দেশ বিদেশ

আসামি ধরতে নদীতে ঝাঁপ পুলিশ সদস্যের লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ থেকে:

২১ এপ্রিল ২০১৮, শনিবার, ৯:২৪ পূর্বাহ্ন

মাদক মামলার আসামি ধরতে গিয়ে নদীতে ডুবে নিখোঁজ মানিকগঞ্জ সদর থানার পুলিশের কনস্টেবল শাহিনুর রহমান শাহিন (৩৫)কে ২০ ঘণ্টা পর কালিগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।  লাশ উদ্ধারের পর কালিগঙ্গার পাড়ে স্বজনদের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠে সেখানকার পরিবেশ। তবে মাদক মামলার আসামি আ. সালামের কোনো সন্ধান শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, সদর উপজেলার জয়নগর গ্রামের মাদক মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস সালামকে ধরতে বৃহস্পতিবার বিকালে মানিকগঞ্জ সদর থানার এএসআই রফিকুল ইসলাম ও কনস্টেবল শাহিনুর রহমান শাহিন অভিযান চালান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামি আব্দুস সালাম দৌড়ে পালাতে গিয়ে পার্শ্ববর্তী কালিগঙ্গা নদীতে ঝাঁপ দেন। এসময় কনস্টেবল শাহিনও তাকে ধরতে নদীতে ঝাঁপ দেন।  এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য নদীতে নিখোঁজ হয়ে যান। পরে মানিকগঞ্জ থেকে এসে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা রাতেই নদীতে উদ্ধার তৎপরতা চালান। পারদর্শী ডুবুরি দল না থাকায় ঢাকা থেকে ৫ জন ডুবুরী আনা হলে তারা রাতভর উদ্ধার তৎপরতা চালালেও নিখোঁজ পুলিশ সদস্য ও আসামির কোনো সন্ধান পায়নি।  দীর্ঘ ২০ ঘণ্টা পর অবশেষে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সদস্য শাহিনুর রহমান শাহীনের মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরি দল।  

মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালান। ডুবুরি কাজে আমাদের এখানে পারদর্শী কোনো সদস্য না থাকায় রাতেই ঢাকা থেকে ডুবুরি দল আনা হয়। ভোর রাত সাড়ে তিনটা থেকে ঢাকার ডুবুরিরা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালান। কিন্তু নদীর কোনো স্পটে পুলিশ সদস্য ও আসামি ঝাঁপ দিয়েছে তা শনাক্ত কেউ করতে পারেনি। তাই উদ্ধার কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব হয়নি। পরে নদীর বিভিন্ন জায়গা তল্লাশি চালানো হলে দুপুর সোয়া ১টার দিকে পুলিশ সদস্যের লাশ আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হই।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুর রশিদ জানান, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সদস্যদের সঙ্গে আমার এলাকার লোকজন নিখোঁজ পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারে কাজ করেছেন। যার ফলে শুক্রবার দুপুরের মধ্যেই নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।  তবে মাদক মামলার আসামির সন্ধান শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
নিহত পুলিশ সদস্যের ছোট ভাই মো. শামীম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, মাত্র একদিন আগে আমার ভাই বাড়িতে গিয়েছিল আমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য। ওটাই ছিল তার সঙ্গে শেষ দেখা। ২০০৬ সালে তিনি পুলিশে যোগ দেন। চাকরি পাওয়ার বছর কয়েক পর বিয়ে করেন। তার ৬ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। আবার ভাবী এখন অন্তঃসত্ত্বা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন সবার বড় আমার এই ভাই। এখন কীভাবে সংসার চলবে। ভাবী-বাচ্চাদের ভব্যিষৎ কী হবে বলেই কেঁদে উঠেন শামীম।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status