বাংলারজমিন
সাভারে কারখানার বিষাক্ত পানির জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ
হাফিজ উদ্দিন, সাভার থেকে
২২ এপ্রিল ২০১৮, রবিবার, ৮:১৮ পূর্বাহ্ন
সাভারের আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নয়নজুলি খাল দখল ও ভরাট করে ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানা স্থাপন করায় প্রায় ৩০ গ্রামের পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। একমাত্র খালটি দিয়ে বিভিন্ন কারখানার অপরিশোধিত ক্যামিকেল মিশ্রিত পানি নির্গমন করায় বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বাদ পড়ছে না ঈদগাহ ও কবরস্থান। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় দুষিত পানির গন্ধে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই দেখা দিয়েছে। এর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না গবাদিপশু, লোহার আসবাবপত্র ও টিনের চালা। কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানিতে মরে যাচ্ছে পুকুরের মাছও। অবৈধভাবে খাল দখল ও ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হলেও কিছুতেই দমছে না ভূমিদস্যুতা। খালটি রক্ষার্থে এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই তা আবারও দখল হয়ে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জিরাবো পুকুরপাড়া এলাকার লুসাকা গ্রুপ খালের মধ্যে সরু পাইপ দিয়ে তার উপর দিয়ে স্থাপনা তৈরি করেছে। কান্দাইল এলাকার শাফাজুদ্দিন, ঘোষবাগ পশ্চিম পাড়া এলাকার ইলিয়াস কাজী, হাসেম মেম্বার ও আব্দুস সাত্তারসহ এলাকার প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি অর্থের জন্য খালটি ভরাট করে বিক্রি করে দিয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য খালের উপর কয়েকটি কালভার্ট থাকলেও তার সামনে-পেছনে ভরাট করে গড়ে তুলা হয়েছে বসতবাড়ি ও শিল্প কারখানা। ফলে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের কান্দাইল মৃধা বাড়ি ঈদগাহ মাঠ ও কবস্থানও ডুবে গেছে দুষিত পানিতে। ভুক্তভোগী আবেদা বেগম জানান, এক সময় এ খালে বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া গেলেও এখন কেবলই স্মৃতি। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না রেখে খালটি ভরাট করে গড়ে মিল কারখানা ও বসতবাড়ি গড়ে তোলায় পুরো এলাকায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ইয়ারপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু তাহের মৃধা বলেন, জামগড়া, জিরাবো, ঘোষবাগ, কান্দাইল, ভূইয়াপাড়া, বাইপাইল, বগাবাড়ি, বেরনসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম নয়নজুলি খালটি দখল হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই এবং শিল্প-কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত বর্জ্যের পানিতে জলাবদ্ধতার কারণে এলাকাবাসী আক্রান্ত হচ্ছেন নানা ধরনের চর্মরোগে।
ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস ভূইয়া বলেন, শিল্প কারখানার বিষাক্ত পানিতে আমাদের ঈদগাহ ও কবস্থানসহ পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে। কবর স্থানে একহাত খোঁড়ার পরই পানি উঠে যায়। এছাড়া কারখানার বিষাক্ত পানি গায়ে লাগালে তাদের চুলকানি এবং ঘা হয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করেন স্থানীয় কনকর্ড, বেবীলনসহ বিভিন্ন ডাইং ও ওয়াসিং কারখানার বিষাক্ত বর্জের কারণে লোহাজাতীয় বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং ঘরের টিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানির দুর্গন্ধ এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে অবিলম্বে খালটি উদ্ধার করে তা খননের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। ইয়ারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ ভূইয়া বলেন, সরকারি খাল দখলের বিষয়টি একাধিকবার ভূমি অফিস, পরিবেশ অধিদফতর ও নদী রক্ষা কমিশনকে জানানো হয়েছে। এছাড়া যে সমস্ত কারখানা নদীর জায়গা দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছে তাদের ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে না বলে জানা তিনি। সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান বলেন, সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে খাল দখলের বিষয়ে সার্ভে চলছে। কিছুদিন আগে নদী রক্ষা কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরজমিনে এসব জায়গা পরিদর্শন করেছেন। খুব শিগগিরই যৌথভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস ভূইয়া বলেন, শিল্প কারখানার বিষাক্ত পানিতে আমাদের ঈদগাহ ও কবস্থানসহ পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে। কবর স্থানে একহাত খোঁড়ার পরই পানি উঠে যায়। এছাড়া কারখানার বিষাক্ত পানি গায়ে লাগালে তাদের চুলকানি এবং ঘা হয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করেন স্থানীয় কনকর্ড, বেবীলনসহ বিভিন্ন ডাইং ও ওয়াসিং কারখানার বিষাক্ত বর্জের কারণে লোহাজাতীয় বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং ঘরের টিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানির দুর্গন্ধ এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে অবিলম্বে খালটি উদ্ধার করে তা খননের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। ইয়ারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ ভূইয়া বলেন, সরকারি খাল দখলের বিষয়টি একাধিকবার ভূমি অফিস, পরিবেশ অধিদফতর ও নদী রক্ষা কমিশনকে জানানো হয়েছে। এছাড়া যে সমস্ত কারখানা নদীর জায়গা দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছে তাদের ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে না বলে জানা তিনি। সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান বলেন, সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে খাল দখলের বিষয়ে সার্ভে চলছে। কিছুদিন আগে নদী রক্ষা কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরজমিনে এসব জায়গা পরিদর্শন করেছেন। খুব শিগগিরই যৌথভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।