এক্সক্লুসিভ

মাদকের ফাঁদে রোহিঙ্গারা

মানবজমিন ডেস্ক

২১ এপ্রিল ২০১৮, শনিবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ভাগ্যবিড়ম্বিত ও গৃহহীন রোহিঙ্গারা মাদকচক্রের ফাঁদে পড়ছে ক্রমবর্ধমান হারে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে রশিদ আলম (৩০)। তার মতো আরো কতগুলো পরিবার আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের ফাঁদে রয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডিএনএ। তাদেরকে বলা হচ্ছে মাদক বহন করলে বা এ ব্যবসায় জড়িত হলে পরিবার নিরাপদ থাকবে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন রশিদ আলম। তারপর থেকে বসবাস করতে থাকেন কক্সবাজারের টেকনাফে একটি শরণার্থী শিবিরে। ডিসেম্বরে ৩৫ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট সহ ধরা পড়ে সে। এ সময় সে বিজিবিকে বলে যে, সে কিছু অসাধুর খপ্পরে পড়েছে। তারা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার পরিবার ও আত্মীয়দেরকে মিয়ানমার থেকে নিরাপদে বের করে আনার। পাশাপাশি তাদেরকে বাংলাদেশে কাজ দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। মিয়ানমারের ডংখালির বাসিন্দা আলম। এখনো সে আশা করে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। এভাবে অনেক নারী-পুরুষ ও টিনেজার আন্তর্জাতিক মাদকের মাফিয়াদের খপ্পরে পড়ছে। এসব রোহিঙ্গাকে প্রলুব্ধ করা খুব সহজ। এর প্রথম কারণ, তারা গরিব। তারা ভীতিগ্রস্ত। কক্সবাজারে ছড়িয়ে থাকা বিশাল শরণার্থী শিবিরে অবর্ণনীয় অবস্থার মধ্যে বসবাস করছে তারা। এখন মিয়ানমার সীমান্তের কাছে বাংলাদেশে বসবাস করছে কমপক্ষে সাড়ে এগারো লাখ রোহিঙ্গা। তাদের জন্য প্রতিদিনই নির্মাণ করা হচ্ছে একটি করে নতুন ঘর। প্রতিদিনই মিয়ানমার থেকে নদীপথে আসছে নতুন শরণার্থী। কুতুপালং ও বালুখালিতে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এমন দুটি বড় আশ্রয়শিবির। এসব আশ্রয় শিবিরে যেসব ঘর তাতে মাত্র একজনের আশ্রয়ের ব্যবস্থা হতে পারে। কিন্তু তাতে বসবাস করছে চার থেকে পাঁচ জন মানুষ। তারা ঘুমায় পর্যায়ক্রমে। শরণার্থীদের খাদ্য সরবরাহ করছে বিভিন্ন এনজিও ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার। অসাধু চক্রটি তাদেরকে তাদের ফেলে আসা বাড়িঘর ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তাদেরকে ভারতে বা দক্ষিণ আফ্রিকায় বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এক্ষেত্রে শর্ত হলো সীমান্ত অতিক্রম করে মাদক এপার-ওপার করা। বিজিবির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক কমান্ডার কর্নেল গাজী মো. আহসানুজ্জামান ডিএনএ’কে বলেছেন, গত বছরের তুলনায় ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার বেড়েছে কয়েকগুণ। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত। এর মধ্যে ৪৫ কিলোমিটার নদীপথ। আহসানুজ্জামান বলেছেন, প্রতিদিন এক কোটি ২৫ লাখ রুপির ইয়াবা পাচার হয়ে আসে বাংলাদেশে। আগে এটা কয়েক লাখে সীমাবদ্ধ ছিল। বাংলাদেশের ঘুমধুম গ্রামের কাছের নো-ম্যান্সল্যান্ড দিয়ে এসব ট্যাবলেট পাচার হয়ে প্রবেশ করে। এসব সীমান্ত ফাঁকফোকরযুক্ত। টেকনাফেও একই অবস্থা। গত মাসে এক রোহিঙ্গা নারীর কাছ থেকে বিজিবি ৫২ কোটি রুপির ইয়াবা উদ্ধার করে। এ বিষয়ে ডিএনএ’কে বিজিবি (কক্সবাজার) আঞ্চলিক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম রকিবুল্লাহ বলেছেন, রোহিঙ্গারা এসব ট্যাবলেট তাদের জুতার ভেতর করে আনে। এখন এ জন্য প্রতিজন রোহিঙ্গাকে দেখা হচ্ছে সন্দেহের চোখে। এসব সমস্যার সমাধানে টেকসই সমাধান প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status