এক্সক্লুসিভ

নতুন করে উত্তাপ বাড়ছে মাংস ও সবজির দামে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২১ এপ্রিল ২০১৮, শনিবার, ৭:২০ পূর্বাহ্ন

নতুন করে উত্তাপ বাড়ছে মাংস ও সবজির দরে। সপ্তাহের ব্যবধানে মাংসের পাশাপাশি বেশির ভাগ সবজির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে মুরগির মাংসের দাম। অন্যদিকে কাঁচাবাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় বেশির ভাগ সবজির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে বাজারে নতুন আসা কাকরোলের দাম সবচেয়ে বেশি। প্রতি কেজি কাকরোল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পিয়াজের। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সরবরাহের ঘাটতি থাকায় সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে।
ক্রেতাদের আশঙ্কা হাতেগোনা কয়েকটি পণ্যই নাগালে রয়েছে। আর বাকি সব নাগালের বাইরে। এ ছাড়া সামনে রমজান মাস শুরু হবে। তখন কি হবে পণ্যের দামে? গতকাল রাজধানীর নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।
বাজারে ১৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পাকিস্তানি লাল মুরগি। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। এছাড়া গত সপ্তাহের সাথে মিল রেখে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, ১লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ছিল। সেই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সামনে রমজান মাস আসছে। এ কারণেও মুরগির দাম বাড়তে পারে বলে জানান বিক্রেতারা। সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে বিভিন্ন সবজির দাম। গত সপ্তাহে ১৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার টমেটো বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে। এছাড়া গত সপ্তাহে পটল বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। কিন্তু সপ্তাহের ব্যবধানে সেই পটল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে যে বেগুন বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ৫০-৫৫ টাকা, তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, শিম ৩০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, ক্ষিরা ৮০ টাকা, মূলা ৩০ টাকা, আলু ২০ টাকা, প্রতি পিস বাঁধাকপি ৩০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ৩৫ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক আঁটি লাল শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা ও ধনিয়াপাতা ১০০ টাকা কেজি, কাচ কলা হালি ৩০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৫০ টাকা, কচুর ছড়া ৩০ টাকা, লেবু হালি ৪০ টাকা। এভাবে প্রতিটি সবজিতেই বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। এছাড়া ঢেড়শ’ ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা এবং চিচিংগা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজারে নুতন আসা সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কাকরোল। প্রতিকেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকা।
বাজারের ব্যবসায়ী রবিউল বলেন, কাকরোল বিক্রি করছি ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে। নতুন আসার কারণেই দাম এমন বাড়তি। কিছুদিন পরেই এ সবজিটি আবার ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করব। এদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ডিম। ডিমের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ডজনে ২ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দোকানে হালি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। ডিম ব্যবসায়ী অকিল বলেন, ডিমের দাম দুই-তিন সপ্তাহ ধরে বাড়ছে।
মসলার বাজারে কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, আদা ১০০ থেকে ১১০ টাকা, রসুন মানভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা এবং দেশি পিয়াজ ৪০ টাকায় বেচাকেনা হতে দেখা যায়। অন্যদিকে ভারত থেকে আমদানিকৃত বড় পিয়াজ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া চিনি ৬০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ টাকা ও আমদানি করা মসুর ডাল ৭০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা আরিফ হোসেন বলেন, দাম বাড়াতে দোকানদারদের কোনো কারণের প্রয়োজন হয় না। মন চাইলেই তারা বাড়িয়ে দেন। এটা কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। ক্রেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, হাতেগোনা কয়েকটি পণ্যই ক্রেতাদের নাগালে। আর বাকি সব নাগালের বাইরে। অনেক ক্রেতা রমজান মাসের কথা উল্লেখ করে বলেন, আর মাস দেড়েক পর রমজান শুরু হবে। এখনই যদি চিনি ৬০ টাকা, রসুন ১০০ টাকা ও আদা ১০০ টাকা হয়, তাহলে রমজান মাসে এসব পণ্যের দাম কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।
চালের বাজারে মোটা স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়। এছাড়া পাইজাম ৪৫ টাকা, মিনিকেট মানভেদে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, বিরি ২৮ বিক্রি হচ্ছে টাকা এবং পোলাও চাল ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
অন্যদিকে মাছ দাম বৈশাখ উপলক্ষ্যে বেশ খানিকটা বেড়ে চলতি সপ্তাহে সামন্য কমেছে। প্রতি কেজি কাতল মাছ ২২০ টাকা, পাঙাস ১২০ টাকা, রুই ২৩০-২৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৩০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status