বাংলারজমিন

ব্লাস্ট রোগে ধানের শীষে চিটা

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:

২১ এপ্রিল ২০১৮, শনিবার, ৮:২৮ পূর্বাহ্ন

কৃষকের কষ্ট, আর শ্রমে মাঠে মাঠে হয় ফলন। রোদ, বৃষ্টি, খরা, বন্যা তবুও থেমে থাকে না দায়িত্ব নিয়ে যেন মাঠে পড়ে থাকে তারা। চিন্তা ভাবনা যেন একটাই ফসল হবে সবার কাছে খাদ্য চলে যাবে নিজেরা দু-বেলা দু’মুঠো খাবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর আশা কেড়ে নিতে ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ দিয়েছে হানা। চিলমারীর কৃষকরা হয়ে পড়েছে দিশাহারা। কৃষি বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নেই কোনে েমাথাব্যথা মাস গেলে গুনে তারা সরকারি বেতন-ভাতা। তবুও নেই সংশিষ্ট দপ্তরের কোনো চিন্তাভাবনা কৃষকের বাড়ছে শুধু দুশ্চিতা।

নেক ব্লাস্ট (ধান গাছের গিঁটপচা, শীষের গোড়াপচা) রোগে আক্রান্ত হয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা, থানাহাট, রানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার হেক্টর কে হেক্টর জমির ধানের শীষ চিটা হওয়ায় শত শত কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। সঙ্গে দেখা দিয়েছে পাতা মড়া রোগ। ফসল ঘরে তোলার পূর্ব মুহূর্তে এই রোগ দেখা দেয়ায় চাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের মুখে হাসির পরিবর্তে ঝড়ছে চোখের জল। মাঠের পর মাঠ ধানের শীষ সাদা হয়ে যাচ্ছে। কৃষক ফসলি জমিতে গিয়ে হতাশা আর কান্নায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ফসলের রোগ সমাধানের জন্য পাগলের মতো ছোটাছুটি করছেন কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন ওষুধের দোকান গুলেতে। এরপরও হচ্ছে না প্রতিকার। এ ছাড়াও রয়েছে কৃষি অফিসের লোকজনের গাফলতি। সরজমিনে জানা গেছে, সাতঘড়ি পাড়া, নয়াবাড়ি, জোড়গাছ, রাজারভিটা, রানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বোরো ধানে নেক ব্লাস্ট ও পাতা মড়া রোগ। নেক ব্লাস্ট রোগে শত শত হেক্টর জমির বোরো ধানের শীষ শুকিয়ে গেছে। দূর থেকে দেখলে ওইসব ক্ষেতের ধান পাকা মনে হলেও কাছে গেলে বোঝা যায় সব ধান শুকিয়ে চিটা হয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এ বছর ৬৮০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সামান্য কিছু জমিতে নেক ব্লাস্ট রোগ হয়েছে।
তবে সরজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে নেক ব্লাস্ট রোগে শত শত বিঘা ধান ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে এবং তা দিন দিন বেড়েই চলছে। এ সময় রমনা সাতঘড়ি পাড়া এলাকার কৃষক মো. আলী, নুরুজ্জামান, রমনা ৫নং ওয়াড এলাকার আবুল কাশেম, আ. হক, বহরের ভিটার সুরুজ্জামান, হোসেন আলী রাজারভিটা এলাকার বকুল, ছক্কু অভিযোগ করে বলেন বিএস (উপসহকারী কৃষি অফিসার) “ওদের কথা বাদ দেন তারা তো অফিসে বসেই সময় পাড় করে। বান, বর্ষা, ঝড়ি আর রোগ হইলেই বা ওমার কি? মাস গেইলেই তো হাজার হাজার ট্যাকা বেতন পায় ওমার তো আর কোন সমস্যা নাই সব সমস্যা হামার”। তারা আরো বলেন পরামর্শরের জন্য সঠিক সময় আমরা কৃষি অফিসের লোকজনকে কোন সময় পাশে পাই না। আবার অনেকে এলেও তাদের ঘনিষ্ঠ লোকজনের সঙ্গে দেখা করে দু-চারটি জমি দেখেও সরে পড়েন। জমির ফসল জমিতে নষ্ট হতে দেখে শত শত কৃষকের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে চিলমারীর আকাশ বাতাস। কি হবে তাদের, কে শুনবে তাদের আর্তনাদ কেবা দিবে তাদের সান্ত্বনা। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. খালেদুর রহমান জানান, নেক ব্লাস্ট ধানের একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এটি কোনো বীজে থাকলে পরে তা জমিতে আসতে পারে। এছাড়া আকাশ মেঘলা এবং গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও এই রোগের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। রোগ নির্মূলের জন্য আমাদের লোকজন মাঠে মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status