বিনোদন

চলে যাওয়ার এক বছর

স্টাফ রিপোর্টার

২১ এপ্রিল ২০১৮, শনিবার, ৭:৩০ পূর্বাহ্ন

কিংবদন্তি সুরকার, শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখান্দের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত বছর এই দিনে ইন্তেকাল করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মরণব্যাধি ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। লাকী আখান্দ জীবদ্দশায় অসংখ্য কালজয়ী গান উপহার দিয়ে গেছেন। তাকে আধুনিক বাংলা সংগীতের স্রষ্টাও বলা হতো। খ্যাতিমান এ শিল্পীর জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৮ই জুন। ৫ বছর বয়সেই তিনি তার বাবার কাছ থেকে সংগীত বিষয়ে হাতেখড়ি নেন। তিনি ১৯৬৩-১৯৬৭ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন এবং রেডিওতে শিশুশিল্পী হিসেবে সংগীতবিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে এইচএমভি পাকিস্তানে সুরকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন লাকী আখান্দ। সুরকার হিসেবে আরো কাজ করেছেন এইচএমভি ভারত এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রেও। ১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। দেশ স্বাধীন করে আবারও বাংলা গান নিয়ে কাজ শুরু করেন। তার নিজের সুর করা গানের সংখ্যা  দেড় হাজারেরও বেশি। এদিকে আশির দশকে লাকী আখান্দ সুরকার ও শিল্পী হিসেবে অর্জন করেন আকাশছোঁয়া খ্যাতি। ১৯৮৪ সালে সারগামের ব্যানারে লাকী আখান্দের প্রথম একক অ্যালবাম ‘লাকী আখান্দ’ প্রকাশ পায়। তিনি ব্যান্ড দল হ্যাপি টাচ্‌-এর সদস্য ছিলেন। পরে বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক (সংগীত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। লাকী আখান্দের উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘এই নীল মনিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত  তোমার’, ‘মামনিয়া, ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’ ‘লিখতে পারি না কোনও গান, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’ প্রভৃতি। শিল্পীর সহোদর ভাই ক্ষণজন্মা হ্যাপী আখান্দের সঙ্গে ছিল তার আত্মার সম্পর্ক। ভাইয়ের মৃত্যুর পর দীর্ঘকাল তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন। অনেক পরে আবারও গানে ফেরেন তিনি। এদিকে গুণী এই সংগীতজ্ঞ দীর্ঘ সময় ধরেই মরণব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। ছয় মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২০১৬ সালের ২৫শে মার্চ দেশে  ফেরেন। সেখানে কেমোথেরাপি নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছিল তার। একই বছরের জুনে আবারও থেরাপির জন্য ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে আর সেখানে যাওয়া হয়ে উঠেনি। অসুস্থতার প্রথম থেকেই লাকী আখান্দ ও তার পরিবার কোনোরকম আর্থিক সহযোগিতা গ্রহণ করতে চাননি। দেশের শীর্ষ শিল্পীদের উদ্যোগে সহযোগিতা করতে চাইলেও বিনয়ের সঙ্গে লাকী আখান্দ অনাগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় লাকী আখান্দের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রীয় ভালোবাসা হিসেবে সেটি তিনি গ্রহণ করেন। পরে ‘শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন’ থেকেও তার চিকিৎসার জন্য ৪০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু অবশেষে মৃত্যুবরণ করেন এ কিংবদন্তি শিল্পী-সুরকার।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status