দেশ বিদেশ

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির নামে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে

স্টাফ রিপোর্টার

২১ এপ্রিল ২০১৮, শনিবার, ৯:৩৪ পূর্বাহ্ন

বর্তমান সরকার বৃটিশ ও পাকিস্তান আমলের মহাজন ব্যবসায়ীদের মতো আচরণ করছে। তারা পার্টনারশিপ ব্যবসায়ী হয়ে গেছে। কিছু গোষ্ঠীর উন্নয়নের স্বার্থে বছরে দুই বার করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করছে। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) গোলটেবিল মিলনায়তনে নাগরিক কমিটি আয়োজিত ‘ভোক্তার স্বার্থ উপযোগী পরিবেশবান্ধব এলএনজি ও এলপিজির যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের’ দাবিতে এক নাগরিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ এসব কথা বলেন। সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ছোট ছোট গোষ্ঠীর স্বার্থে সরকার কোটি কোটি মানুষের জীবন যাপনের মূল্য বৃদ্ধি করছে। বারবার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে তারা মানুষের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। তিনি বলেন, সরকার জনগণ টেকসই উন্নয়ন চায়। পাশাপাশি পরিবেশও রক্ষা করতে চায়। কিন্তু সরকার এসবের ধারে কাছেও যায় না। এভাবে চলতে থাকলে সরকারকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইসলাম বলেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ও পরিবেশ দূষণ নৈরাজ্যের দিকে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার এক সময় বলছে দেশ গ্যাসের উপরে ভাসছে। আবার একই মুখে এখন বলছে গ্যাস শেষের দিকে। মূলত নিজেদের স্বার্থে সরকার এমন বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। সভায় আলোকচিত্র প্রদর্শনীকালে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, বিইআরসি’র আইন লঙ্ঘন হলেও জ্বালানি বিভাগ এলপিজির মূল্যহার বিইআরসি কর্তৃক নির্ধারণ হতে দিচ্ছে না। গ্যাস খাতে রাজস্ব ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও তারা গ্যাসের মূল্য বাড়িয়েই চলেছে। অন্যদিকে মজুদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং সংকট মোকাবিলায় গ্যাসের অনুসন্ধানেও নেই তেমন গুরুত্ব। শিল্প ও আবাসিক গ্রাহকদের রাখা হচ্ছে চরম গ্যাস সংকটে। আর বিদ্যুৎ উৎপাদনে এই গ্যাস বণ্টনের চরম বৈষম্য দেখা যায়। তিনি বলেন, দিন দিন পরিবহন খাতে সিএনজি রেশনিং বাড়ানোর পাশাপাশি গ্যাস চুরি ও ঘুষ-দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। এলএনজি ও এলপিজির বাজার সম্প্রসারণ ও মুনাফা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই জ্বালানি বিভাগ এমন সব কৌশল গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি। আর এসব চুরি, ঘুষ, দুর্নীতি, বৈষম্যে কোনো প্রতিকার না করেই, এলএনজি আসার অজুহাতে আবারও গ্যাসের মূল্যহার বাড়ানো হচ্ছে গড়ে ৭৫ শতাংশ। যা গুরুতর অন্যায় ও গণ-নিপীড়নের শামিল। আয়োজিত নাগরিক সভায় নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, আমরা দেখেছি সাগর জয় করে সরকার নানা উৎসব পালন করেছে। কিন্তু সাগর থেকে গ্যাস উত্তোলনের দিকে এখনো তাদের কোনো নজর নেই। যেখানে ভারত ও মিয়ানমার ইতিমধ্যেই সাগর থেকে গ্যাস উত্তোলন করছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো শুরুই করতে পারেনি। ফলে বাংলাদেশের গ্যাস ভারত ও মিয়ানমারের দিকে চলে যাচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, এসবের দিকে কেন সরকারের কোনো নজর নেই? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, গ্যাসের দাম সঠিক করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং ন্যায়ের সমতা দরকার। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক বদরুল ইমাম, সিএনজি অ্যাসোসিয়েশনস এর সাধারণ সম্পাদক ফারহান নূর ভূঁইয়া, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status