বাংলারজমিন

হালুয়াঘাটে কাঁচা রাস্তার ফাঁদে ৩ লাখ মানুষ

ওমর ফারুক সুমন, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) থেকে

২১ এপ্রিল ২০১৮, শনিবার, ৯:১২ পূর্বাহ্ন

৮০০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার ফাঁদে রয়েছেন হালুয়াঘাটের ১২টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ লাখ মানুষ। বর্ষাকাল শুরু হলেই হালুয়াঘাট উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রায় ৮০০ কিলো কাঁচা সড়কের সীমাহীন ভোগান্তিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই ৬০ থেকে ১০০ কিলো কাঁচা সড়ক রয়েছে যা বর্ষা শুরু হলেই সীমাহীন ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সরেজমিনে খবর নিয়ে জানা যায়, গোরকপুর বাজার ভায়া কৈচাপুর ইউপি অফিস, সেখান থেকে ভায়া ধুরাইল ইউপি অফিস পর্যন্ত মোট ২১ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক, ধুরাইল বাজার থেকে ডুবারপাড় পর্যন্ত ৩ কিলো গ্রামীণ সড়ক, ডেফুলিয়া বাজার থেকে বিলডোরা ইউপি পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলো গ্রামীণ সড়ক, আমতৈল ইউপির চাঁদশ্রী বাজার ভায়া বাহিরশিমুল বাজার পর্যন্ত ৪ কিলো ইউনিয়ন সড়ক, স্বদেশী ইউপির বাবু বাজার হতে হাফানিয়া পর্যন্ত ৯ কিলো ইউনিয়ন সড়ক, জুগলী ইউপি হইতে গামারীতলা পর্যন্ত ২ কিলো, ধারা ইউপি হইতে বাবু বাজার পর্যন্ত ৬  কিলো, বিলডোরা ইউপি হইতে ডেফুলিয়া ফেরিঘাট ভায়া বাট্টা বাজার পর্যন্ত ১১ কিলো, শাকুয়াই ইউপি হইতে কানাকড়িকান্দা ভায়া জৈনাটি বাজার পর্যন্ত ৪ কিলো, ধারা ইউপি হইতে বাহিরশিমুল সড়ক ভায়া মাঝিয়াল সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ৪ কিলো, আলিসা বাজার হইতে পূর্ব নড়াইল কমিউনিটি স্কুল হয়ে বাদশা বাজার মহর মৌলবীর বাড়ি পর্যন্ত ৫ কিলো, সন্ধাকুড়া হতে লক্ষ্মীকুড়া পর্যন্ত ২ কিলো, মহিষলেটি দাখিল মাদরাসা হতে আমিরখাকুড়া পাকা রাস্তা পর্যন্ত ৩ কিলো, বাট্টা বাজার হইতে বালিজুড়ি সড়ক পর্যন্ত ২ কিলো, দক্ষিণ ইটাখলা পাকা রাস্তা হতে উত্তর ইটাখলার আলতাফ চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত ৪ কিলো, ধারা-ধুরাইল পাকা রাস্তা হতে আশ্রমপাড়া গোরস্থান পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক রয়েছে। এর বাইরেও ছোট বড় আরো বহু সড়ক রয়েছে যা এখনও কাঁচা। যা প্রায় ৮০০ কিলোমিটারের মতো। এর মধ্যে ২৩৯ কিলো ইউনিয়ন সড়ক রয়েছে যার বেশিরভাগ অংশ এখনও রয়েছে চলাচলের অনুপযোগী।  
বর্ষাকালে রাস্তাগুলোর অবস্থা এমনই বেহাল হয় যা একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠে। গ্রীস্মকালে ধুলো ও বর্ষায় কাঁদা আর খানাখন্দ। ৩নং কৈচাপুর ইউনিয়নের প্রায় সবকটি সড়কের অবস্থা থাকে বড়ই বেহাল। যতই দিন যাচ্ছে ক্রমশই বাড়ছে জনদুর্ভোগ। খানাখন্দে ভরা রাস্তাগুলো পরিণত হয় বর্ষাকালে ‘মরণফাঁদে’। মানুষ তখন কৈচাপুরের সড়ক  দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে থাকে। সরেজমিনে বর্ষাকাল শুরু হলেই দেখা যায়, উপজেলার কৈচাপুর ইউনিয়নের বোর্ডবাজার থেকে কড়ইকান্দা, রুহি পাগারিয়া, সোনামোহা ও গুনারিয়াকান্দা, বোর্ড বাজার হইতে ফকিরপাড়া পর্যন্ত, যোকাবিলের কান্দা থেকে মাইজপাড়া পর্যন্ত, গাঙ্গিনারপাড় মেইনরোড থেকে তেমুনি পাড় পর্যন্ত সড়ক দশা। রাস্তার অধিকাংশ সড়কজুড়ে থাকে খানাখন্দে ভরা। কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয় বড় বড় গর্ত। এসব গর্ত কোথাও হাঁটু, কোথাও উরু পর্যন্ত গভীর থাকে।
১২নং স্বদেশী ইউনিয়নের বাবু বাজার থেকে হাপানিয়া হয়ে মরলের বাজার পর্যন্ত, দক্ষিণ ইটাখলা চৌরাস্তা মোড় হয়ে উত্তর ইটাখলা হয়ে বাবুর বাবুর বাজার পর্যন্ত, ঘাসীগাঁও মোড় থেকে পরিষদ পর্যন কাঁচা রাস্তা সংস্কারের অভাবে ২০ গ্রামের হাজার মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমের প্রায় পুরো সময়জুড়ে রস্তাটি জল-কাদায় একাকার থাকে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির বেহাল হলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য হাপানিয়া, কৃষ্টপুর, উত্তর ইটাখলা, দক্ষিণ ইটাখলা, সুদর্শন খিলা, বাউসি, নাশুল্যারসহ ২০টি গ্রামের মানুষ এই কাঁচারাস্তাগুলো ব্যবহার করে। এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের হালুয়াঘাট উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কাশেম সিদ্দিকী বলেন, সড়ক পাকাকরণের বিষয়টা স্থানীয় এমপির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ঢাকা প্রকল্প পরিচালক বরাবরে সুপারিশ আকারে প্রেরণ করলে সেখান থেকে অনুমোদন হয়ে আসে। আমরা শুধু সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকি। ইতোমধ্যে ধুরাইল থেকে জুগলী পর্যন্ত ও শাকুয়াই থেকে শাকনাইট পর্যন্ত সড়ক পাকাকরণের অনুমোদন হয়েছে বলে তিনি জানান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status