বাংলারজমিন

কৃষকের স্বপ্নের ধানে চিটা

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

২৪ এপ্রিল ২০১৮, মঙ্গলবার, ৮:৪০ পূর্বাহ্ন

সোনালি ফসলের নেকব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ না দেয়ার কারণে শ্রীমঙ্গল উপজেলার কৃষকেরা সোনার ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন থেকে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এই সোনালি ফসল কাটতে গিয়ে দেখেন ধান গাছের শীষে ধান নেই, ধরেছে চিটা। চলতি মৌসুমে উঠতি বোরো ধানের ক্ষেতে এ বিপর্যয়ে কৃষকরা এখন দিশাহারা। মাত্র কয়েক দিন আগে যে কৃষক তার ধানিজমির আইলে বসে নির্ভাবনার গোলা ভরা ধান তোলার স্বপ্ন বুনতেন, তারা এখন ধুঁকছেন স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায়। ফসলের ক্ষেতে ধানে চিটার পরিমাণ বাড়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে তারা।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ ধানের নেকব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে আগাম কোনো সতর্কতা দেয়নি কৃষি বিভাগ। এমনকি তাদের অভিযোগ মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া দূরের কথা তাদের সঙ্গে দেখাও মেলেনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বোরো জমিগুলোতে বিক্ষিপ্তভাবে  নেকব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাদুর্ভাব হাওর এলাকায়। আক্রান্ত জমিতে ধানের বদলে চিটা হয়ে যাচ্ছে।
আরো লক্ষ্যণীয় বিষয়, এ বিষয়ে করণীয় কী বা কীভাবে এর থেকে মুক্তি মিলবে এসব কিছুই জানেন না শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকার কৃষকরা। স্থানীয় কৃষি অফিসের নেই চিটা আক্রান্ত এলাকায় কোনো প্রকারের নজরদারি। কৃষি কর্মকর্তারা কখনো যাননি এই চিটা আক্রান্ত এলাকায়।
শ্রীমঙ্গল হাইল হাওরের পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা বেদনার মলিন মুখ নিয়ে ধান কাটছেন।
এলাকার কৃষক তাহির মিয়া, উরুস আলী এবং ইসমাইল মিয়া বলেন, আমাদের সমস্ত জমির ধান ‘চুছা’ (চিটা) হয়ে গেছে। আমরা এখন কি খাবো? বাচ্চা-কাচ্ছাদের নিয়ে কি খাবো?
তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার কৃষি অফিসের কোনো কর্মকর্তা আমাদের এদিকে এসে আমাদের এই দুর্দশা সরেজমিনে কখনোই দেখে যাননি।  
এলাকার জলিল মিয়া বলেন, আমি সিতেশ রঞ্জন দেবের কাছ থেকে ৩ কেয়ার জায়গা ১২ হাজার অগ্রিম টাকা দিয়ে দুই ফসলের জন্য বাগি (বর্গা) নিয়েছি। আমার ক্ষেতের সব ধানে চিটা ধরার কারণে পুরো টাকাই নষ্ট হয়ে গেছে। গরু-মহিষও এই ধান খায় না।
ওয়াহিদ মিয়া এবং মোছাদ্দর মিয়া তারা দু’জনও এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি সিতেশ রঞ্জন দেবের জায়গা বাগি নিয়েছেন। এখন তাদেরও মাথায় হাত।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিভাগীয় কৃষি অফিস, সিলেট এর অতিরিক্ত পরিচালক (এডি) কৃষিবিদ মো. আলতাফুর রহমান বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন না করার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ বিষয়ে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status