিষ্ঠানই পেয়েছে ফিফা। ৭টিই বৈশ্বিক ব্র্যান্ড। কোকাকোলা, হুন্দাই-কিয়া মোটরস, ভিসা ও অ্যাডিডাস রয়ে গেছে ফিফা’র বিশ্বস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি অংশীদার হিসেবে। অংশীদার বিভাগে নতুন যেই প্রতিষ্ঠান এসেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের কাতার এয়ারওয়েজ, রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি গ্যাজপ্রম ও ওয়ান্ডা গ্রুপ।
ফিফা’র জন্য উদ্বেগের কারণ হলো সংস্থাটির প্রধানতম টুর্নামেন্টে পৃষ্ঠপোষকের সংখ্যা কমে যাওয়া। রাশিয়ার স্টেডিয়ামজুড়ে লোগো অঙ্কন ও অন্যান্য মিডিয়া প্রচারণা পাওয়ার বিনিময়ে ৫টি কোম্পানি অর্থ দিতে সম্মত হয়েছে। ব্রাজিলের ক্ষেত্রে ২ মাস বাকি থাকতে ৮টি কোম্পানি পৃষ্ঠপোষক হয়েছিল।
কন্টিনেন্টাল, জনসন অ্যান্ড জনসন ও ক্যাস্ট্রল- এই তিনটি পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান ফিফা’র সঙ্গে করা চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয় ২০১৫ সালে। ওই বছরই ফিফা’র শীর্ষ পর্যায়ে দুর্নীতির খবর প্রচারের আলোয় আসে। মার্কিন ও ইউরোপিয়ান ব্র্যান্ডগুলোর শূন্যতা পূরণে এগিয়ে এসেছে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো।
ডিসেম্বরে ফিফা’র সঙ্গে চুক্তি করেছে চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম দুগ্ধজাত পণ্যের কোম্পানি মেংনিউ। জুন ও জুলাইয়ে মোট ৬৪টি খেলায় বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের অনুমতি পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফিফা’র দ্বিতীয় ক্যাটাগরি তথা পৃষ্ঠপোষক গ্রুপে থাকা ৫টি প্রতিষ্ঠানের একটি হলো মেংনিউ।
ক্রীড়া বাজারজাতকারী ও সাবেক ফিফা কর্মকর্তা প্যাট্রিক ন্যালি বলেন, ব্র্যান্ড হিসেবে ফিফা এখন ‘বিষাক্ত’। এটিই বিশ্বকাপের পৃষ্ঠপোষকতা থেকে পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর চলে যাওয়ার প্রধান কারণ। তিনি বলেন, ‘স্পষ্টতই, ফিফা এখন একটি বিষাক্ত ব্র্যান্ড। এটি একটি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন নিজেদের ইমেজ নিয়েও চিন্তিত।’
২০১৫ সালের মে মাসে সুইজারল্যান্ডে ফিফা’র সদর দপ্তর থেকে ৭ কর্মকর্তাকে আটক করেন মার্কিন কৌঁসুলিরা। এরপরই প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটার চিরকাল ফুটবল সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ হন।
ফিফা’র পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কোকাকোলাকে রাজি করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন ন্যালি। পাশাপাশি, ১৯৭৮ ও ১৯৮২ বিশ্বকাপে ফিফা’র বাজারজাতকরণেও সহায়তা করেছিলেন। তার বিশ্বাস, ফিফা’র সঙ্গে চীনা, রাশিয়ান ও মধ্যপ্রাচ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা থেকে বোঝা যায়, ফিফা’র শীর্ষ পর্যায়ে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার বদলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও গৃহীত হচ্ছে।
তার বক্তব্য, ফিফা’র যেই ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে, তা পরিবর্তন করা যাবে না। তবে একটি সমাধান তিনি দিয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘ফিফা’র অবস্থা পড়তির দিকেই থাকবে। তাই সংস্থাটির উচিত নিজের নাম অথবা ব্র্যান্ড ইমেজ সম্পূর্ণ পাল্টে ফেলা।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status